সর্বশেষ :
সিনেমা থিয়েটারেই পরিচালককে জুতাপেটা করলেন রুচি গুজ্জার! ১৬ বছর ধরে সেতুর নিচে জীবনের নির্মম যুদ্ধ এনসিপির কাছে নীলার প্রশ্ন—এত দিন আমাকে কিসের ভিত্তিতে ব্যবহার করেছেন? ওষুধ কোম্পানির উপঢৌকনে সর্বনাশ হচ্ছে রোগীর পুলিশ অফিসার দিদারুল ছিলেন আমাদের গর্ব: নিউইয়র্কের মেয়র গভীর সংস্কার না হলে স্বৈরাচার আবার ফেরত আসবে : প্রধান উপদেষ্টা জুলাই আন্দোলনে মারণাস্ত্র ব্যবহার নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন সাবেক আইজিপি গোলাপগঞ্জ মাছ ধরতে গিয়ে নৌকা ডুবে বৃদ্ধের মৃত্যু নিউইয়র্কে গুলিতে নিহত দিদারুল : কুলাউড়ার বাড়িতে শোকের মাতম দুর্নীতির অভিযোগে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা
১৬ বছর ধরে সেতুর নিচে জীবনের নির্মম যুদ্ধ

১৬ বছর ধরে সেতুর নিচে জীবনের নির্মম যুদ্ধ

নবীগঞ্জ প্রতিনিধি

হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার রুস্তমপুর এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের শাখা বরাক নদীর ওপর নির্মিত একটি সেতুর নিচে বসবাস করছেন এক অসহায় পরিবার। সেতুর ওপর দিয়ে প্রতিদিন ছুটে চলছে অসংখ্য ভারী যানবাহন—বাস, ট্রাক, লরি। আর নিচে চলছে জীবনের নির্মম যুদ্ধ।

দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে সেই ব্রিজের নিচে জীবন কাটাচ্ছেন ৭২ বছর বয়সী বৃদ্ধ মো. আলাবর মিয়া ও তার পরিবার।

সরেজমিন দেখা যায়, সেতুর নিচে বসবাস করা এ পরিবারটির জন্য প্রতিটি মুহূর্ত যেন এক মৃত্যুঝুঁকি। ছয় ফুটের মতো উঁচু-নিচু জায়গায় সামান্য পলিথিন ও কাঠ দিয়ে তৈরি ঘর—সে ঘরেই স্ত্রী, সন্তান, পুত্রবধূ, নাতি-নাতনিসহ মোট ১৫ সদস্যের পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা।

বৃদ্ধ আলাবর মিয়া জানান, তিনি নবীগঞ্জ উপজেলার রুস্তমপুর গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা হলেও তার নেই নিজের কোনো জমি বা বাড়ি। আশ্রয়ের খোঁজে ২০০৯ সাল থেকে তিনি পরিবারসহ ব্রিজের নিচে বসবাস শুরু করেন। দিনরাত ভারী যানবাহনের শব্দে ঘুম ভাঙে তাদের। ছোট-ছোট শিশুদের ঘুমাতে কষ্ট হয়, সবসময়ই থাকে এক অজানা আতঙ্ক। বর্ষা মৌসুমে দুর্ভোগ হয় চরম—ঘরে পানি ঢুকে দুর্বিষহ হয়ে ওঠে জীবন।

তিনি বলেন, জীবনের শেষ বয়সে একটি ঘরও জোটেনি। পরিবারের কেউ লেখাপড়া করতে পারছে না। অসুস্থ হলেও ওষুধ কেনার টাকা নেই। বাঁচার জন্য প্রতিদিন লড়াই করতে হয়।

১৬ বছর ধরে সেতুর নিচে জীবনের নির্মম যুদ্ধ

পরিবারের সদস্যরা জানান, অনেকবার স্থানীয় ইউপি মেম্বার ও চেয়ারম্যানের কাছে গিয়েও কোনো সরকারি ঘর বরাদ্দ পাননি তারা।

স্থানীয় বাসিন্দা আল-মামুন বলেন, এইপরিবারটির অবস্থা দেখে চোখে পানি এসে যায়। এখনই সহযোগিতা না করলে হয়তো এই শিশুগুলোকে আমরা হারিয়ে ফেলব অন্ধকার ভবিষ্যতের দিকে।

সবুজ উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি জানান, এ পরিবারের প্রতিদিন খাদ্য সংকট থাকে। একবেলা খাবার জুটলেও অন্য বেলা অনাহারে দিন কাটাতে হয় পুরো পরিবারকে। অসুস্থ হলে টাকার অভাবে চিকিৎসা নিতে পারে না।

এদিকে স্থানীয়রা এই অসহায় পরিবারের পাশে সরকারি সহযোগিতার পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসারও আহ্বান জানিয়েছেন।

দেবপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. বশির আহমদ জানান, পরিবারটি সরকারি ঘরের জন্য আবেদন করলেও এখনো বরাদ্দ সম্ভব হয়নি। তবে তাদের বিষয়টি ইউপি ও প্রশাসনের নজরে রয়েছে, ভবিষ্যতে সহায়তা দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মো. ফরিদুর রহমান বলেন, ‘পরিবারটিকে সরকারি বন্দোবস্তের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলছে। অল্প সময়ের মধ্যেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.




© All rights reserved ©ekusheysylhet.com
Design BY DHAKA-HOST-BD
weeefff