সর্বশেষ :
এইচপিভি টিকাদান কর্মসুচী শতভাগ বাস্তবায়ন করায় কুলাউড়ার ৩ প্রতিষ্টানকে সম্মাননা প্রদান ছুটিতে গিয়ে গোয়াইনঘাট থানার এসআই মিথুন পাড়ি জমালেন লন্ডনে! বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে বিশ্বনাথে প্রশাসনের সভা জগন্নাথপুরে পুলিশি অভিযানে ৭ আসামী গ্রেফতার আদালতপাড়ায় সাবেক কাউন্সিলর লায়েককে লাথি-ঘুষি বালাগঞ্জে আমন ধানের বাম্পার ফলন, কৃষকের মুখে হাসি কমলগঞ্জে ডাকাতির প্রস্তুতির সময় গণপিটুনিতে নিহত ১ শপথের সম্মান রক্ষার চ্যালেঞ্জ নিয়েছি: সিইসি শেখ হাসিনা দেশে থাকলে লোকজন তাঁকে ছিড়ে খুড়ে ফেলত: উপদেষ্টা সাখাওয়াত বিস্ফোরক মামলায় খালাস পেলেন তারেক রহমান
‘নৌকায় ভোট না দিলে কবর দিতে দেব না’– সেই নেতা এখন বিএনপিতে!

‘নৌকায় ভোট না দিলে কবর দিতে দেব না’– সেই নেতা এখন বিএনপিতে!

একুশে সিলেট ডেস্ক
কক্সবাজারের উখিয়ার হলদিয়াপালং ইউনিয়ন নির্বাচনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ শাহ আলম ‘নৌকায় ভোট না দিলে কবর দিতে দেব না’ বলে আলোচনায় আসেন। তার ওই বক্তব্য সেসময় ভাইরাল হয়েছিল। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদও করেছিলেন।

অধ্যক্ষ শাহ আলম কোটবাজার দোকান মালিক ব্যবসায়ী সমিতির তৎকালীন সভাপতি আবু ছিদ্দিক। তিনি সে সময় গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, গ্রামে যারা নৌকার বিরুদ্ধে ভোট করছেন তারা মারা গেলে কবরস্থানে কবর দিতে দেবেন না।

তবে ২০১৬ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত হলদিয়াপালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন। নৌকার পক্ষে নির্বাচনে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন। তবে তিনি ৫ আগস্টের পর বিএনপিতে যোগ দিয়ে উপজেলা বিএনপির ব্যবসা ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক হন।

২০১১ সালের ১ মে প্রতিষ্ঠিত হয় কোটবাজার দোকান মালিক সমবায় সমিতি লিমিটেড। কক্সবাজারের দক্ষিণ অঞ্চলে বাণিজ্যিক প্রাণ কেন্দ্র খ্যাত কোটবাজারের প্রায় সাত শতাধিক ব্যবসায়ী বর্তমানে যার সদস্য। এ সংগঠনের দুই মেয়াদে সভাপতি ছিলেন হলদিয়াপালং ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা রশিদ আহমেদ ডিলারের পুত্র আবু ছিদ্দিক।

দায়িত্বে থাকাকালে তার বিরুদ্ধে সদস্যদের আমানতের টাকা থেকে লোন বাবদ প্রায় সাড়ে ৩ লাখ আত্মসাৎ, ব্যবসায়ীদের লেনদেন সংক্রান্ত সালিশে জামানত রেখে ফেরত না দেওয়া, সমিতির নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগ উঠে।

সর্বশেষ ২০২২ সালের নভেম্বরে সংগঠনের ৪র্থ কার্যকরী পরিষদ নির্বাচনে নিজে অংশ না নিয়ে ভাইকে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ করান আবু ছিদ্দিক। ব্যালটের মাধ্যমে আবু ছিদ্দিকের দুর্নীতির নীরব প্রতিবাদ করে ভাই আব্দুল মাজেদ সওদাগরকে সভাপতি নির্বাচিত করেননি সদস্যরা। বর্তমানে ১২ সদস্যের ব্যবস্থাপনা কমিটিতে খোরশেদ আলম বাবুল সভাপতি ও আব্দুর রহমান সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।

উপজেলা সমবায় কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মেয়াদ আরও এক বছর থাকা সত্ত্বেও আবু ছিদ্দিক কমিটি ভেঙে দিতে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সরকারি এই দপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, আইন অনুযায়ী আবু ছিদ্দিক যা চাচ্ছেন তা বিধিসম্মত নয়। মেয়াদ পূর্ণ হলে নতুন করে সেখানে নির্বাচন হবে এটাই রীতি অন্য কোনো অপশন নেই।

এছাড়া অপতৎপরতার অংশ হিসেবে ভাড়াটে বখাটেদের দিয়ে বলপ্রয়োগের মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের আবু ছিদ্দিক হেনস্তা করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

মঙ্গলবার রাতে নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হিসাব নিকাশে ব্যস্ত ছিলেন স্থানীয় ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ইসহাক। এ সময় তিন-চারজন যুবক এসে তাকে ডেকে নিয়ে গিয়ে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাইতে চাইলে প্রত্যক্ষদর্শীদের প্রতিরোধে তিনি বেচে যান। ইসহাক বলেন, আবু ছিদ্দিক সওদাগর সমিতি দখলে নিতে চাচ্ছেন। আমি বর্তমান ব্যবস্থাপনা কমিটিতে আছি। উনিই আমাকে অপহরণের চেষ্টা করেছেন, আমরা তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ।

সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম বাবুলের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করে কোনো উত্তর না পেলেও সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান বলেন, আমাদের সমিতির সদস্যরা নির্বাচিত করেছে। মেয়াদ আছে এবং আইনও আছে। সে অনুযায়ী আমরা ব্যবসায়ী ভাইদের কল্যাণে প্রতিনিধিত্ব করে যাচ্ছি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলা বিএনপির এক প্রভাবশালী নেতা বলেন, রাজপথে আমরা দীর্ঘ ১৭ বছর সংগ্রাম করেছি। আর আবু ছিদ্দিকের মতো সুবিধাবাদীরা বিএনপির এ দীর্ঘ লড়াইয়ে ছিল না। তিনি আওয়ামী লীগের মধু খেয়েছেন; এখন সুসময়ের কোকিল হয়ে আবারও উড়ে এসে জুড়ে বসেছেন।

উপজেলা বিএনপির সভাপতি সরোয়ার জাহান চৌধুরী বলেন, কর্মীদের কঠোর নির্দেশনা দিয়েছি- দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয় এমন কোনো কাজ করা যাবে না। চাঁদাবাজি চলবে না। মানুষকে অত্যাচার করা যাবে না। শ্রমজীবী থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী ভাইদের ওপর জুলুম করা যাবে না। যদি কারো বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমার পরিবারের সবাই বিএনপি দলে অবদান আছে। অধ্যক্ষ শাহ আলম আমার আত্মীয় লাগে তাই নির্বাচনে পাশে ছিলাম।

অধ্যক্ষ শাহ আলমের মোবাইলে ফোন দিলে তিনি এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে চাননি। তবে সমিতি দখলের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি মোবাইল ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.




© All rights reserved ©ekusheysylhet.com
Design BY DHAKA-HOST-BD
weeefff