প্রধানমন্ত্রী দলীয় প্রধান হতে পারবেন না—এই দাবির যৌক্তিকতা নেই: সালাহউদ্দিন

প্রধানমন্ত্রী দলীয় প্রধান হতে পারবেন না—এই দাবির যৌক্তিকতা নেই: সালাহউদ্দিন

একুশে সিলেট ডেস্ক

প্রধানমন্ত্রী পদে আসীন ব্যক্তি একই সঙ্গে দলীয় প্রধান হতে পারবেন না, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এমন সিদ্ধান্তের বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘দলীয় প্রধান প্রধানমন্ত্রী হবেনই—এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই, আবার তাঁকে প্রধানমন্ত্রিত্ব থেকে বাদ দেওয়ারও কোনো যৌক্তিকতা নেই।’

আজ মঙ্গলবার (২২ জুলাই) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপের ১৭তম দিনের সংলাপ শেষে এসব কথা বলেন সালাহউদ্দিন।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা আগেই বলেছি—৭০ অনুচ্ছেদে যেমন ভিন্নমত (ডিসেন্টিং ভয়েস) রাখার সুযোগ রেখেছি, এটিও সেভাবে রাখা যেতে পারে। আমাদের অবস্থান হলো, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় দলীয় প্রধান প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না—এমন বিধান যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ কোথাও নেই। এটা তাঁর একটি গণতান্ত্রিক অধিকার।’

তিনি বলেন, ‘পার্লামেন্টারিয়ানরা যাকে চাইবেন, তিনিই হবেন প্রধানমন্ত্রী। দলীয় প্রধান প্রধানমন্ত্রী হবেনই—এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই, আবার তাঁকে প্রধানমন্ত্রিত্ব থেকে বাদ দেওয়ারও কোনো যৌক্তিকতা নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী, সংসদ নেতা এবং দলীয় প্রধান—একই ব্যক্তি হবেন কি না, এ বিষয়ে প্রায় সবাই একমত যে একই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা হতে পারেন, তবে দলীয় প্রধান হওয়া নিয়ে কিছু দলের দ্বিমত রয়েছে।’

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা নিয়ে মঙ্গলবারের বৈঠকে বিএনপি সংশোধিত প্রস্তাব উপস্থাপন করে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ এ বিষয়ে বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের গঠন প্রণালি নিয়ে আমরা দলে সর্বোচ্চ পর্যায়ে আলোচনা করে গত রাতে কমিশনের কাছে আমাদের পরিমার্জিত মতামত জমা দিয়েছি। কমিশনের পক্ষে প্রস্তাবিত ৫৮ অনুচ্ছেদের সংশোধন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মোটামুটি ঐকমত্য রয়েছে—সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার ১৫ দিন পূর্বে বা মেয়াদপূর্তির বাইরে ভেঙে গেলে তার ১৫ দিনের মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করতে হবে। এখানে কোনো ভিন্নমত নেই।’

বিএনপি তাদের প্রস্তাবে বাছাই কমিটিতে চারজন সদস্য—প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, স্পিকার এবং ডেপুটি স্পিকার (বিরোধী দলের) রাখার কথা বললেও আজকের আলোচনায় আরেকজন সদস্য যোগ করে মোট পাঁচজনের একটি বাছাই কমিটির প্রস্তাব তোলা হয়। এই পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট কমিটিতে সংসদের তৃতীয় বৃহত্তম দল থেকেও একজন প্রতিনিধি রাখা হবে।

বিএনপি বলেছে, এই কমিটি সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী দলগুলোর কাছ থেকে প্রার্থীদের নাম আহ্বান করবে এবং নাম যাচাই করে একজন প্রধান উপদেষ্টার নাম নির্ধারণের চেষ্টা করবে। যদি সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো না যায়, তাহলে বিরোধী দল থেকে পাঁচজন, সরকারি দল থেকে পাঁচজন এবং তৃতীয় বৃহত্তম দল থেকে দুজন করে মোট ১২ জনের তালিকা তৈরি হবে—যার মধ্য থেকে কমিটি একজনকে নির্বাচিত করার চেষ্টা করবে।

তবে যদি এখানেও একমত হওয়া না যায়, তখন কমিশনের একটি প্রস্তাব ছিল ‘র‍্যাঙ্ক চয়েস ভোটিং’ পদ্ধতির মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়ার। এ বিষয়ে বিএনপি একমত নয়।

সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আমরা চাই বাছাই কমিটি যদি সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে, তাহলে ভালো। না হলে আমাদের প্রস্তাব, সর্বশেষ বিকল্প হিসেবে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীর (১৩তম) পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে।’ তবে বিএনপি তাতে রাষ্ট্রপতির প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালনের বিধানটি বাতিলের সুপারিশ করেছে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.




© All rights reserved ©ekusheysylhet.com
Design BY DHAKA-HOST-BD
weeefff