এম, এ আহমদ আজাদ,নবীগঞ্জ
“প্রতি বছর আমরা সেরা হই, কিন্তু কাগজে স্বীকৃতি পাই না” নিজের নামে অন্যের গীত গাই” কথা গুলোর মধ্যে জড়িয়ে আছে আবেগ ও প্রাপ্তির ক্ষোভ। এক যুগ পেরিয়ে ১৩ তে পা দিয়েছে দক্ষিণ দৌলতপুর হযরত শাহজালাল লতিফিয়া আইডিয়াল মাদ্রাসা।
তারা প্রতি বছরই দাখিল পরীক্ষায় সেরা হন। শুধু নবীগঞ্জ নয় সিলেট বিভাগের সেরা মাদ্রাসা এটি। ফলাফলের দিক দিয়ে সিলেট বিভাগের মধ্যে তিনবার সেরা হয়েছেন। নবীগঞ্জ উপজেলার মধ্যে সূচনা লগ্ন থেকে সেরা হয়ে আসছে।
মাদ্রাসাটির সরকারী নিবন্ধন রেজিষ্ট্রেশন না থাকায় প্রতি বছর পার্শ্ববর্তী রুস্তমপুর নয়মৌজা সুন্নিয়া সিনিয়র দাখিল মাদ্রাসার নামে তাদেরকে পরীক্ষা দিতে হয়।তাই কগজ পত্রের স্বীকৃতি আসে ঐ মাদ্রাসার নামে।
নেপথ্যে কারিগড় হলো দক্ষিণ দৌলতপুর হযরত শাহজালাল লতিফিয়া আইডিয়াল মাদ্রাসা। তাই সরকারী নিবন্ধন চান শিগরিই। এসব তথ্য জানান উক্ত মাদ্রাসার সুপার মুফতী মুজিবুর রহমান ।
সদ্য প্রকাশিত এসএসসি সমমান দাখিল পরীক্ষার ফলাফলে মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে অংশ গ্রহণ করে বিরল রেকর্ড স্থাপন করেছে অনুমোদনহীন হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের দক্ষিণ দৌলতপুর হযরত শাহজালাল লতিফিয়া আইডিয়াল মাদ্রাসা। তারা এবার সিলেটের মধ্যে সেরা হয়েছে ।
নবীগঞ্জের অজোপাড়ায় অভ্যন্তরে দৃষ্টিনন্দন ক্যাম্পাসে ২০১২ সালের ১২ অক্টোবর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে অত্র প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমানে শিক্ষার্থীদেরে সংখ্যা ৫৫০। আলীয়া মাদ্রাসার পাশাপাশি হিফজ শাখাও চালু রয়েছে।১ম শ্রেণি থেকে ১০ম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি হিফজ শাখায় অধ্যয়নরত রয়েছে ৭০ জন শিক্ষার্থী। সুবিশাল ক্যাম্পাসে অবস্থিত ৪তলা বিশিষ্ট মাদ্রাসাতে অধ্যয়নরত প্রায় ৫ শতাধিক শিক্ষার্থী আবাসিক ব্যবস্থাপনায় থেকেই পাঠদান করছেন। ২৮ জন শিক্ষক শিক্ষাদান কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। প্রিন্সিপাল হিসেবে নিয়োজিত রয়েছেন মাওলানা মুফতি মুজিবুর রহমান।
এবার দাখিল ৬ষ্ঠ ব্যাচে ২৮ জন শিক্ষার্থী অংশ গ্রহণ করে ১১টি এ-প্লাসসহ (৩টি গোল্ডেন এ-প্লাস) শতভাগ সফলতা অর্জন্ করে। নিজেদেরে নামে অনুমোদন না থাকায় পাশ্ববর্তী রুস্তমপুর সুন্নীয়া দাখিল মাদ্রাসার নামে শিক্ষার্থীরা অংশ গ্রহণ করেন। নিজের অর্জন্ অন্যের নামে সাফল্যগাথা হওয়ায় শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের মনে তেমন আনন্দ থাকেনা। কারন কাগজে পত্রে রুস্তমপুর মাদ্রাসা হলেও বাস্তবে দক্ষিন দৌলতপুর মাদ্রাসার সাফল্য।
৬ কেদার ভূমি নিয়ে সু-বিশাল ক্যাম্পাসে মাদ্রাসাটির অবস্থান। কাগজ পত্রে সামান্য জটিলতায় এখনও অনুমোদন সম্ভব হয়নি।
প্রিন্সিপাল মাওলানা মুফতী মুজিবুর রহমান বলেন, “প্রতি বছর আমরা সেরা হই, কিন্তু কাগজে স্বীকৃতি পাই না” নিজের নামে অন্যের গীত গাই” আগামীতে আমাদের মাদ্রাসায় আলীম শ্রেণি পর্যন্ত (এইএচএস) সমমান পাঠদানের প্রস্তুতি রয়েছে। অচিরেই সমুদয় কাগজপত্র মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অনুকুলে জমা দেয়া হবে।ফলাফলের নিরিখে দ্রুতই অনুমোদনের আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। গর্বিত ফলাফল নিয়ে আনন্দিত শিক্ষার্থীরা। ওদিকে,উপজেলার ১৭টি অনুমোদিত মাদ্রাসার ফলাফল গতবারের চেয়ে নিম্নমানের হয়েছে। নতুন আঙ্গিকে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও পরীক্ষার ফলাফল মূল্যায়নে গভীর পর্যবেক্ষণকে দায়ি করেন শিক্ষক বৃন্দ।
উক্ত মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির কোষাধ্যক্ষ ও প্রতিষ্ঠাতা ভুমিদাতা সদস্য মোঃ কুদ্দুছ মিয়া বলেন, আমরা প্রথমে এলাকার মানুষের সহযোগিতায় আমার নিজস্ব ৪০ শতক জায়গায় মাদ্রাসাটি গড়ে তুলি। পরে ধীরে ধীরে এলাকার মানুষ এগিয়ে আসলে এখন অনেক বড় মাদ্রাসা আমরা পরিচালনা করছি কোন কিছুর অভাব ফিল করছি না। আল্লাহ তায়ালার দয়ায় মাদ্রাসাটি সরকারী নিবন্ধন হয়ে গেলে আরও উন্নত হবে। বিশেষ করে আমাদের আত্বীয় স্বজন ও এলাকার প্রবাসীরা বিপুল সারা দিয়েছেন এই জন্য এখন ১৮০ শতক জায়গায় বিশাল মাদ্রাসাটির চারতলা ভবনসহ ৫ শতাধিক আবাসিক ছাত্র রয়েছে। মাদ্রাসার অভিভাবক সদস্য কাজল মিয়া বলেন, আমরা স্বেচ্ছায় মাদ্রাসার সকল কাজ করি। আমরা সবাই মিলে একটি পরিবার মনে করে মাদ্রাসাটি এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। পরিচালনা কমিটির সদস্য হাজী বাছিত মিয়া বলেন, আমাদের মাদ্রাসাটি প্রতি বছরই উপজেলার সেরা হয়। এবার সিলেটের সেরা হয়েছে। আমাদের সকল শিক্ষক আন্তরিকতার সাথে পাঠদান করেন এই জন্যই এই ফলাফল আসে প্রতি বছর।
Leave a Reply