গোয়াইনঘাট প্রতিনিধি
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং চা-বাগানে ইমাম উদ্দিন (৩৮) নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিসহ মোট ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ। মঙ্গল ও বুধবার (৫ ও ৬ আগস্ট) মধ্য জাফলং এলাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন মনজ্জির আহমদের ছেলে কপিল উদ্দিন লিটন, মৃত বসন্ত গোয়ালার ছেলে নিরঞ্জন গোয়ালা, শুধু প্রধানের ছেলে আক্কেল প্রধান, বীরেন ঘাটুয়ার ছেলে বিশ্বজিত, চুনিলাল কর্মকারের ছেলে চপ্পল কর্মকার, হৃদয় মৃধার ছেলে সঞ্জিত মৃধা, বীরেন রায়ের ছেলে কাজল রায়, মঙ্গল রায়ের ছেলে কাজল রায় এবং বাবুল কর্মকারের ছেলে সজীব কর্মকার।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাতে জাফলং চা-বাগানে ইমাম উদ্দিনকে একদল লোক আটক করে পাশবিক নির্যাতন চালায়। পরিবারের অভিযোগ, বেধড়ক মারধরের একপর্যায়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পরদিন মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সকালে চা-বাগানের একটি কক্ষ থেকে পুলিশ তার রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে। নিহত ইমাম উদ্দিন গোয়াইনঘাট উপজেলার মেদি গ্রামের হরমুজ আলীর ছেলে।
এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে নিহতের বাবা হরমুজ আলী বাদী হয়ে গোয়াইনঘাট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় জাফলং চা-বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপক কপিল উদ্দিন লিটনকে প্রধান আসামি করে মোট ২৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয় এবং অজ্ঞাত আরও ১০-১২ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলা দায়েরের পর পুলিশি অভিযানে গতি আসে। মঙ্গলবার ঘটনাস্থল থেকে ৩ জন এবং সন্ধ্যায় আরও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। সর্বশেষ বুধবার (৬ আগস্ট) দুপুরে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আরও ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরকার মো. তোফায়েল আহমদ জানান, নিহতের বাবার দায়ের করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে মামলার প্রধান আসামিসহ মোট ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। বুধবার দুপুরে আসামিদের সিলেটের গোয়াইনঘাট আমলী আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাদের জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। এই ঘটনায় জড়িত বাকি আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে, হত্যাকাণ্ডের খবর ছড়িয়ে পড়লে মঙ্গলবার সকালে স্থানীয় জনতা খুনিদের গ্রেফতারের দাবিতে চা-বাগান এলাকা ঘেরাও করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। পুলিশি তৎপরতা ও আটকের খবরে পরিস্থিতি শান্ত হয়। যদিও পরিবারের দাবি, হত্যাকাণ্ডকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে চুরির অপবাদ দেওয়া হচ্ছে।
Leave a Reply