সর্বশেষ :
১২ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন ঘিরে নিরাপত্তা জোরদারের আহ্বান খন্দকার মুক্তাদিরের একের পর এক টার্গেট কিলিংয়ে উদ্বেগ শুনেছি হত্যার জন্য ৭০ জনের তালিকা করা হয়েছে: মির্জা আব্বাস ‘ক্যাঙ্গারু কোর্টের’ রায় বাতিল ও ছাত্রদল নেতা লিটনের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে রাজপথে বিএনপি ওসমানীনগরে সিএনজি চালককে হত্যা করে গাড়ি ছিনতাই, তদন্তে পুলিশ ডেভিল হান্ট ফেজ–২: সুনামগঞ্জে নিষিদ্ধ আ.লীগ ও ছাত্রলীগের দুই নেতা গ্রেফতার রেমা কালেঙ্গায় বনদস্যুদের তাণ্ডব, গোলাগুলির ঘটনায় মামলা, আসামি ৫০ জন শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ ৭০০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার, মাদক ব্যবসায়ী ধরা পড়ল জকিগঞ্জে ওসমান হাদী গুলিবিদ্ধ: সিলেট বিভাগের সীমান্তজুড়ে বিজিবির হাই অ্যালার্ট

এমআরসিপি জয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সিলেটের ডা. তাহেরের গৌরব

এমআরসিপি জয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সিলেটের ডা. তাহেরের গৌরব

একুশে সিলেট ডেস্ক
যুক্তরাজ্যের চিকিৎসা বিজ্ঞানের সর্বোচ্চ মর্যাদাপূর্ণ ডিগ্রিগুলোর একটি এমআরসিপি ডিগ্রি লাভ করেছেন সিলেটের সন্তান ডা. মুহাম্মদ আবু তাহের।

২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে যুক্তরাজ্যের রয়েল কলেজ অফ ফিজিসিয়ান্স অব ইউনাইটেড কিংডম থেকে এমআরসিপি (UK) ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। —যা কঠিন তিন ধাপের পরীক্ষার মাধ্যমে অর্জিত হয়। এক বছর পর সম্প্রতি তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে এই ডিগ্রি গ্রহণ করেন।

ডা. মুহাম্মদ আবু তাহের বলেন, “আল্লাহর অশেষ রহমতে এ প্রাপ্তি। যার অনুগ্রহ প্রকাশ করে শেষ করার নয়। আমরা জন্মের পর থেকে মৃত্যু পর্যন্ত শিক্ষা গ্রহণ করি—পারিবারিক শিক্ষা, দুনিয়াবি জ্ঞান, ধর্মীয় জ্ঞান। কিন্তু মহান আল্লাহ যার নসীবে এই সম্পদ না রাখেন, সে কখনো জ্ঞান অর্জন করতে পারে না।”

ডা. মুহাম্মদ আবু তাহেরের চিকিৎসা শিক্ষা ও পেশাগত পথচলা: ডাক্তার হয়ে তিনি বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা যুক্তরাজ্যে মানবজাতির সেবায় রয়েছেন।

“এমআরসিপি (UK) শুধু একটি পরীক্ষা নয়; এটি যুক্তরাজ্যে কনসালট্যান্ট হওয়ার পথে অত্যাবশ্যক সোপান। এখন আল্লাহর ইচ্ছায় কনসালট্যান্ট হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি জানিয়ে তিনি আরও বলেন, এই পথচলা সহজ ছিল না; নিজের পিতামাতার অক্লান্ত পরিশ্রম, পরিবার, আত্মীয়স্বজন এবং সুহৃদ মানুষের দোয়া ও সহায়তায় আজকে এই অবস্থানে আসতে পেরেছি।

