বিশ্বনাথ প্রতিনিধি:
প্রেম করে বিয়ে, তারপর পরিত্যাগ—এরপর অনশন। এমন ঘটনাই ঘটেছে সিলেটের বিশ্বনাথে। স্বামীর ঘরে উঠতে দুই দিন ধরে বারান্দায় অনশন করছেন এক অন্তঃসত্ত্বা তরুণী।
মঙ্গলবার সকাল ১১টা থেকে রামপাশা ইউনিয়নের রহমাননগর গ্রামের কাতার প্রবাসী আরিফ উদ্দিনের (২৫) বাড়ির বারান্দায় অবস্থান করছেন তাঁর স্ত্রী রিফা বেগম (১৮)। বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্তও তিনি স্বামীর বাড়িতেই অনশনরত ছিলেন। স্থানীয়রা বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করলেও রিফার অনড় অবস্থানের কারণে তা সম্ভব হয়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, একই গ্রামের সমুজ আলীর মেয়ে রিফা বেগমের সঙ্গে আরিফ উদ্দিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল দীর্ঘদিনের। আগে আরিফ স্থানীয়ভাবে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালাতেন। প্রেমের সম্পর্ক থেকে একপর্যায়ে শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন দুজন। পরে রিফা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে আরিফকে বিষয়টি জানানো হয়।
গত ৪ জুলাই স্থানীয়দের উপস্থিতিতে কাজী ডেকে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। তবে উভয় পরিবারের কেউই বিষয়টি মেনে নেয়নি। ফলে তারা একটি স্থানীয় কলোনিতে বসবাস শুরু করেন।
চলতি মাসের ৬ তারিখ পর্যন্ত দাম্পত্য জীবন স্বাভাবিক থাকলেও এর দুই দিন পর আরিফ হঠাৎ করে নিখোঁজ হন। পরে জানা যায়, তিনি কোনো কিছু না জানিয়েই কাতার চলে গেছেন।
স্বামীর অনুপস্থিতিতে যখন রিফা তাঁর শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে উঠতে চান, তখন শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁকে ঘরে উঠতে দেননি। নিরুপায় হয়ে মঙ্গলবার সকাল থেকে ঘরের বারান্দায় বসেই অনশন শুরু করেন রিফা বেগম।
আরিফের বড় ভাই মিছবাহুর রহমান জানান, ‘আমাদের অবাধ্য হয়ে সম্পর্কের মাধ্যমে বিয়ে করায় আমার পিতা স্ট্যাম্পে লিখিতভাবে আরিফকে ত্যাজ্য ঘোষণা করেছেন। তাঁর সাথে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। এই মেয়ে এখন আমরা ঘরে উঠতে দেবো কেন?’
রামপাশা ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নং ওয়ার্ডের সদস্য মখন মিয়া বলেন, ‘শুনেছি, পারিবারিকভাবে আরিফকে বিদেশ পাঠানো হয়েছে এবং খবরটি শোনে মেয়েটি মঙ্গলবার সকাল থেকে তাদের বাড়িতে অনশন করছে। ছেলের পরিবার আমাকে জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে তারা বসবেন। তবে, এখন পর্যন্ত তারা তেমন কোনো উদ্যোগ নেননি।’
বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এনামুল হক চৌধুরী বলেন, ‘খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছে। মেয়েটি স্বামীর ঘরে উঠতে অনড়। তবে, তিনি যদি এই বিষয়ে থানা পুলিশের সহায়তা চান, আমরা আইনি সহায়তা দেবো।
Leave a Reply