আমরা দেশের মানুষের পালস বুঝি: মির্জা ফখরুল

আমরা দেশের মানুষের পালস বুঝি: মির্জা ফখরুল

একুশে সিলেট ডেস্ক

বিএনপি জনগণের ‘পালস’ বোঝে, রাজনৈতিক দল হিসেবে অত্যন্ত সচেতনভাবেই বিএনপি সামনে এগোচ্ছে জানিয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘দল হিসেবে আমরা (বিএনপি) অত্যন্ত সচেতন। জনগণের যেটা প্রয়োজন এবং যুগের সঙ্গে সঙ্গে যে পরিবর্তন আনা দরকার, রাষ্ট্রীয় কাঠামোর যে পরিবর্তন আনা দরকার, সে ব্যাপারে আমরা অত্যন্ত সচেতন এবং সচেতনভাবেই আমরা সামনের দিকে এগোচ্ছি।’

আজ রোববার রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।

‘পদ্মা ব্যারেজ ও দ্বিতীয় পদ্মা সেতু-দিগন্ত উন্মোচনের সম্ভাবনা’ শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজন করে পদ্মা ব্যারেজ ও দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন জাতীয় কমিটি।

পদ্মা ব্যারেজ ও দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের জন্য রাজনৈতিক অঙ্গীকার সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জনগণের মধ্য থেকে এই দাবি উঠে এলেই তা সম্ভব হবে।’ তিনি বলেন, ‘বিএনপি দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এবং জনগণের জীবন-জীবিকার প্রশ্ন জড়িত থাকায় বিএনপি এই অঞ্চলগুলোর উন্নয়নে অত্যন্ত সচেতন। জনগণ ঐক্যবদ্ধ থাকলে যেকোনো কঠিন কাজই সম্ভব।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা দেশের মানুষের পালস বুঝি। দেশের মানুষ উন্নতি চায়, একটি সত্যিকার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চায়। আর এই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার মধ্য দিয়েই সমস্ত সমস্যার সমাধান খুঁজে পাওয়া যাবে।’ তিনি বলেন, ‘প্রায় আট কোটি মানুষের জীবন-জীবিকা পদ্মা ব্যারেজ ও পদ্মা সেতুর সঙ্গে জড়িত। দীর্ঘ সাতবার সম্ভাব্যতা যাচাই হলেও এখন পর্যন্ত কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়নি, যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ফারাক্কা ব্যারেজ শুধু ফরিদপুর বা নির্দিষ্ট কোনো এলাকার সমস্যা নয়, এটি সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের সমস্যা। এ অঞ্চলের মানুষের নিরাপত্তা এবং জীবন-জীবিকা রক্ষায় পদ্মা ব্যারাজ ও দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণ অত্যন্ত জরুরি।’ তিনি বলেন, ‘দক্ষিণাঞ্চলের অনেক এলাকা বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ায় মানুষ সেখান থেকে চলে যাচ্ছে, যা একটি গুরুতর সমস্যা। এ অঞ্চলের বহু মানুষ তাদের ভিটেমাটি ছেড়ে চলে যাচ্ছে কারণ তা আর বসবাসের উপযোগী থাকছে না। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ইস্যু।’

তিনি আরও বলেন, ‘নাগরিকদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদের দাবি নিয়ে সামনে দাঁড়াতে হবে, যে সরকারই আসুক না কেন, তাদের এই বিষয়ে কাজ করতে হবে।’

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশকে সামনে রেখে সব আলোচনা করতে হবে। বাংলাদেশ এখন রাজনৈতিক সন্ধিক্ষণে আছে। আগামী দিনে রাজনীতির গতিপথ কী হবে, সেটা এই মুহূর্তে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।’ তিনি বলেন, ‘আগামীতে যারা দেশ পরিচালনার দায়িত্বে আসবেন, সেই রাজনৈতিক নেতৃত্বটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। তাদের কাছে আমাদের প্রত্যাশা, আমি অনুরোধ করব-মানুষের কাছে নিজেদের নতুন আঙ্গিকে উপস্থাপন করতে হবে।’

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘সামনে নির্বাচন, নির্বাচনী প্রচারণা হবে। আমি প্রত্যাশা করব এই বিষয়টি (পদ্মা ব্যারেজ ও দ্বিতীয় পদ্মা সেতু) প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারে যেন স্থান পায়।’

রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনারা এটিকে নির্বাচনী ইশতেহারে দেবেন। যেন এই দাবি জাতীয় দাবিতে পরিণত হয়।’

সেমিনারের সভাপতিত্বে করেন, আয়োজক কমিটির সভাপতি ও রাজবাড়ী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম। সেমিনারে অন্যদের মধ্যে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস প্রমুখ বক্তব্য দেন।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.




© All rights reserved ©ekusheysylhet.com
Design BY DHAKA-HOST-BD
weeefff