সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জ শহরের হাসননগর নিজের বাসায় নৃশংসভাবে খুন হয়েছেন মা ও ছেলে। জোড়া খুনের এই রহস্য উদঘাটনে
সিলেট থেকে ছুটে গেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-এর টিম। পাশাপাশি জেলা ডিবি পুলিশও তদন্ত করছে।
খুন হওয়া দুজন হলেন- ফরিদা বেগম (৫০) ও তার ছেলে মিনহাজুল ইসলাম (২০)।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৮টায় কাজের ভুয়া এসে ঘরের ভেতরে এই দুজনের রক্তাক্ত লাশ দেখে আশপাশের মানুষকে জানায়। পরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় রহস্য উদঘাটন করতে ডিবি পুলিশ ও সিলেট থেকে পিবিআই এসে কাজ শুরু করেছে বলে জানান সদর থানার ওসি নাজমুল হক। একইসঙ্গে পুলিশও কাজ করছে। সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
প্রতিবেশী ও স্বজনরা জানান, চার বছর আগে ফরিদা বেগমের স্বামী জাহেদুল ইসলাম মারা যান। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে। মেয়েকে যুক্তরাজ্য প্রবাসী ছেলের কাছে বিয়ে দেওয়ার পর থেকে তিনি ওখানেই থাকছেন। বাসায় থাকতেন ফরিদা বেগম ও তার কলেজপড়ুয়া ছেলে মিনহাজুল ইসলাম। সম্প্রতি খালাতো বোন নার্গিস বেগম ও তার মাদারাসাপড়ুয়া ছেলে ফাহমিদও এই বাসাতে থাকতে শুরু করেন। তিন দিন আগে ঢাকা থেকে এই বাসায় আসেন নার্গিস বেগমের ছেলে ফয়সল আহমদ (৩০)। ফয়সল মাদকাশক্ত বলে জানিয়েছেন স্বজন ও প্রতিবেশীরা।
ঘটনার পর ফয়সল ও ফাহমিদকে পাওয়া যাচ্ছে না। ফয়সলকে ফোনেও পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন স্বজনরা। তাদের মা নার্গিস বেগমকে অজ্ঞান অবস্থায় পাওয়া যায়, পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ফরিদা বেগমের বোন ছুফিয়া আক্তার বলেন, সোমবার রাত ১০টার পরেও ফরিদা বেগমের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে তার। তিনি ফোনের চার্জারের জন্য কল দিয়েছিলেন। ওই সময় বাসায় মিনহাজুলও ছিল। সকালে আত্মীয়-স্বজনরা দুর্ঘটনার খবর জানান।
এদিকে, অসুস্থ নার্গিস বেগমের দুই ছেলেকেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। নার্গিস বেগম এখনো কিছু বলতে পারছেন না।
নিহত ফরিদা বেগমের চাচাত ভাই সাজন মিয়া বলেন, সকালে খবর পেয়েই আমরা এখানে এসেছি। মা-ছেলের সঙ্গে একই বাসায় আরও একটি পরিবার থাকতো। ওই পরিবারে দুই ছেলে ছিল। ঘটনার পর থেকে তাদের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
সদর থানার ওসি নাজমুল হক জানান, সকালে খবর পেয়েই তারাও বাসায় এসেছেন। বাসায় ফয়সল ও ফাহমিদ নামের নিহতদের দুইজন আত্মীয় ছিল। তাদেরকে পাওয়া যাচ্ছে না। ফয়সল মাদকাশক্ত ছিল।
তিনি বলেন, আমরা নিবিড়ভাবে ঘটনার তদন্ত করছি। পিবিআই’এর একটি দলও সিলেট থেকে এসে তদন্ত শুরু করেছে।
জেলা পুলিশ সুপার আ. ফ . ম মো. আনোয়ার হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের বলেন, পূর্ব শত্রুতার জেরে পরিকল্পিতভাবে এমন নৃশংস ঘটনা সংঘটিত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে ডিবি ও পিবিআই’র টিম কাজ করছে। আশা করছি দ্রুতই ঘটনার রহস্য উদঘাটিত হবে।
Leave a Reply