জকিগঞ্জ প্রতিনিধি
জকিগঞ্জে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে জকিগঞ্জে আতঙ্ক সৃষ্টিকারী ও আন্দোলনকারীদের ওপর হামলাকারী উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জুলাই আন্দোলনে হামলা মামলার আসামি লোকমান আহমদ চৌধুরী এখনও ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। অথচ, তাদের ভয়েই জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত অজানা আতঙ্কে ছিল ছাত্র-জনতা, গণমাধ্যমকর্মী থেকে শুরু করে আন্দোলনে সমর্থনকারীরা। ছাত্র জনতার উপর হামলা মামলার আসামি স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও স্থানীয় কতিপয় কিছু বিএনপি নেতাদের সহযোগিতার কারণে লোকমানকে গ্রেফতার করেছে না জকিগঞ্জ থানাপুলিশ। অস্ত্রধারী স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা এখনো দাপটের সহিত বিভিন্ন অপর্কম চালিয়ে যাচ্ছেন। ছাত্র-জনতার উপর হামলা মামলার আসামি লোকমানকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন জকিগঞ্জ উপজেলাবাসী।
লোকমান আহমদ চৌধুরী সিলেট জেলার জকিগঞ্জ উপজেলার মনসুরপুর গ্রামের আব্দুল মালিক চৌধুরীর ছেলে।
জানা যায়, ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে জুলাইয়ে অস্ত্রের যোগান দিতেন জকিগঞ্জ র্ব্ডার অস্ত্র এনে জকিগঞ্জসহ সিলেটজুড়ে সরবারহ করেছিলেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা লোকমান ও তার বাহিনী। তাছাড়া আওয়ামী আমলে জকিগঞ্জ থানা প্রশাসন তার কাছে জিম্মি ছিল। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সরকারের আমলে জামায়াত-বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের উপর হামলা ও মামলার স্টিম রোলার চালিয়েছিলেন তিনি। উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা মামলার আসামি লোকমান কিভাবে এখনো গ্রেফতার এড়িয়ে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এই নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এনিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে স্ট্যাটাস দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেয়া একাধিক ছাত্রনেতারা।
ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর কয়েকদিন লোকমান গা ঢাকা দিয়ে থাকলেও এখন প্রকাশ্যেই ঘুরে বেড়াচ্ছেন। শুধু তাই নয় এখন তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুললে তাদের দেখে নেয়ার হুমকি-ধমকিও দিচ্ছেন। তাকে দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারীরা।
জুলাই আন্দোলন চলাকালে ৪ আগষ্ট জকিগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এক হয়ে হাফছা মজুমদার মহিলা ডিগ্রি কলেজের সামনে থেকে মিছিলের প্রস্তুতিকালে আন্দোলনকারীদের ওপর পূর্ব পরিকল্পিতভাবে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা লোকমান তার বাহিনী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালান। সন্ত্রাসীদের হামলা প্রতিহত করে শিক্ষার্থীরা মিছিল সহকারে জকিগঞ্জ বাজার প্রদক্ষিণ করে জকিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সামনে আসিলে পুনরায় হামলা চালায় লোকমান ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী। এসময় জকিগঞ্জ উপজেলা হাসপাতাল গেইটের সামনের সকল দোকানে ভাংচুর ও লুটপাট চালানো হয়।
সিলেট জেলা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতা মাহমুদ হোসেন মান্না বলেন, যারা আন্দোলনে আমাদের সহযোদ্ধাদের শহিদ ও আহত করেছে তাদের গ্রেফতার করতে প্রশাসনের কেন এতো অনিহা। যারাই জুলাই আন্দোলনের ডেভিলদের রক্ষা করতে আসবেন তাদের প্রতিহত করতে আমরা প্রস্তুত রয়েছি। আশা করি প্রশাসন জুলাই হামলা মামলার সকল আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার করবে।
ছাত্র-জনতার উপর হামলাকারী লোকমান আহমদ চৌধুরী প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাকে কেন গ্রেফতার করছেনা জানতে চাইলে জকিগঞ্জ থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল ইসলাম মুন্না বলেন, ছাত্র-জনতার উপর হামলা মামলার আসামি গ্রেফতারে থানা-পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। লোকমান আহমদ চৌধুরী প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ানোর খবর তিনি অস্বীকার করেন।
জকিগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি শফিকুর রহমান জানান, ‘সে কে (লোকমান আহমদ চৌধুরী), তাকে আমি চিনি না।
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ‘যদি বিএনপির কেউ তাকে শেল্টার দেয় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
Leave a Reply