শিক্ষাজীবনের শুরু—গ্রাম থেকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে: তিনি বিয়ানীবাজার উপজেলার কুড়ারবাজার ইউনিয়নের আকাখাজানা গ্রামের মৃত সফিকুর রহমানের ছেলে ও মৃত জফর আলীর নাতি। ছোটবেলা থেকে ভদ্র,নম্র ও অত্যন্ত মেধাবী ডা. তাহের ২০০১ সালে কুড়ারবাজার দ্বি-পাক্ষিক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সাথে এসএসসি ও ২০০৩ সালে সিলেট এমসি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন।
পরে সিলেটের জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিক্যাল কলেজ থেকে ২০০৯ সালে এমবিবিএস সম্পন্ন করেন। এরপর বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনস (BCPS) থেকে এফসিপিএস (মেডিসিন) পার্ট-১ পাস করে ট্রেনিং সম্পন্ন করেন।

ফাইনাল পরীক্ষার আগে যুক্তরাজ্যে চাকরির সুযোগ পাওয়ায় তিনি সেখানে মেডিসিনে কর্মজীবন শুরু করেন এবং পরবর্তীতে সফলভাবে এমআরসিপি (UK) সম্পন্ন করেন।

শিক্ষাজীবনে বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, আমার উচ্চশিক্ষা ও পেশাগত অগ্রযাত্রায় বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন চাচাতো ভাই—আমেরিকা প্রবাসী তারেক আহমদ। তিনি মানসিক, আর্থিক ও নানানভাবে যে অবদান রেখেছেন, তা বলে শেষ করা যাবে না। যে কারণে বড় ভাই তারেক ভাইয়ের কাছে আজীবন কৃতজ্ঞ। কেবল আর্থিক সহযোগিতাই নয়—উনি আমার জীবনের এক বিশাল অনুপ্রেরণার নাম। ছোটবেলা থেকে তাঁর সার্বক্ষণিক দিকনির্দেশনা, সাহস, মানসিক শক্তি ও তার দেখানো পথ আমাকে লক্ষ্য স্থির করতে এবং সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে শিখিয়েছে।”

তিনি আরও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন—নিজ মা-বাবা ,চাচাতো ভাই লায়েক আহমদ, এবং পরিবারের সকল সদস্যের প্রতি। এছাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বর্তমান পর্যন্ত সকল শিক্ষকের প্রতিও তিনি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

২০১৭ সালে দাম্পত্য জীবন শুরু: তার স্ত্রী ও নিজেও একজন ডাক্তার। তবুও আমার অগ্রগতির জন্য তিনি নিজের ক্যারিয়ারে বিরতি দিয়েছেন। এটা বিরল ত্যাগ, অসাধারণ ভালোবাসা, আত্মনিবেদন ও আমার প্রতি অটল আস্থার বহিঃপ্রকাশ।

প্রবাসে থেকেও মন-প্রাণ বাংলাদেশে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মানুষের মন জয় করেছিলেন তাঁর চিকিৎসা দক্ষতা, মানুষের প্রতি আন্তরিক সহযোগিতা ও সেবা দিয়ে। তাঁর চিকিৎসা মানবিকতা, রোগী-সেবার মনোভাব এবং বিনয়ী আচরণ তাঁকে সিলেটের চিকিৎসক সমাজে একটি সুপরিচিত নাম হিসেবে তুলে ধরেছিল।

চিকিৎসার পাশাপাশি তিনি চিকিৎসা বিজ্ঞানে শিক্ষকতা করতেন, যা তাঁকে আরও বেশি সবার হৃদয়ে স্থান করে দেয়। বিদেশে পাড়ি জমালেও যেসব মানুষ তাঁর সেবা পেয়েছিলেন, তারা এখনো তাঁকে স্মরণ করেন, দোয়া করেন এবং দেশে ফিরে আবার জনগণের সেবা করার জন্য আন্তরিক অনুরোধ জানান।

পরিচিত জনের ভাষ্য মতে, সধা হাস্যেজ্জল পরোপকারী ডা: তাহের খুবই ভালো মনের একজন মানুষ। তার দীর্ঘায়ু ও সাফল্য কামনা করেন। নিজ এলাকা এবং দেশের সকল মানুষের কাছে তিনি দোয়া কামনা করে বলেন-“আপনাদের দোয়া ও ভালোবাসাই আমার আগামীর শক্তি।”

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.




© All rights reserved ©ekusheysylhet.com
Design BY DHAKA-HOST-BD
weeefff