স্টাফ রিপোর্টার
লন্ডন প্রবাসী একজন পিতার বিরুদ্ধে প্রতারণা, স্ত্রী ও সন্তানকে অস্বীকার এবং নিজের ঔরসজাত পুত্রকে প্রাণনাশের হুমকি প্রদানের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রæয়ারি) দুপুরে সিলেট জেলা প্রসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জন্মদাতা পিতার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেন পুত্র রেদওয়ান জাকির। তিনি সিলেট নগরীর পুষ্পায়ন ৫৫নং সেনপাড়ার লন্ডন প্রবাসী জাকির হোসেনেরে ছেলে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেন, আজ থেকে ১৮ বছর আগে আমার মাকে গোলাপগঞ্জের গ্রামের বাড়ি থেকে তার বাসায় এনে বিয়ে করেন বাবা জাকির হোসেন। কিন্তু লন্ডনে তার স্ত্রী, সন্তান রয়েছে সেসব কথা গোপন রেখে অর্থবিত্ত ও ছলনার আশ্রয় নিয়ে আমার মা আমিনা বেগমকে রাজি করে বিয়ে করেন। আমি আমার পিতার সেনপাড়ার ৫৫নং বাসাতে জন্মগ্রহন করি। পরবর্তীতে জনা যায় বাবার প্রতারণা ও চালাকির আশ্রয় নিয়ে পরিকল্পিত ভাবে আমার মাকে বিয়ে করে পরবতীর্তে অস্বীকার করেন আমার বাবা। আমি মায়ের গর্ভে থাকাবস্থায় আমার পিতা জাকির হোসেন লন্ডনে চলে যান। সে সময়ত সিলেট আমার জন্ম হয়। তিনি দেশে এসে নিজেকে পূবের্র পরিবার ও সমাজ থেকে বাচঁতে আমিসহ আমার মাকে বাসা থেকে বের করে দেন।
আমার মা আমাকে অনেক কষ্টে লালন পালন করেন। পুষ্পায়ন ৫৫নং বাসার ঠিকানায় ১৮ বছর আগে মা ভোটার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হন এবং আমি জন্ম নিবন্ধন কার্ডে জাকির হোসেনের পুত্র বলে নিবন্ধন হয়। আমি যখন আমার মাকে আমার বাবার কথা জিজ্ঞেস করি তখন আমার মা জাকির হোসেনের বাসায় নিয়ে তাকে পিতা বলে পরিচয় করে দেন। পরিচয় করার সাথে সাথে সেদিন জাকির হোসেন বলে উঠেন কত সন্তান কতখানে জন্ম দিলাম কেউতো এখনো এত বড় সাহস করেনি। তোমাদের এতো বড় সাহস হয়েছে আমার এখানে ছাত্রলীগের ছেলেদেরকে ভাড়া দিয়ে রেখেছি এবং সিলেটের পুলিশ আমার এখানে নিয়মিত আড্ডা দেন। একথা বলে তিনি আর কখনো পিতার পরিচয় নিয়ে না বাসায় না যাওয়ার জন্য আমাকে হুমকি দেন।
রেদওয়ানের অভিযোগ বিভিন্ন সময় বাসার আশপাশে গেলেও পুলিশ দিয়ে বাসায় থাকা ছাত্রলীগের ছেলেদের দিয়ে থাকে তাড়িয়ে দেন। জাকির হোসেন আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার সুবাদে একজন কাউন্সিলরের শেল্টারে বাসায় অসামাজিক কার্যকলাপ চালিয়ে আসছেন দীর্ঘদিন থেকে। এলাকাবাসি তার এ সমস্ত কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ। সরকার পরিবর্তন হলেও এখনো ছাত্রলীগের মেস রয়েছে তার বাসায়। পুলিশ পরিচয় দানকারীরা বাসায় এসে ফুর্তি করে। আদালতে মামলা করার পর থেকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বিভিন্নভাবে থাকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। আমার পিতা টাকার বিনিময়ে সবকিছু করে ফেলবেন বলে হুমকি দেন।
প্রয়োজনে আদালত যদি ডিএনও টেষ্টও দেয় সেটাও তিনি অর্থের বিনিময়ে তার পক্ষে আনবেন বলে ভয় দেখান। তাই আপনাদের মাধ্যমে দেশে বিদেশে অবস্থানরত মানবাধিকার সংগঠন সুশীল সমাজ, আইনজীবী, সাধারণ জনগণ সবার সহযোগিতায় পৃথিবীতে বেঁচে থাকার পরিচয়টুক নিশ্চিত করতে সহযোগিতা কামনা করেন রেদওয়ান। রেদওয়ান বলেন, আমার পিতা জাকির হোসেন নারীলোভী, প্রতারক তিনি যুক্তরাজ্যের নাগরিক হওয়ায় অর্থ ও ক্ষমতার দাপট খাটিয়ে অনেক দরিদ্র পরিবারের নারীদের ভোগের সামগ্রী বানিয়েছেন।
শুধু তাই নয় জাকির হোসেনের বাসায় ইয়াবা ব্যবসায়ী মুছন মিয়ার নেতৃত্বে নারী পুরুষের একটি চক্র রয়েছে। দিনরাত তাঁর বাসায় চলে ইয়াবা সেবনসহ আসামাজিক কার্যকলাপ। তার সেনপাড়ার ৫৫নং বাসা থেকে পাড়া মহল্লায় ইয়াবা সাপ্লাই হয়। আমার জন্মদাতা পিতা আমাকে হত্যা করার জন্য টাকার বিনিময়ে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীদের দায়িত্ব দিয়েছেন বলে জানতে পেরেছি।
রেদওয়ান আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আকুল আবেদন জানিয়ে বলেন, ছাত্রাবাস থেকে ছাত্রলীগ পালিয়ে গেলেও আমার পিতা জাকির হোসেনের বাসাতে অপরাধী ও ছাত্রলীগের মেস রয়েছে। এদের ভয়ে বাসার আশপাশে যেতে পারি না। তাই সমস্ত অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার অনুরোধ করছি। এছাড়া বাসার মধ্যে রানী নামক (ছদ্ম নাম) এক মহিলা যার স্বামী ও সংসার রয়েছে তাকে আমার বাবা বাসায় রেখেছেন। এই মহিলার সাথে একজন মেয়ে রয়েছে। যাকে জাকির হোসেনের মেয়ে বলে পরিচয় দেওয়া হয়।
উক্ত মহিলার মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকা থেকে মেয়েদের বাসায় এনে অনৈতিক কার্যক্রম চালানোর অভিযোগ শোনা গেছে। তাই এই বাসাকে অপরাধীদের হাত থেকে রক্ষায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন রেদওয়ান।
Leave a Reply