সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জে বাসা ভাড়ার টাকা সময়মতো পরিশোধ করতে না পারায় শিশুসহ ভাড়াটিয়াদের তালাবদ্ধ করে আটকে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শনিবার দুপুরে পৌর শহরের তেঘরিয়া বড়পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। অবরুদ্ধ থাকার কয়েক ঘন্টা পর ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে শিশুসহ ভাড়াটিয়াদের উদ্ধার করেন সদর থানার টহলরত পুলিশ। বাসার মালিকের এমন আচরনে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
মাত্র ১১ দিনের ব্যবধানে শহরে ফের এমন ঘটনায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। এর আগে গত ৮ জুলাই শহরের রায়পাড়া এলাকায় বাসা ভাড়া দিতে বিলম্ব করায় ভাড়াটিয়াদের তালাবদ্ধ করে রাখেন বাসার মালিক। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে।
জানা গেছে, সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার চেলাইয়া মামদপুর এলাকার বাসিন্দা ইকবাল হোসেন পেশায় একজন অটোরিকশা চালক। তিনি ৬ মাসের শিশু সন্তানসহ দুই ছেলে ও দুই মেয়ে এবং স্ত্রীকে নিয়ে ৭ মাস ধরে পৌর শহরের তেঘরিয়া বড়পাড়া এলাকায় মাসিক ৫ হাজার টাকা হারে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করে আসছেন। বাসা ভাড়া নেয়ার পর থেকে নিয়মিত বাসাভাড়া পরিশোধ করে আসলেও আর্থিক সংকটের কারনে গত জুন মাসের বাসা ভাড়া পরিশোধ করতে পারেননি অটোরিকশা চালক ইকবাল হোসেন। সময় মতো বাসা ভাড়া না দেয়ায় ভাড়াটিয়া ইকবাল হোসেনের সাথে দুর্ব্যবহার করেন বাসার মালিক মতিউর রহমান। নির্ধারিত সময়ে ভাড়া দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় শনিবার দুপুরে ইকবাল হোসেনের স্ত্রী সন্তানসহ পরিবারে ৬ সদস্যকে ঘরে আটকে রেখে বাইরে থেকে দরজায় তালাবদ্ধ করে চলে যান বাসার মালিক মতিউর। নিরুপায় হয়ে উদ্ধার হওয়ার জন্য ৯৯৯ এ ফোন করেন অটোরিকশা চালক ইকবাল। ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে স্থানীয়দের সহযোগিতায় শিশুসহ ভাড়াটিয়াদের উদ্ধার করেন পুলিশের একটি টহলদল।
ভুক্তভোগী ভাড়াটিয়া ইকবাল হোসেন বলেন, “গত বছরের ডিসেম্বর মাস থেকে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকছি। কখনো বাসাভাড়া বাকি রাখিনি। কিছুদিন ধরে সমস্যায় রয়েছি। তাই গেল মাসের ভাড়া দিতে দেরি হয়েছে। বাসার মালিক টাকার জন্য প্রতিদিন দুর্ব্যবহার করেন। টাকা দিতে আরও কয়েকটা দিন সময় লাগবে জানালে আজ দুপুরে তিনি এসে ঘরের দরজায় বাইরে থেকে তালা দিয়ে রাখেন। ঘরে আমার ৬ মাসের শিশু সন্তানসহ চারটি সন্তান রয়েছে। তিন ঘন্টার বেশি সময় ধরে ঘরে আটকা ছিলাম। পরে বাধ্য হয়ে ৯৯৯- এ ফোন করি। পুলিশ এসে আমাদের উদ্ধার করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘ছোট ছোট শিশু সন্তানসহ ভাড়াটিয়াদের তালাবন্ধ করে রাখা চরম অমানবিক। আমাদের এলাকায় এমন ঘটনা আর ঘটেনি।’
ভাড়াটিয়াদের সাথে বাসার মালিকরা যাতে ভবিষ্যতে এমন নেতিবাচক ও অমানবিক কর্মকান্ড না করতে পারেন এর জন্য অভিযুক্ত বাসা মালিকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
এদিকে নিজের অপরাধ স্বীকার করে বাসার মালিক মতিউর রহমান বলেন, ‘আমি না বুঝে এমটা করেছি।’ তবে ভাড়াটিয়া তাঁর সাথে দুর্ব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার এ এসআই গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘৯৯৯- এ ফোন পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে ভাড়াটিয়াদের উদ্ধার করেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply