জামালগঞ্জ প্রতিনিধি
জামালগঞ্জে ফিলিস্তিনিদের উপর ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে অর্ধ দিন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার সকালে উপজেলা সদর ও সাচনা বাজারের প্রধান প্রধান সড়কে ফিলিস্তিনি নিরীহ মুসলীমদের উপর ইসরায়েলি ইহুদিদের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে এবং ফিলিস্তিনির মুক্তিকামী জনগণের আন্দোলনের পক্ষে একাত্মতা প্রকাশ করে উপজেলার তৌহিদী জনতার ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এদিকে উপজেলার বিভিন্ন মসজিদ-মাদ্রাসা ও পাড়া-মহল্লা থেকে আলেম-ওলামা, মুসল্লি ও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার ধর্মপ্রাণ হাজার-হাজার মানুষ বিক্ষোভ মিছিলে অংশগ্রহন করতে জামালগঞ্জ উপজেলা পরিষদ গেট প্রাঙ্গণ ও সাচনা বাজারে পৃথক পৃথকভাবে সমবেত হন।
এছাড়াও উপজেলার ব্যবসায়ী ও সচেতন নাগরিকদের সিদ্ধান্তে সোমবার সাপ্তাহিক হাটবার থাকা সত্বেও তৌহিদী জনতার সাথে একাত্তত্বা ঘোষণা করে সনাতন ধর্মাবলম্বী ব্যবসায়ীরা সোমবার অর্ধ দিন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখেন এবং কেউ কেউ মিছিলে অংশগ্রহণসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইসরায়েলের প্রতি তীব্র নিন্দা প্রকাশ করে সম্প্রীতির অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি করেন।
এদিকে জামালগঞ্জ উপজেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল শেষে পথ সভায় বক্তব্য রাখেন, উপজেলা বিএনপি আহ্বায়ক কমিটির সিনিয়র যুগ্ন আহ্বায়ক আব্দুল মালিক, সদস্য এমদাদুল হক আফিন্দী, আলী আক্কাস মুরাদ, জামালগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মো. ওয়ালী উল্লাহ সরকার, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মোজাম্মেল হক স্বপন, যুব জমিয়তের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য মু. আলতাফুর রহমান, উপজেলা ইসলামি আন্দোলনের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মাও. মফিজুর রহমান আলাল, নয়াহালট মসজিদের ইমাম মাওলানা সালমান আহমদ, ছাত্রনেতা মাসুম আহমদ। এদিকে সাচনা বাজারে বিক্ষোভ মিছিল শেষে পথ সভায় বক্তব্য রাখেন, সাচনা বাজার বণিক সমিতির সহসাধারণ সম্পাদক মো. সেলিম আহমদ, আল ইনসাফ ইসলামি যুব সংঘের সিনিয়র সহসভাপতি কয়েস আহমদ আক্কাস, সাধারণ সম্পাদক কাজী আ: রশীদ আহমদ, সাংগঠনিক সম্পাদক হাফিজ মাওলানা মুহিব্বুল হক, উপজেলা যুবদলের যুগ্ন আহ্বায়ক এমদাদুর রহমান হিরণ, জামালগঞ্জ প্রেসক্লাবের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মো. বায়েজীদ বিন ওয়াহিদ, কোষাধ্যক্ষ মহসিন কবির ও হাফিজ জুবায়ের আহমদ প্রমুখ।
এসময় শত শত তৌহিদী জনতা ও ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
এসময় বক্তারা ঈসরাইলকে উগ্র-সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসী আখ্যায়িত করে ফিলিস্তিনি মুসলমানদেরকে নিরপরাধে হত্যার তীব্র নিন্দা জানান। পাশাপাশি ফিলিস্তিনি মুক্তির পক্ষে ও ইসরায়েলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে স্লোগানে স্লোগানে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এসময় তারা আরো বলেন, মুক্তিকামী ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাস কর্তৃক মুসলিমদের প্রথম কাবা আল-আকসা রক্ষায় “তুফান আল আকসা” মিশনের অংশ হিসেবে ইসরায়েল রকেট হামলা করে। এরই জের ধরে গত প্রায় দেড় বছর যাবত দফায় দফায় গাজায় ব্যাপক হত্যা ও বর্বরতা চালায় ঈসরায়েলী সৈন্যরা। সম্প্রতি গাজা ও রাফা শহরকে জনমানবহীন করতে অত্যাধুনিক অস্ত্র ব্যবহার করে ধ্বংসস্তুুপে পরিণত করেছে ঈসরায়েল সামরিক বাহিনী।
বক্তারা আরো বলেন, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্দেশে দখলদার ঈসরায়েল আমাদের প্রথম কেবলা দখল করতে না পেরে ধ্বংস করার পাঁয়তারা করছে। মুসলিম হিসেবে আমাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। আমরা মুসলিম হয়েও তাদের সাহায্য করতে পারছি না। আজকের এ বিক্ষোভ মিছিল থেকে আমরা সহানুভূতি জানাচ্ছি। বিশ্বের যেকোন প্রান্তে যদি মুসলিমরা আঘাতপ্রাপ্ত হয়, তাহলে আমাদের দেহও যেন আঘাতপ্রাপ্ত হয়। আমরা বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি তার নিজ অবস্থান থেকে ফিলিস্তিনের পক্ষে দাঁড়ানোর জন্য। বিশ্বের যে কোন প্রান্তে একজন মুসলিম আক্রান্ত হলে আমাদের দেহ’ই আক্রান্ত হয়েছে বলে মনে করি। আজকের বিক্ষোভ থেকে আমরা ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানাচ্ছি। পাশাপাশি বাংলাদেশে ইহুদিবাদী ঈসরাইলের যত পণ্য আছে সেগুলো বর্জন করার আহবান জানান।
বিক্ষোভ মিছিল শেষে বিশ্বব্যাপী শান্তির জন্য মোনাজাতের মাধ্যমে আপাতত কর্মসূচীর সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।
Leave a Reply