জয়নাল আবেদীন, কমলগঞ্জ
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে হাজার হাজার মানুষের ভালোবাসায় চিরশায়িত হলেন সন্ত্রাসীদের ছুরিকাহতে নিহত শিক্ষিকা রোজিনা। মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৫ টায় মাধবপুর ইউনিয়নের উত্তর ভাষানীগাঁও জামে মসজিদ মাঠে জানাযা শেষে ভাষানীগাঁও কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।
নবদুত কিন্ডারগার্টেন স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা রোজিনা আক্তারের জানাজায় সহস্রাধিক মানুষ অংশ নেয়। দল-মত নির্বিশেষে জানাজায় শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়। অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
জানাজায় বক্তব্য সাংবাদিক, শিক্ষক, রাজনীতিক নেতাসহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
প্রশাসনকে ৪৮ ঘন্টার আলটিমেটাম দিয়ে বক্তারা বলেন, সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। না হয় তাহলে কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশন কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবে। এই সন্ত্রাসীদের সমাজে কোন স্থান নেই, এরা কিছু জমির জন্য শুধু শিক্ষিকা রোজিনা নয়, সাথে তার অনাগত সন্তানসহ তার ভাবী লুভনা বেগমের অনাগত সন্তানকেও খুন করেছে এই মানুষরূপী নরপিশাচরা।
দাবী আটক খুনি আব্দুর রহিমসহ তার ছেলে পলাতক প্রধান আসামী রেজাউল করিম সাগরকে গ্রেফতার করে আইনের কাঠগড়ায় দাড় করে সর্বোচ্চ শাশিÍ মত্যুদন্ডে দন্ডিত করা হোক।
সেই সাথে খুনি নরপিশাচ আব্দুর রহিমের সকল সম্পত্তি রোজিনার রেখে যাওয়া অনাত সন্তান রেদোয়ানকে দেয়া হোক।
বক্তারা রোজিনার কর্মময় জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে স্মৃতি চারণ করেন। আর যেন কোন রোজিনা কে এভাবে অকালে চলে যেতে না হয়। তার জন্য সমাজের দুষ্কৃতকারীদের রুখতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
উল্লেখ্য আব্দুর রহিমসহ কয়েকজন ধারালো অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে নিজামুদ্দিনের জমি দখল করে এক্সেভলেটর দিয়ে পুকুর খনন শুরু করেন। এ সময় নিহতের বড় ভাই হারুন মিয়া (৪০) ও তার স্ত্রী লুভনা বেগম (৩৪) বাধা দিলে প্রতিপক্ষ ও তার ছেলে রেজাউল করিম সাগরের নেতৃত্বে আজবর মিয়া, মোতাই মিয়াসহ একদল সন্ত্রাসী তাদের ওপর হামলা চালায়।
এ সময় আহত হারুনের বোনর জালাল হোসেন (৪৮) ও ছোট বোন শিক্ষিকা রোজিনা বেগম (৩৮) এগিয়ে গেলে কতিপয় রেজাউল করিম সাগর ও তার বাবা আব্দুর রহিমসহ কয়েকজন সন্ত্রাসী ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাদের উপর হামলা করে।
এ হামলায় শিক্ষিকা রোজিনা বেগম ছুরিকাহত হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। বাকিরা গুরুতর আহত হয়ে সিলেট ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।
ঘটনার পরে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় খুনি আব্দুর রহিম, মনির মিয়া ও রুসমত মিয়াকে আটক করলেও অভিযুক্ত মূল আসামী রেজাউল করিম সাগর ও আজবর মিয়া পলাতক রয়েছেন।
Leave a Reply