বালাগঞ্জ প্রতিনিধি
সিলেটের বালাগঞ্জে পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে হাতকড়াসহ এক সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার মাদরাসা বাজার এলাকায় এই ঘটনায় ৪-৫ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। পরে অবশ্য সেনাবাহিনী ও স্থানীয়দের সহায়তায় ছিনিয়ে নেওয়া আসামিকে গ্রাম থেকে পুনরায় গ্রেফতার করা হয়।
এই ঘটনায় বালাগঞ্জ থানার এসআই শাহ ফরিদ আহমেদ বাদী হয়ে ৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ৪০-৫০ জনকে আসামি করে একটি পুলিশ অ্যাসল্ট মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার আসামিরা হলেন ফুজায়েল খান সাজু, রাজু খান, শাওন, শিমুল, আজই, টিটু, সালমান, সাব্বির ও নানু মিয়ার নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের একটি মামলায় উপজেলার দেওয়ান বাজার ইউনিয়নের শিওরখাল গ্রামের ইউনুছ খানের ছেলে ও উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ফুজায়েল আহমদ খান সাজুর (৩৫) বিরুদ্ধে দুই বছরের কারাদণ্ড এবং এক হাজার টাকা জরিমানা জারি করেন আদালত। তিনি দীর্ঘদিন পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ছিল।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) রাত ৯টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বালাগঞ্জ থানার পুলিশের একটি দল মাদরাসা বাজার ব্রিজ এলাকা থেকে সাজুকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পর তার হাতে হাতকড়া পরালে তিনি পুলিশের সাথে ধস্তাধস্তি শুরু করেন এবং চিৎকার করতে থাকেন। এসময় সাজুর ভাই যুবলীগ নেতা রাজু খানের নেতৃত্বে ১০-১২ জন যুবক ঘটনাস্থলে এসে পুলিশকে ঘিরে ফেলে এবং আসামিকে ছেড়ে দেওয়ার দাবি জানায়।
পুলিশ গ্রেফতারি পরোয়ানা দেখালেও তারা উত্তেজিত হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে হাতকড়া পরা অবস্থায় সাজু ও তার সহযোগীরা পুলিশের উপর হামলা চালায়। হামলায় এএসআই কানন কুমার দাসের গলায় ও শরীরে গুরুতর জখমসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন। হামলাকারীরা এই সুযোগে সাজুকে হাতকড়াসহ ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এসময় পুলিশকে রক্ষা করতে গিয়ে স্থানীয় এক ব্যক্তিও আহত হন।
খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরবর্তীতে পুলিশের ব্যাপক তৎপরতা এবং স্থানীয় বিএনপি নেতা তুফায়েল আহমদ সুহেল, আসামি সাজুর পিতা মাওলানা ইউনুস খান ও অন্যান্য মুরব্বিদের সহযোগিতায় রাত সাড়ে বারোটার দিকে শিওরখাল গ্রাম থেকে সাজুকে পুনরায় গ্রেফতার করা হয়।
বালাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ উদ্দিন আহমদ ভূঁইয়া মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ৮ আগস্ট আসামি সাজুকে আদালতে সোপর্দ করা হলে তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়।
Leave a Reply