সর্বশেষ :
সিলেটে সুরমা নদীতে বালুবাহী নৌকা চলাচল নিয়ে বিরোধ, সংঘর্ষে আটক ৪ গোয়াইনঘাটে ফুটবল খেলোয়াড়দের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন জকিগঞ্জে স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ, ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম স্কুলছাত্র সুমেল মিয়া হত্যা : সিলেটে আটজনের মৃত্যুদণ্ড, ৭ জনের যাবজ্জীবন শহীদ ওয়াসিম ব্রিগেড সিলেট’র বর্ণাঢ্য র‍্যালি সিনেমা থিয়েটারেই পরিচালককে জুতাপেটা করলেন রুচি গুজ্জার! ১৬ বছর ধরে সেতুর নিচে জীবনের নির্মম যুদ্ধ এনসিপির কাছে নীলার প্রশ্ন—এত দিন আমাকে কিসের ভিত্তিতে ব্যবহার করেছেন? ওষুধ কোম্পানির উপঢৌকনে সর্বনাশ হচ্ছে রোগীর পুলিশ অফিসার দিদারুল ছিলেন আমাদের গর্ব: নিউইয়র্কের মেয়র
কুলাউড়ায় যুবলীগ সভাপতি সেন্টু এখন বিএনপির কমিটিতে

কুলাউড়ায় যুবলীগ সভাপতি সেন্টু এখন বিএনপির কমিটিতে

কুলাউড়া প্রতিনিধি

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি, বিভিন্ন অপকর্মের হোতা আজমল আলী শাহ সেন্টু এখন বিএনপির কমিটিতে। স্থানীয় বিএনপির কয়েকজন নেতাকর্মীকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে ইউনিয়ন বিএনপির ৭ নম্বর ওয়ার্ড কমিটিতে সদস্য হিসেবে স্থান করে নেন যুবলীগের এ নেতা। এ নিয়ে স্থানীয় ওয়ার্ড, ইউনিয়ন বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। স্থানীয় নেতাকর্মীদের দাবি, অতিদ্রুত যুবলীগ নেতা সেন্টুকে বিএনপির কমিটি থেকে বাদ দিতে হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি বরমচাল ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির কমিটি গঠন করার জন্য সভা হয়। বরমচাল ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক আব্দুল জহুর ডেন ও যুগ্ম আহবায়ক মো: তোফায়েল হোসাইন খান জমসেদ স্বাক্ষরিত দলীয় প্যাডে আজমল আলী শাহ সেন্টুকে ৩৯ নম্বর সদস্য হিসেবে কমিটিতে রাখা হয়। অথচ আজমল আলী শাহ সেন্টু বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে আওয়ামী যুবলীগের রাজনীতি করে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন বলে জানা গেছে। এমনকি আওয়ামী লীগের সকল কর্মকা-ে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন এবং পৃষ্ঠপোষকতা করেন। ২০২২ সালের ১৪ মার্চ বরমচাল ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের আয়োজনে ৭ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে আজমল আলী শাহ সেন্টু সভাপতি ও নিপার আহমদ সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এদিকে ২০২২ সালের মার্চ মাসে বরমচাল ইউনিয়ন ছাত্রলীগ আয়োজিত বঙ্গবন্ধুর নিজ হাতে লেখা বই “অসমাপ্ত আত্মজীবনী, কারাগারের রোজনামচা ও আমার দেখা নয়াচীন” ইউনিয়ন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিতরণ অনুষ্ঠানে আজমল আলী শাহ সেন্টু অতিথি ছিলেন। এছাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন কর্মসূচিতে আজমল আলী শাহ সেন্টুর সরব উপস্থিতি ছিল। এমনকি দলীয় শীর্ষ নেতাকর্মী ও আওয়ামী লীগের মন্ত্রীদের সাথেও তোলা সেইসকল ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে। এটা নিয়ে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের মাঝে বিতর্ক তৈরি করেছে। সবাই কানাঘুষা করছেন, কিভাবে একজন চিহ্নিত যুবলীগ নেতাকে বিএনপির মতো রাজনৈতিক সংগঠনের কমিটিতে স্থান দেয়া হয়। স্থানীয় একটি সূত্র জানিয়েছে, বরমচাল ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমান আহবায়ক কমিটির সদস্য সাখাওয়াত হোসেনের মাধ্যমে যোগসাজশ করে ইউনিয়ন বিএনপির নেতৃবৃন্দদের মোটা অংকের টাকা উৎকোচ দিয়ে বিএনপির কমিটিতে সদস্য পদ ভাগিয়ে নিয়েছেন। এতে প্রমাণ করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পুনবার্সন করতে এমন বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নেয় ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক কমিটি। এছাড়া ২০২৪ সালে স্থানীয় এলাকায় একটি পক্ষের সাথে জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে নিজেকে আওয়ামীলীগ পরিবারের সন্তান উল্লেখ করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। সেই মামলার তদন্ত কপি প্রতিবেদকের সংগ্রহে রয়েছে।

এ বিষয়ে বরমচাল ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি আজমল আলী শাহ সেন্টু জানান, ‘আমার পরিবারের সবাই বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। আমি যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নই, আমি মাজারের খাদিম, বিভিন্ন সময় দলীয় নেতারা আমার কাছে দোয়া নিতে এসেছিলেন। এলাকার একটি মহল আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে।

এ বিষয়ে বরমচাল ইউনিয়ন বিএনপি নেতা সাখাওয়াত হোসেন যুবলীগ নেতা সেন্টুর পক্ষে সাফাই গেয়ে মুঠোফোনে বলেন, ইউনিয়নের সাত নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির কমিটি গঠনের সময় সেন্টু কমিটিতে থাকার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করে। পরে নেতৃবৃন্দরা যাচাই-বাছাই করে তাকে সদস্য করেন। সেন্টু যে যুবলীগের রাজনীতি করতেন সেটার কোন প্রমাণ আমিসহ নেতৃবৃন্দরা পাইনি। অতীতে সেন্টুর মালিকানাধীন দোকানে যুবলীগের অফিস ছিল তাই অফিসে একটি অনুষ্ঠানে সেন্টু উপস্থিত ছিলেন। তাছাড়া সেন্টু মাজারের খাদিম থাকায় তার সাথে অনেক নেতা ছবি তুলেছেন। তাকে বিএনপির কমিটিতে রাখতে আমি কোন সুপারিশ বা তদবির করিনি। তিনি আরো বলেন, স্থানীয় একটি বিশেষ মহল ইর্ষান্বিত হয়ে তাঁর বিরুদ্ধে এসব ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে ষড়যন্ত্র করছেন।

বরমচাল ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুল জহুর ডেন মুঠোফোনে বলেন, সেন্টু যে যুবলীগ করতেন সেটার সঠিক তথ্যসহ কেউ আমাদের কাছে অভিযোগ করেনি তাই তাকে বিএনপির সদস্য করা হয়েছে। অভিযোগ দিলে তদন্ত করে হয়তো তাকে বাদ দেয়ার সুযোগ ছিল। যোগসাজশের মাধ্যমে আপনাদের প্রভাবিত করে যুবলীগ নেতা সেন্টুকে কমিটিতে রাখা হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সেটা হলো ভিন্ন কথা। এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মো. রেদওয়ান খান মুঠোফোনে বলেন, বিষয়টি জেনেছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.




© All rights reserved ©ekusheysylhet.com
Design BY DHAKA-HOST-BD
weeefff