শামসুল কাদির মিছবাহ, সুনামগঞ্জ:
সুনামগঞ্জে গ্যাস সিলিন্ডার লিকেজ হয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৫টি বসতঘরসহ নগদ টাকা, ধান, গবাদিপশু ও ঘরের আসবাবপত্র পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে নগদ টাকাসহ অন্তত ১০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। রোববার (১৬ মার্চ) সন্ধ্যায় সদর উপজেলার কুরবাননগর ইউনিয়নের হাছনপুর (নোয়াগাঁও) গ্রামে এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার অতীশ দর্শী চাকমা।
আজ সোমবার (১৭ মার্চ) দুপুরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ৫টি পরিবারের মাঝে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে আর্থিক সহায়তা ও ত্রাণ সামগ্রী প্রদান করেন সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার অতীশ দর্শী চাকমা।
তবে এই সহায়তা অপ্রতুল বলে জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যসহ স্থানীয় এলাকাবাসী। আর্থিক সহায়তার পরিমাণ আরো বাড়ানোর দাবি জানান তাঁরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার হাছনপুর (নোয়াগাঁও) গ্রামের সৈয়দ মিয়ার স্ত্রী সন্ধ্যার পূর্বে ইফতারসামগ্রী তৈরি করার জন্য চুলার সুইস চাপেন। হঠাৎ গ্যাসের পাইপ লিক হয়ে মুহূর্তের মধ্যে আগুন আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে। আতঙ্কে পরিবারের লোকজন ঘর থেকে বের হয়ে যায়। এসময় আগুনের তীব্রতা বেড়ে পার্শ্ববর্তী নজরুল ইসলাম, মিলন আহমদ, এখলাস আলী ও মখলিস মিয়ার ঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায়। খবর পেয়ে স্থানীয় এলাকাবাসীর সহায়তায় ফায়ার সার্ভিসের একটি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে ততক্ষণে সবগুলো ঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায়। নজরুল ইসলামের স্ত্রী রাশেদা বেগম জানান, পার্শ্ববর্তী ঘরে আগুন লেগে আমার সব শেষ। ঘরে ৩০-৩৫ মণ ধান ছিলো সেগুলোও পুড়ে ছাই। তিনি বলেন, ঘর তৈরি করার জন্য জামানো নগদ ১ লাখ টাকা চোখের সামনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। একটা ছাগলও পুড়ছে, সব শেষ আমাদের। এখন পরনের কাপড়টা ছাড়া কিছুই নাই। স্থানীয় বাসিন্দা মাজহারুল ইসলাম বলেন, ইফতার সামগ্রী তৈরি করতে গিয়েই যখন চুলার সুইস চালু করা হয়, তখনই আগুন মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। সম্ভবত সিলিন্ডার গ্যাসের পাইপে লিকেজ ছিল, এইসময় আগুনে ৫টি বসতঘর পুড়ে ছাই হয়েছে। পরনের কাপড় ছাড়া এই পরিবারের সদস্যদের আর কিছুই নাই এখন। সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার অতীশ দর্শী চাকমা বলেন, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার খবর পাওয়ার পরপরই প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। পরে আজ সোমবার দুপুরে ক্ষতিগ্রস্ত ৪ টি পরিবারের মাঝে ১০ হাজার করে এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত ১টি পরিবারে ৫ হাজার টাকাসহ ত্রাণ সামগ্রী প্রদান করা হয়েছে। পরবর্তীতে যদি আরও সহায়তা আসে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
Leave a Reply