একুশে সিলেট ডেস্ক
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুই উপদেষ্টার গাড়ির গতিরোধ করে বিক্ষোভের দুই দিনের মাথায় সিলেটে পাথর ভাঙার ক্রাশার মিল উচ্ছেদে অভিযানে নেমেছে প্রশাসন। টাস্কফোর্সের অভিযানে প্রথম দিনেই সিলেটের ধোপাগুল এলাকায় ২৫টি ক্রাশার মিলের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
সোমবার (১৬ জুন) সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত টানা ৪ ঘণ্টা সিলেট সদর উপজেলার ধোপাগুলে এ অভিযান চালানো হয়।
সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র্যাবের সমন্বয়ে টাস্কফোর্সের এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন সিলেট জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মেরিনা দেব নাথ।
জানা যায়, সোমবার সকাল ১১টার দিকে টাস্কফোর্স সিলেট সদর উপজেলার ধোপাগুল এলাকায় অভিযান শুরু করে। বিকেল ৩টা পর্যন্ত টানা অভিযানের সময় ধোপাগুল এলাকায় পাথর ভাঙার ২৫টি ক্রাশার মিলের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
সিলেট জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মেরিনা দেব নাথ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা ১১টা থেকে অভিযান শুরু করেছি। প্রথম দিনে ২৫টি ক্রাশার মিলের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
’
এর আগে শনিবার (১৪ জুন) সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং পর্যটনকেন্দ্র এলাকা পরিদর্শনে যান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান।
পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমকে উপদেষ্টা সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান বলেন, ‘আমাদের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং পরিবেশ মন্ত্রণালয় মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি- সিলেটে নান্দনিক আবেদন আছে, নৈসর্গিক আবেদন আছে এইরকম জায়গাগুলোকে আমরা আর পাথর তোলার জন্য ইজারা দেব না।’
জ্বালানি উপদেষ্টাকে দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘এখানে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন হয়। সেটা বন্ধের জন্য জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এখানে আছেন। তিনি নিশ্চয়ই বলবেন।
’
এ সময় ক্রাশার মিলগুলোর বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে জানিয়ে উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘আমি সিলেটের জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারকে জিজ্ঞাস করলাম, পাথর উত্তোলন হচ্ছে না অথচ ক্রাশারে ভাঙা হচ্ছে পাথর। এগুলো আসছে কোথা থেকে। তারা বললেন, সেগুলো আমদানি করা পাথর। তো আমদানি করা পাথর হলে এগুলো আমদানির রাস্তায় থাকবে, এখানে কেন থাকবে।’
তিনি যোগ করেন, ‘সেজন্য আমরা এগুলোর বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দেব। এগুলো সরানোর জন্য বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসককে বলা হয়েছে। পুলিশ এবং বিজিবিকেও আমরা বলেছি।’
তাদের এমন সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন স্থানীয় পাথর শ্রমিকরা। তারা ফেরার পথে উপদেষ্টাদের গাড়ির গতিরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এসময় প্রায় ১০ মিনিট সড়কে আটকা পড়েন উপদেষ্টারা। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে তাদের সরিয়ে দেওয়া হলে তারা ছাড়া পান।
এ ঘটনার পর রোববার গোয়াইনঘাট থানায় ১৫৯ জনকে আসামি করে একটি মামলা করে পুলিশ। এরপর আজ সোমবার থেকে ক্রাশার মিলগুলোর বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে অভিযান শুরু করেছে প্রশাসন।
Leave a Reply