শামসুল কাদির মিছবাহ, সুনামগঞ্জ
সরকারি সম্পদ ও প্রশাসনিক ক্ষমতা দলীয় স্বার্থে ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে সুনামগঞ্জ জেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা সরকারি গাড়িতে ঘুরে বেড়ানোয় প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
বুধবার দুপুর ২টার দিকে দোয়ারাবাজার উপজেলা পরিষদ চত্বরে সুনামগঞ্জ জেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আনোয়ার হোসেনের ব্যবহৃত সরকারি গাড়িতে আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট শংকর কুমার দাসকে দেখা যায়। গাড়ি থেকে নামার পর স্থানীয় সাংবাদিকরা বিষয়টি ভিডিও ধারণ করেন। পরে তিনি এলজিইডি কর্মকর্তাদের সঙ্গে উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট শংকর কুমার দাস অতীতে ক্ষমতায় থাকাকালে ছাতক-দোয়ারাবাজার এলাকায় ভয়ভীতি, দমননীতি ও বিরোধী রাজনীতির ওপর দমন-পীড়ন চালানোয় অন্যতম ভূমিকা ছিলো। ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় ছাত্রলীগকে উস্কে দিয়ে মাঠে নামার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। জুলাই বিপ্লবের পর তিনি দীর্ঘদিন আত্মগোপনে ছিলেন।
এ বিষয়ে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমরা তাকে রাজনৈতিক নেতা হিসেবে নয়, ব্যবসায়ী হিসেবে গাড়িতে তুলেছি। দলীয় পরিচয় এখানে মুখ্য নয়।’
তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, এটি আসলে দলীয় নেতাদের প্রশাসনিক সুবিধা দিয়ে পুনর্বাসনের একটি কৌশল। তারা বলছেন, ‘ব্যবসায়ী’ পরিচয়ের আড়ালে প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দোয়ারাবাজার উপজেলা শাখার সদস্য সচিব সোহেল মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, ‘শংকর বাবু আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ঠিকাদারি ব্যবসার আড়ালে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। আন্দোলন দমন-পীড়নে ছাত্রলীগকে ব্যবহার করেছেন। আজ তাকে দেখা যাচ্ছে সরকারি গাড়িতে ঘুরতে।’
তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন, দোয়ারাবাজার উপজেলা এলজিইডি এর প্রকৌশলী আব্দুল হামিদ নিজেও আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠ। তার কার্যালয়ে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের অবাধ যাতায়াত রয়েছে।
স্থানীয়দের মতে, এভাবে একটি সরকারি দপ্তর দলীয় ক্যাম্পে পরিণত হওয়া দুঃখজনক। প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে জনমনে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
Leave a Reply