এসএম হেলাল,বালাগঞ্জ :
সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার গহরপুর মোরারবাজার সংবাদপত্র লাইব্রেরির স্বত্বাধিকারী, স্থানীয় সুলতানপুর নিবাসী ও এলাকার সুপরিচিত সংবাদপত্র বিক্রেতা মো. নমির মিয়া (৫০) আর নেই।
শনিবার (১ মার্চ) রাতে সিলেটের খোজারখলা মসজিদে তারাবির নামাজরত অবস্থায় তিনি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। দ্রুত ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
রোববার (২ মার্চ) বেলা ২টায় স্থানীয় চর আলাপুর বড়মোকাম সংলগ্ন মাঠে তাঁর জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন হয়।
জামিয়া গহরপুর সিলেটের মুহতামিম হাফিজ মাওলানা মুসলেহউদ্দিন আহমদ রাজু জানাজায় ইমামতি করেন। জানাজায় আলেমসমাজ, জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, শিক্ষক, সাংবাদিকসহ এলাকার সর্বস্তরের মুসল্লিরা অংশ নেন।
দাফনের পর সুলতানপুর মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা রেদওয়ানুল হক রাজু মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করেন।
মো.নমির মিয়া শুধু একজন সংবাদপত্র বিক্রেতা ছিলেন না, তিনি ছিলেন সংবাদকর্মীদের নিত্যসঙ্গী, পাঠকদের আস্থার প্রতীক। প্রতিদিন সকালে একগুচ্ছ খবরের কাগজ হাতে নিয়ে রোদবৃষ্টি উপেক্ষা করে তিনি ছুটতেন পাঠকদের দুয়ারে, সংবাদ পৌঁছে দিতেন নিষ্ঠার সঙ্গে। তাঁর হাসিমাখা মুখ, কোমল ব্যবহার, সকলের প্রতি আন্তরিকতা—সবকিছুই তাকে আলাদা করে তুলেছিল। মৃত্যুকালে নমির মিয়া রেখে গেছেন বৃদ্ধা অসুস্থ মা, স্ত্রী ও পঞ্চম শ্রেণিতে (মাদ্রাসা) পড়ুয়া একমাত্র সন্তান মো. জহির মিয়া-কে। জীবনের চাকা চলছিল তাঁর সীমিত আয়ে, কিন্তু আজ সেই চাকা থমকে গেছে। পরিবারের এখন কোনো উপার্জনক্ষম ব্যক্তি নেই, তাদের পাশে দাঁড়ানোর মতোও কেউ নেই। একমাত্র সম্বল ছিল নমির মিয়ার পরিশ্রম—তাও আজ ইতিহাসের অংশ হয়ে গেছে।
আজ তাঁর পরিবার এক কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি। অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ আর বেঁচে থাকার যুদ্ধে তাঁরা একা হয়ে পড়েছে। সমাজের দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গ, বিত্তবানরা যদি তাদের পাশে না দাঁড়ান, তবে হয়তো এই পরিবারকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হবে।
নমির মিয়ার মৃত্যুতে পুরো এলাকা শোকে স্তব্ধ। কিন্তু শোক শুধু অনুভব করলেই চলবে না, মানবিকতা দেখিয়ে তাঁর পরিবারের পাশে দাঁড়ানোই হবে প্রকৃত সহমর্মিতা এমনি অভিমত সচেতন মহলের।
Leave a Reply