একুশে ক্রাইম ডেস্ক
জাফলংয়ে চোরাকারবারী ও তাদের গডফাদারদের হামলায় আনোয়ার হোসেন শুভ নামের এক যুবক গুরুতর আহত হয়েছেন। এ বিষয়ে আহত যুবক বাদি হয়ে গোয়াইনঘাট থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
গত ২২ অক্টোবর গোয়াইনঘাট উপজেলার পূর্ব জাফলং সীমান্তের চোরাচালাণের ক্ষমতাধর ব্যক্তি আব্দুল মান্নান উরফে মান্নান মেম্বারে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে চোরাচালানের পন্য একটি দোকানে রাখতে গেলে দোকান মালিক তাতে বাধা দেন। এ ঘটনার জের ধরে মান্নান মেম্বার ক্ষীপ্ত হয়ে দোকান মালিক আনোয়ার হোসেন শুভ নামের এক স্থানীয় ব্যবসায়ীর উপর মামলা চালায় এবং তার দোকান লুটপাট করে। পরে আনোয়ার হোসেনকে আহত অবস্তায় হাসপাতালে নেওয়া হয়।
চিকিৎসা শেষে এঘটনায় আনোয়ার হোসেন শুভ বাদি হয়ে গোয়াইনঘাট থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। মামলায় চোরাকারবারিদের গডফাদার মান্নান মেম্বারসহ ১০ জনকে আসামী করা হয়েছে। মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন- লোকমান, রিয়াজুল, সিরাজুল, রাসেল আহমদ, ডালিম আহমদ, ফেরদৌস আহমদ, সেলিম আহমদ, ইমামুল, শরিফ ও রবি নামের আরো ১০ জনকে আসামী করা হয়েছে। পরে থানা পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে থানায় মামলাটি রেকর্র্ড করা হয়।
মামালা সূত্রে জানা গেছে, মান্নানসহতার সহযোগীরা আনোয়ার হোসেনের দোকানের পিছনে চোরাচালানের মাল রাখতে গেলে তিনি বাধা প্রয়োগ করেন। এ সময় চোরাকারবারীরা তার উপর হামলা করে প্রায় ৫ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায়। আহত আনোয়ার হোসেন শুভ ৩নং জাফলং ইউনিয়নের পাথরটিলা চাবাগান এলাকার আবুল হাসানের পুত্র।
সিলেট জেলার বর্ডার দিয়ে চোরাচালানের মধ্যদিয়ে দেদারছে ঢুকছে ভারতীয় চিনিসহ নানা পণ্য। আর অনেক বর্ডারেই তা ঢুকছে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর নাকের ডগা দিয়ে। অভিযোগ রয়েছে, এসব চোরাচালানের ঘটনা দেখেও না দেখার ভান করে থাকেন অনেক সীমান্তরক্ষী বাহিনী ও পুলিশের সদস্য। স্থানীয়রা জানান, মান্নান মেম্বারের নেতৃত্বে রয়েছেন আরো তিন চোরাকারবারী। তাদের নিয়ন্ত্রণে চলছে বিজিবি, ডিবি পুলিশ, ও থানা পুলিশের নামে চাঁদাবাজি। বিশেষ করে গুচ্ছগ্রাম, লালমাটি, আমতলা, সোনাটিলা, তামাবিল স্থলবন্দর, এলাকা দিয়ে, চিনি, চা পাতা , কসমেটিক শাড়ি, থ্রি পিস, রেহেঙ্গা, মোবাইল ফোন, মদ, ইয়াবা, ফেন্সিডিল, সহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পণ্য নিয়ে আসেন মান্নান চক্র।
মান্নান মেম্বারের নেতৃত্বে চলছে চোরাচালান ব্যবসা। ভারতীয় নিষিদ্ধ পণ্য বাংলাদেশে প্রবেশ করা নিষেধ থাকলে ও নেই তাদের কোন বাধা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নাকের ডগায় বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দাপটের সাথে তারা চালিয়ে যাচ্ছে, তাদের চোরাচালান ব্যবসা। আর তাতে লাভবান হচ্ছেন তিন লাইনম্যান মান্নান ও তার সহযোগীরা। লাইনম্যানদের নিয়ন্ত্রণে একেক সময় একেক পথ ব্যবহার করে ভারত থেকে আনা ভারতীয় পণ্য ও মালামাল দামি দামি ব্র্যান্ডের মালামাল। এসব নিয়ন্ত্রণ করতে লাইনম্যানের রয়েছেন লাঠিয়াল বাহিনী। তাদের ভয়ে এলাকার কেউ মুখ খুলতে নারাজ। কেউ মুখ খুললে তাদেরকে ভয় ভীতি দেখান এবং বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে তাদেরকে জেলে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। এই লাইনম্যান এলাকার সাধারণ জনতা ও সচেতন নাগরিকরা এদের কাছ থেকে রেহাই পেতে চান। কিন্তু প্রশাসনের সাথে তাদের সম্পর্ক থাকার কারণে এই তিন লাইনম্যান দাপটের সাথে চোরাকারবারীও চোরাচালান ব্যবসীদের কাছ থেকে প্রতি কিট থেকে ৫০০টাকা করে চাঁদা আদায় ও চিনির বস্তা থেকে ৩০০টাকা করে চাঁদা আদায় করেন মান্নান মেম্বার। তবে গরুর লাইনটি একক নিয়ন্ত্রণ করে মান্নান মেম্বার নিজেই। গরু প্রতি ১ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা দিতে হয় তাকে। এ বিষয়ে জানতে তামাবিল ক্যাম্প কমান্ডারের মুঠোফোনে ফোন দিলে উনি জানান এ বিষয়ে আমি অবগত নয় বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।
Leave a Reply