সিলেট-৪ আসন: আরিফের মনোনয়ন প্রাপ্তির ঘোষণা ‘গুজব’

সিলেট-৪ আসন: আরিফের মনোনয়ন প্রাপ্তির ঘোষণা ‘গুজব’

স্টাফ রিপোর্টার
আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সিলেট-৪ (জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ) আসনে বিএনপির প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে নাটকীয়তা ও টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়েছে। কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ্ সিদ্দিকী, বিএনপির সাবেক সহ-স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সামসুজ্জামান জামান, গোয়াইনঘাট উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হাকিম চৌধুরী, জেলা বিএনপির উপদেষ্টা হেলাল উদ্দিনসহ একাধিক প্রার্থী দীর্ঘদিন ধরে এই আসন থেকে মনোনয়ন লাভের জন্য সভা-সমাবেশ ও হাইকমান্ডে জোর লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরীর হঠাৎ করে এই আসন থেকে নির্বাচন করার ঘোষণা স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মী ও ভোটারদের মধ্যে ক্ষোভ ও বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

প্রাথমিকভাবে আরিফুল হক চৌধুরী সিলেট-৪ আসন থেকে নির্বাচন করার ব্যাপারে অনীহা প্রকাশ করেছিলেন। তিনি সিলেট-১ আসন অথবা মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন এবং একটি সভায় জানিয়েছিলেন যে এই দুটি স্থানে তাকে সুযোগ না দিলে তিনি দলকে ‘আসসালামু আলাইকুম’ জানাবেন। গত ১৯ অক্টোবর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে বৈঠকে আরিফুল হক চৌধুরীকে সিলেট-৪ আসন থেকে প্রার্থী হিসেবে ডাকা হলেও তিনি সিলেট-১ আসনে অনড় থাকেন এবং সিলেট-৪ আসনে নির্বাচন করবেন না বলে জানান।

আরিফুল হক চৌধুরীর এই অনীহার কারণে জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জের বিএনপি ও এর অঙ্গসহযোগী সংগঠনের তৃণমূলের নেতাকর্মী ও ভোটাররা ক্ষুব্ধ হন। তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘আরিফকে লাল কার্ড’ ক্যাম্পেইন চালিয়ে আরিফুল হক চৌধুরীকে সিলেট-৪ আসনে না চাওয়ার বার্তা দেন।

তবে, মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) ঢাকায় যাওয়ার পর আরিফুল হক চৌধুরী হাইকমান্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং বুধবার (৫ নভেম্বর) নিজ থেকে ঘোষণা দেন যে তিনি সিলেট-৪ আসন থেকে বিএনপির হয়ে নির্বাচন করবেন। যদিও বিএনপির কোনো পর্যায় থেকে এই ঘোষণা আসেনি, তার সমর্থকরা প্রচার চালাচ্ছেন যে তিনি সিলেট-৪ আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন।

আরিফুল হক চৌধুরীর এই হঠাৎ ঘোষণাকে বিএনপির দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ, সিলেট-৪ আসনের অন্যান্য মনোনয়নপ্রত্যাশী এবং তাদের সমর্থকরা ‘গুজব’ আখ্যায়িত করছেন। একাধিক প্রার্থীর ঘনিষ্ঠজনরা প্রশ্ন তুলেছেন, “আরিফুল হক সাহেব কি হাইকমান্ড? তিনি ঘোষণা দিলেন সিলেট-৪ আসনে নির্বাচন করবেন আর তার সমর্থকরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিল যে তিনি মনোনয়ন পেয়ে গেলেন। দলের হাইকমান্ড সিদ্ধান্ত নেবে কাকে সিলেট-৪ আসনে প্রার্থী দেবে। আরিফ সাহেব নিজে নিজে ঘোষণা দিয়ে দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন।”

কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ্ সিদ্দিকী একুশে সিলেটকে জানান, “যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের কাছে দলের কোনো কাগজ আসবে, ততক্ষণ পর্যন্ত অফিসিয়ালি কিছু বলতে পারব না। তাছাড়া এই বিষয়ে এখনো আমি এবং আমার সাংগঠনিক সম্পাদক জিকে গউস সাহেবকে দলের কোনো পর্যায় থেকে কিছু অবহিত করা হয়নি। আরিফুল হক চৌধুরী যদি নিজে থেকে কোনো ঘোষণা দিয়ে থাকেন, তাহলে তা আমি জানি না।”

এই ঘটনা সিলেট-৪ আসনে বিএনপির অভ্যন্তরীণ বিভেদকে আরও স্পষ্ট করে তুলেছে এবং আসন্ন নির্বাচনের আগে দলের মধ্যে নতুন করে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে।

 

 

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.




© All rights reserved ©ekusheysylhet.com
Design BY DHAKA-HOST-BD
weeefff