ধর্ষণের শিকার নারী-শিশুর ছবি-পরিচয় প্রকাশ করলেই আটক

ধর্ষণের শিকার নারী-শিশুর ছবি-পরিচয় প্রকাশ করলেই আটক

একুশে সিলেট ডেস্ক
ধর্ষণের শিকার নারীর ছবি বা পরিচয় সংবাদ মাধ্যম কিংবা ফেসবুকসহ সামাজিক মাধ্যমে কেউ প্রকাশ করলেই পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাকে আটক করতে পারবে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১৪ ধারায় বর্ণিত এই অপরাধ আমলযোগ্য হওয়ায় জড়িত অভিযোগে কোনো ব্যক্তিকে সঙ্গে সঙ্গে আটক করা যাবে। পরে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেল-হাজতে পাঠানো যাবে।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া বলেছেন, ‘আমলযোগ্য ধারায় পুলিশের কাছে তথ্য এলেই আপরাধীকে গ্রেপ্তার করতে পারবে। তথ্য যে কোনো সোর্স থেকে আসতে পারে। ভিকটিম কখন এসে থানায় অভিযোগ করবে, সে জন্য পুলিশকে অপেক্ষা করতে হবে না।’

২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১৪ ধরা অনুযায়ী, ধর্ষণের শিকার নারী বা শিশুর পরিচয় সংবাদপত্রে বা অন্য কোন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ বা পরিবেশন করা যাবে না। এই বিধান লংঘনের অনধিক দুই বৎসর কারাদণ্ডে বা অনূর্ধ্ব এক লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বলেন, ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের কোথাও বলা হয় নাই যে কোথায় প্রকাশ হলে সেটা প্রকাশ। বরং ফেসবুক, সোশ্যাল নেটওয়ার্ক যেখানেই প্রকাশ করা হউক সেটা প্রকাশই। সোসাল মিডিয়া এখন কমিউনিটি জার্নালিজমের মধ্যেই পড়ে।’

মাগুরায় আট বছরের শিশুর ধর্ষণের শিকার হওয়ার ঘটনা নিয়ে দেশজুড়ে তোলপাড় চলছে। সংকটাপন্ন অবস্থায় সিএমএইচে চিকিৎসাধী আছে ওই শিশু। তাঁর ছবি ও নাম-পরিচয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আদালতের নির্দেশে আজ রিট আবেদন করা হয়।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এবিএম হামিদুল মিসবাহ ও সৈয়দ মাহসিব হোসাইনের করা রিট আবেদনের শুনে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর বেঞ্চ রুলসহ মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুর ছবি–ভিডিও এবং নাম–ঠিকানা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সব প্ল্যাটফর্ম থেকে অপসারণের নির্দেশ দিয়েছেন। সেসঙ্গে আইনভঙ্গ করে শিশুর পরিচয় প্রকাশের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে তিন কার্যদিবসের মধ্যে ব্যবস্থা নিতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সোলায়মান তুষার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১৪ ধারা বৃহৎ দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে হবে। সেক্ষেত্রে সংবাদ পত্রের পাশাপাশি ফেসবুক, ইউটিউবসহ সকল মিডিয়ার উপরই নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।’

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ছাড়াও ২০২৩ সালের সাইবার নিরাপত্তা আইনে অনুমতি ছাড়া ছবিসহ ব্যক্তির পরিচিতি প্রকাশকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। ওই আইনের ২৬(১) ধারায় বলা আছে, ‘যদি কোনো ব্যক্তি আইনগত কর্তৃত্ব ব্যতিরেকে অপর কোনো ব্যক্তির পরিচিতি তথ্য সংগ্রহ, বিক্রয়, দখল, সরবরাহ বা ব্যবহার করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির অনুরূপ কার্য হইবে একটি অপরাধ।’

২৬(২) ধারা মতে, ‘যদি কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর অধীন কোনো অপরাধ সংঘটন করেন, তাহা হইলে তিনি অনধিক ২ (দুই) বৎসর কারাদণ্ডে, বা অনধিক ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।’

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.




© All rights reserved ©ekusheysylhet.com
Design BY DHAKA-HOST-BD
weeefff