শৃঙ্খলায় ফিরছে নগরজীবন: সড়ক এখন হকারমুক্ত, যানজটও নিয়ন্ত্রিত

শৃঙ্খলায় ফিরছে নগরজীবন: সড়ক এখন হকারমুক্ত, যানজটও নিয়ন্ত্রিত

স্টাফ রিপোর্টার
জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা মেনে সিলেট নগরের প্রধান প্রধান সড়ক ও ফুটপাত ছেড়ে দিয়েছেন হকাররা। রোববার নগরের প্রধান সড়কগুলোতে হকারদের দেখা মিলেনি।

ফলে রোববার এক অন্যরকম নগরের দেখা পান নগরবাসী। দখলমুক্ত সড়ক ও ফুটপাত। কোথাও হকার নেই। ফলে যানজটও কমে গেছে অনেকটা। এতে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন নগরবাসী। এই অবস্থা অব্যাহত রাখার দাবি জানেয়েছেন তারা।

দুপুরে নগরীর প্রধান বাণিজ্যিক এলাকা জিন্দাবাজার, লামাবাজার, চৌহাট্টা, আম্বরখানা, বন্দরবাজার ও তালতলা এলাকায় ফুটপাত ও সড়কে হকারদের দেখা মিলেন। তবে এসব এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। তারা হেঁটে হেঁটে এসব এলাকায় টহল দিয়েছেন। সন্ধ্যার পর নগরের জিন্দাবাজার এলাকা পরির্দশন করেন পুলিশ কমিশনার আব্দুল কুদ্দুস চৌধুরী।

সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, রোববার নগরের সাতটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে একযোগে অভিযান চালানো হয়। এতে সাতজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অংশ নেন। তবে তার আগেই হকাররা সড়ক ও ফুটপাত ছেড়ে চলে যান।

এর আগে শনিবার প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, রবিবার সকাল থেকে নগরীর কোনো সড়ক বা ফুটপাতে হকার বসতে দেওয়া হবে না। এ নির্দেশ অমান্য করলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

হকারদের পুণবার্সনের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে লালদিঘির পড়ের মাঠ। তবে সড়ক ছাড়লেও রোববার এই মাঠে সামান্য সংখ্যক হকারদের দেখা গেছে। মাঠের বেশিরভাগ জায়গাই ফাঁকা রয়েছে। কয়েকজন দোকান প্রস্তুত করতে দেখা গেছে।

তাদের একজন বলেন, আমরা এরআগেও দুবার এখানে এসেছি। এখানে ক্রেতারা আসেন না। ফলে ব্যবসাও হয় না। এই মাঠে প্রবেশের রাস্তাও খুব সরু।

তিনি বলেন, ব্যবসা না করতে পারলে আমাদের না খেয়ে মরতে হবে। তাই প্রশাসনের কাছে দাবি আমাদের যেনো স্থায়ী একটি ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়।

তবে হকাররা ফুটপাত ছাড়ায় খুশি নগরবাসী। বন্দরবাজার হাসান মার্কেটের ব্যবসায়ী তরিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের মার্কেটের সামনের প্রায় পুরোটা সড়ক তো হকাররা দখল করে নিয়েছিলো। সব সময় এখানে যানজট লেগে থাকতো। ক্রেতারাও ফুকতে পারতো না।

তিনি বলেন, আজ দেখি ফুটপাত ফাঁকা, যানজট নেই। মনে হচ্ছে সত্যিই পরিবর্তন আসছে।

নগরবাসী প্রশাসনের এই কঠোর অবস্থানকে স্বাগত জানালেও তাদের আশঙ্কা—এই অবস্থা কতদিন থাকবে? আবারও কি পুরনো চিত্রে ফিরে যাবে শহর?

প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অভিযান একদিনের নয়, চলবে ধারাবাহিকভাবে—যতদিন না পর্যন্ত নগরীর ফুটপাত ও সড়ক পুরোপুরি দখলমুক্ত রাখা যায়।

সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, লালদিঘীরপারস্থ হকার মার্কেটের প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। চলছে শেষ মুহুর্তের কাজ। এখানে প্রায় ২ থেকে ৩ হাজার হকারের ব্যবসার সুযোগ তৈরি করা হয়েছে এবং নির্দিষ্ট পণ্যের জন্য আলাদা এলাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম বলেন, লালদিঘির পাড় মাঠে হকারদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সবাইকে সেখানে চলে যেতে হবে। নগরের ব্যস্ততম এলাকার সড়কে হকারদের বসতে দেওয়া হবে না। বসলেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.




© All rights reserved ©ekusheysylhet.com
Design BY DHAKA-HOST-BD
weeefff