একুশে সিলেট ডেস্ক
সিলেট নগরীর শাহজালাল উপশহর এলাকায় চাঁদা না দেওয়ায় এক কিশোর ও তাঁর মাকে মারধর এবং শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটেছে। ২৩ আগস্ট বিকেলে শাহজালাল উপশহরস্থ এইচ ব্লকের মাতাবের খেলার মাঠ ও এইচ ব্লক রোড নং-৪-এর রায়হানের দোকানের সামনে এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আতিকুর রহমান রাজু ও আরিফুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ও মাদক সেবনের সঙ্গে জড়িত। তারা পপি আক্তার ও তার পরিবারের কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিল। পপি ও তার স্বামী চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে রাজু ও আরিফুল তাদের সন্তানদের হত্যার হুমকি দেয়।
ঘটনার দিন, গত ২৩ আগস্ট বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে পপির ছেলে অপু (২২) শাহজালাল উপশহর ব্লক-এইচ খেলার মাঠে ক্রিকেট খেলতে যান। বিকেল ৪টার দিকে রাজু ও আরিফুলসহ একদল সন্ত্রাসী সেখানে গিয়ে অপুর কাছে তার মায়ের কাছ থেকে চাঁদার পাঁচ লাখ টাকার ব্যবস্থা করতে বলে, অন্যথায় তাকে হত্যা করে লাশ গুম করার এবং সৌদি আরবে যাওয়া বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেয়। অপু ভয়ে দৌঁড় দিলে রাজু-আরিফুল ও তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী দেশীয় অস্ত্র দা, রামদা, হকিস্টিক, জিআই পাইপ ইত্যাদি নিয়ে অপুকে ধাওয়া করে রায়হানের দোকানের সামনে আটক করে বেধড়ক মারধর করে। একপর্যায়ে অপুকে হত্যার উদ্দেশ্যে গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধ করতে চাইলে স্থানীয় দোকানি রায়হান অপুকে রক্ষা করেন।
এরপর আরিফুলের নির্দেশে তাদের বাহিনী দোকানের জিনিসপত্র ভাঙচুর করে প্রায় বিশ হাজার টাকার ক্ষতি সাধন করে। খবর পেয়ে পপি বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে রাজু ও আরিফুল তার ওপরও হামলা চালায়। আতিক ও রাজু পপির চুল ধরে টেনে-হিঁচড়ে কিলঘুষি মারে এবং তার পরিধেয় কামিজ ছিঁড়ে শ্লীলতাহানি করে। আরিফুল হকিস্টিক দিয়ে পপির ডান হাতের কব্জির উপরে, ডান পায়ের হাঁটুর নিচে ও পিঠে আঘাত করে মারাত্মক আহত করে। একপর্যায়ে রাজু পপির গলায় থাকা তিন ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন জোরপূর্বক ছিনতাই করে নেয়।
পপির চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে রাজু পপিকে “আজকে মতো বেঁচি গেলে ভবিষ্যতে তোদের এমন হাল করিব লোক সমাজ দেখবে, আমরা কেমন ভয়ংকর লোক” বলে হুমকি প্রদর্শন করে পালানোর চেষ্টা করে। এ সময় স্থানীয় লোকজন আরিয়ান (১৭) নামের এক কিশোরকে ধারালো দা সহ আটক করে। পরে শাহপরাণ (রহ.) থানা পুলিশ এসে আরিয়ানকে (১৭) উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নিয়ে যায়।
অাহত পপি ও তার ছেলে অপু স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করেন।
শাহপরাণ (রহ.) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনির হোসেন বলেন, তদন্তানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply