একুশে সিলেট ডেস্ক
ইসকনের ব্যাপারে সবাইকে সর্তক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয় কবিতা পরিষদ আয়োজিত ‘রাষ্ট্র পুনর্গঠনে লেখক-শিল্পীদের ভূমিকা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ভারতীয় মিডিয়ার সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘গত রাতে ভারতীয় মিডিয়ার কয়েকজন ফোন দিয়েছিলেন। তাদের একটাই প্রশ্ন, ইসকনের ব্যাপারে আপনারা কি করছেন? প্রশ্নটা একেবারেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, তারা একটা অবস্থা সৃষ্টি করতে চায়। প্রথমবার ফেইল করেছে তারা, এখন আবার নতুন করে সে অবস্থাটা সৃষ্টি করতে চায়। এ ব্যাপারে আমাদের সজাগ থাকতে হবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই মুহূর্তে সবাইকে শান্ত থেকে বিষয়গুলো অনুধাবন করে ধীরে ধীরে এগিয়ে যেতে হবে। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে সামনের দিকে আগানো ছাড়া আর কোনো পথ আছে বলে আমি মনে করি না। আমাদের পক্ষে একটা জিনিসই সম্ভব, আমরা সবাই একটা লক্ষ্য নিয়ে একটা গণতান্ত্রিক সমাজ, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণ করব।’
তিনি বলেন, ‘আজকের যে অবস্থা, আমার কাছে মনে হচ্ছে পরিকল্পিতভাবে এটি করা হচ্ছে। সেটি করছে পতিত স্বৈরাচার ফ্যাসিবাদের লোকেরা। আমরা যারা লড়াই আন্দোলনের পক্ষে ছিলাম, আমরা কেন এই বিভাজন সৃষ্টি করছি? অনেকের কথা শুনলে ভয় হয়, এখনই আমরা পুরো আন্দোলনকে ভিন্ন দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘অনেকেই বলছেন নির্বাচনই তো গণতন্ত্র নয়, অবশ্যই নয়। তার জন্য তো একটা প্রক্রিয়া লাগবে, সেই প্রক্রিয়ায় যদি আমরা না যাই তাহলে তো আমরা লক্ষে পৌঁছাতে পারবো না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের মাঝে একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তাই আমাদের সবারই উচিত, অনৈক্য সৃষ্টি না করে ঐক্যের মধ্যে থেকে সুযোগটাকে কাজে লাগিয়ে কিছুটা হলেও সামনে এগিয়ে যাওয়া। আজকে খুব দুর্ভাগ্য, ৫৩ বছর হয়ে গেছে শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা পরিবর্তনের একটা সিস্টেমও আমরা তৈরি করতে পারিনি।’
গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ নির্মাণ করা নিঃসন্দেহে একটি জটিল কাজ উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সেই কাজটাই আমাদের করতে হবে। এই কাজটা করার পেছনে আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন, আমরা যারা মনে করেছি ফ্যাসিবাদের পতন হওয়া দরকার, ফ্যাসিবাদকে সরিয়ে সত্যিকার অর্থেই জনমানুষের উপযোগী একটা রাষ্ট্র, সমাজ নির্মাণ করা দরকার, তাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদ পরাজিত হয়েছে। ফ্যাসিবাদ যেকোনো সময় আবার ফিরে আসতে পারে। আমরা সেই রাস্তা যেন তৈরি করে না দেই। আজকে আমরা দুর্ভাগ্যজনকভাবে এমন কতগুলো কাজ করছি, যে কাজগুলোর মধ্য দিয়ে কিন্তু ফ্যাসিবাদের ফিরে আসার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে গেছে। আমাদের এখন ঐক্যবদ্ধভাবে সামনে এগিয়ে যাওয়ার সময়।’
জাতীয় কবিতা পরিষদের আহ্বায়ক মোহন রায়হানের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ডাকসুর সাবেক ভিপি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বকারী জোনায়েদ সাকি, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম মনি, লেখক ও বুদ্ধিজীবী সলিমুল্লাহ খান, লেখক ও সাংবাদিক আবু সাঈদ খান, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক কালের কণ্ঠের সম্পাদক কবি হাসান হাফিজ, কবি ও সাংবাদিক সোহরাব হাসান, গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ রাশেদ খান প্রমুখ।
Leave a Reply