সর্বশেষ :
জানালা দিয়ে পরীক্ষার প্রশ্নের উত্তর বলে দেন শিক্ষক ও অভিভাবকরা

জানালা দিয়ে পরীক্ষার প্রশ্নের উত্তর বলে দেন শিক্ষক ও অভিভাবকরা

কুলাউড়া প্রতিনিধি
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার টিলাগাঁও ইউনিয়নে অবস্থিত মোবারকপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী অভিভাবক মো. রুনেল আহমদ, মাসুক মিয়া, মুহিদ আহমদ, সাহেদা আক্তার, পলি বেগম। যার অনুলিপি দেওয়া হয়েছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মোবারকপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছেন।

শিক্ষক রয়েছেন ৭ জন। বিদ্যালয়ে পড়াশোনা ও অবকাঠামো সমস্যাসহ কয়েকজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে।

অভিযোগগুলো হলো—বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক সময়মতো স্কুলে আসা-যাওয়া করেন না। বর্তমানে চলমান দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষায় অনেক শিক্ষক ও তাদের পছন্দের অভিভাবকরা পরীক্ষা চলাকালীন সময় ক্লাসে প্রবেশ করে এবং জানালা দিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রশ্নের উত্তর বলে দেন।

সচেতন অভিভাবকরা বিষয়গুলো নিয়ে প্রতিবাদ করলে আমলে না নিয়ে দুর্ব্যবহার করা হয়। বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম চলাকালীন সময় প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের আশপাশে ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কারের কাজ করাতে বাধ্য করেন। ক্লাস চলাকালীন সময়ে কিছু শিক্ষক মোবাইল ফোনালাপ করে থাকেন এবং ব্যক্তিগত কাজে প্রায়ই বাইরে চলে যান। বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোহাম্মদ মুজির উদ্দিন ও রেহানা আক্তার শিক্ষার্থীর সাথে ক্লাসে অশালীন আচরণ ও অভিভাবকদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন।

ভুক্তভোগী অভিভাবক রুনেল আহমদ ও মাসুক মিয়া বলেন, ‘স্কুলে অনেক অনিয়ম হচ্ছে। এসব দেখার কেউ নেই। সময়মতো অনেক শিক্ষক বিদ্যালয়ে আসেন না। বেশিরভাগ সময় সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার পর আসেন। শিক্ষকরা স্থানীয় এলাকার হওয়ায় তারা নিজেদের খুশিমতো বিদ্যালয়ে আসেন ও যান।

তাই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উন্নত পাঠদানের স্বার্থে তাদের অন্যত্র বদলি করার দাবি জানাচ্ছি।’

ভুক্তভোগী অভিভাবক পলি বেগমসহ আরো কয়েকজন বলেন, ‘বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক ক্লাস ফাঁকি দিয়ে অফিসে বসে খোশগল্পে ও আড্ডায় মেতে উঠেন। সময়মতো স্কুলে আসেন না। তাদের নিয়মমাফিক আসা-যাওয়া করেন। এতে প্রকৃত পাঠদান থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। পরীক্ষা চলাকালে শিক্ষার্থীদের উত্তর বলে দেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক লায়লা বেগম, মুজির উদ্দিন, রেহানা বেগমসহ কিছু অভিভাবক। এসব বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে অভিযোগ দিলেও তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি।’

ভুক্তভোগী অভিভাবক সাহেদা আক্তার বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা খুবই দুর্বল। তাদের সঠিকভাবে পড়াশোনা করানো হচ্ছে না। ক্লাস না করিয়ে তারা শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন দিয়ে দেয় বাড়ি থেকে উত্তর লিখে আনার জন্য। পরীক্ষার সময় কতিপয় শিক্ষকসহ অনেক অভিভাবক শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করেন এবং জানালা দিয়ে প্রশ্নের উত্তর বলে দেন। এ নিয়ে সচেতন অভিভাবকরা প্রতিবাদ করলে তাদের সন্তানদের ক্লাসে হেনস্তা করা হয়।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রজেস কান্তি দেবের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করলে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তাই তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মহিউদ্দিন বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.




© All rights reserved ©ekusheysylhet.com
Design BY DHAKA-HOST-BD
weeefff