একুশে সিলেট ডেস্ক
সিলেটের মহানগরীর জালালাবাদ থানার এলাকার শিবের বাজারের বাবুরগাঁও গ্রামে জমি নিয়ে পূর্ব বিরোধের জের ধরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলায় মাওলানা মো. ছাদিকুজ্জামান (৪৭) নামের এক ব্যক্তি গুরুতর আহত হয়েছেন। তিনি হাটখোলা ইউপির ৭ নং ওয়ার্ডের বাবুরগাঁও গ্রামের মৃত বদিউজ্জামানের ছেলে। ২০ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার দুপুরে মাওলানা মো. ছাদিকুজ্জামানদের জমিতে এই ঘটনা ঘটে।
হামলার ঘটনায় জালালাবাদ মডেল থানায় ৮ জনকে আসামি করে মামলা (২২(০৯)২৫) দায়ের করা হয়েছে।
মামলায় আসামিরা হলেন শিবের বাজারের বাবুরগাঁও গ্রামের মৃত মনাই শাহর ছেলে মর্তুজ আলী (৫৮) এবং মর্তুজ আলীর ছেলে সাহার (৩৬) ও বাহারসহ (৩৪) অজ্ঞাতনামা আরো ৪-৫ জন।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, শিবের বাজারের বাবুরগাঁও গ্রামের মৃত মনাই শাহর ছেলে মর্তুজ আলীর সাথে মাওলানা মো. ছাদিকুজ্জামান গংদের জমি নিয়ে আদালতে ২টি মামলা বিচারধীন রয়েছে। যা জালালাবাদ মডেল থানার ফৌজদারি জিআর নং- ২০৯/১৮ইং ও ফৌজদারি জিআর নং-২৫৮/২০ইং। দীর্ঘদিন থেকে মামলা চলাকালীন অবস্থায় প্রায়ই মর্তুজ আলীগং মো. ছাদিকুজ্জামান গংদের মালিকানাধীন জমি এসএ দাগ নং-১৬১৮ জমিসহ অন্যান্য জমি দখলের পায়তারা করেছে। বাবুরগাঁও গ্রামের পূর্বপাশে মাওলানা মো. ছাদিকুজ্জামানের চাচা মৃত প্রফেসর ইরহাছুজ্জামান (আয়না পীর) নামীয় একটি এতিম খানা রয়েছে। সামনে বর্ষা, বৃষ্টি এবং হাওরের পানিতে এই জায়গা তলিয়ে যেতে পারে তাই সেই জমিতে বাঁধ নির্মাণের কাজ করছেন মাওলানা মো. ছাদিকুজ্জামান। ঘটনার দিন দুপুরে মাওলানা মো. ছাদিকুজ্জামান বাঁধ নির্মাণের কাজ পরিদর্শনে যান। সেই সময়ে হঠাৎ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মর্তুজ আলী তার ছেলে সাহার ও বাহারসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৪ থেকে ৫ জন এসে বাধা দেয় এবং অতর্কিত হামলা চালায়। হামলায় মো. ছাদিকুজ্জামানের মাথায় এবং হাতে রাম দায়ের কোপে তিনি গুরুতর আহত হন। বর্তমানে তিনি নগরীর একটি বেসরকারী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আহত মাওলানা মো. ছাদিকুজ্জামান জানান, মর্তুজ আলী একজন ডাকাত, ভূমিখেকো, চাঁদাবাজ। তার যন্ত্রণায় আমরাসহ গ্রামবাসী অতিষ্ঠ। লামাকাজিতে ডাকাতি করতে গিয়ে এলাকাবাসী তাকে গণধোলাই দেয়। তার ছেলেরাও খারাপ। তাদের বিরুদ্ধে সিলেটের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। প্রায়ই মর্তুজ আলীগং আমাদের মালিকানাধীন জমি এসএ দাগ নং-১৬১৮ জমিসহ অন্যান্য জমি দখলের প্রায়তারা করছে। বাবুরগাঁও গ্রামে আমার চাচা মৃত প্রফেসর ইরহাছুজ্জামান (আয়না পীর) নামীয় একটি এতিম খানা রয়েছে। সামনে বর্ষা, বৃষ্টি এবং হাওরের পানিতে এই জায়গা তলিয়ে যেতে পারে তাই সেই জমিতে বাঁধ নির্মাণের কাজ করাচ্ছিলাম। ঘটনার দিন দুপুরে রাম দা, লাটিসহ ধারালো দেশিও অস্ত্র হাতে নিয়ে মর্তুজ আলী তার ছেলে সাহার ও বাহারসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৪/৫ জন এসে বাধা দেয় এবং অতর্কিত হামলা চালায়। আমিও নিজেকে বাঁচাতে তাদের প্রতিহত করার চেষ্টা করি কিন্তু পারিনি। রাম দায়ের কোপে আমার মাথায় এবং হাতে আঘাত পাওয়ার কারণে অজ্ঞান হয়ে পরি। পরে গ্রামের লোকজন আমাকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসে। তাদের লাঠির আঘাতে আমার সাথে থাকা আরো দুই জন আহত হয়েছে। তারা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে গেছে। এর আগেও অতীতে ২০১৮ সালে আমার চাচা মৃত প্রফেসর ইরহাছুজ্জামানের ঘর পুড়িয়ে ছিলো মর্তুজ আলী গং। সেই সময়ে ঘর পুরানোর জন্য এসএমপির জালাবাদ মডেল থানায় একটি মামলা হয়। জিআর মামলা নং-২০৮/১৮। চাচার ঘর পরিদর্শনে গেলে তারা ওই সময়ে আমাকে প্রাণে মারার জন্য হামলা করেছিলো। আমার হাতে ২টি কোপ, মাথায় কোপ, পায়ে সুলফি দিয়ে আঘাত করেছিলো। আমি তখনও মামলা করেছিলাম। মামলা নং- ২০৯/১৮। এই মামলাও বিচারাধীন আছে।
এ ঘটনায় জালাবাদ মডেল থানায় পাল্টাপাল্টি দুটি মামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এসএমপির জালালাবাদ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হারুনুর রশিদ।
Leave a Reply