কুলাউড়া প্রতিনিধি
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় বিজয়া-পাঁচপীর চলাচলের রাস্তাটি টিলার মাটি ধসে এবং পাহাড়ি ঢলের কারণে সড়ক ভেঙে বেহাল অবস্থা দেখা দিয়েছে। বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট এই পরিস্থিতিতে যোগাযোগ ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষ করে, পাহাড়ি এলাকার রাস্তাগুলো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা স্বাভাবিক জীবনযাত্রা সমস্যা সৃষ্টি করছে। স্থানীয় লোকজন দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। রাস্তাটি রক্ষার্থে বিভিন্ন দপ্তরে বহুদিন ধরনা দিয়েছেন এলাকাবাসী। এতে কোন কাজ না হওয়াতে অনেকটা হতাশ হয়েছেন চার গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, কুলাউড়া উপজেলার জয়চন্ডী ইউনিয়নের বিজয়া বাজার থেকে পাঁচপীর জালাইসহ আশপাশের ৩-৪টি এলাকায় লক্ষাধিক মানুষের যাতায়াতের একমাত্র সড়কটি আজ বিলীনের পথে। এই রাস্তার ১০নম্বর এলাকায় টিলা কেটে মাটি ও পাথর খেকো একটি চক্র দির্ঘদিন থেকে বিক্রি করছে। যারফলে পাহাড়ী ঢলে টিলা ভেঙ্গে রাস্তায় এসে লেগেছে। যে কোন সময় রাস্তাটি ভেঙ্গে পুরোপুরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। এ নিয়ে মানুষের প্রতিবাদের মুখে গত বছর সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহ জহরুল হোসেন অভিযান চালিয়ে মামলা দায়ের করলে কিছুদিন বন্ধ থাকার পর গত কয়েক মাস থেকে আবারো সেই চক্রটি সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এছাড়াও টিলার মাটি ধ্বসে গিয়ে পাশের মসজিদটিও হুমকির মুখে রয়েছে।
পাঁচ পীর জালাই এলাকার বাসিন্দা দুলাল আহমেদ, আব্দুল করিম, খোকন মিয়া, মোস্তফা মিয়া, জয়নাল আবেদীন, সজীব মিয়া, চান মিয়া, তাজির মিয়া, গোগালী ছড়া এলাকার কালা মিয়া, জামাল উদ্দিন, আব্দুর রহিম আলো, রিয়াজুল ইসলাম, হান্নান মিয়া, বৈটাং জালাই এলাকার মনির মিয়া, আব্দুল হামিদ, রমজান আলী, উত্তম উরাং, রবি খাড়িযাসহ অনেকেই দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, এই রাস্তাটি ভেঙ্গে গেলে তাদের সহজে যাতায়াতের আর কোন পথ খোলা থাকবে না। মেম্বার, চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন দপ্তরে গেলেও রাস্তাটি মেরামত বা রক্ষার্থে কেউই এগিয়ে আসছেন না। তারা অভিযোগ করে আরও বলেন, মাটি ও পাথর খেকো চক্রটিকে বন্ধ করতে না পারলে এই রাস্তাটি রক্ষা করা যাবে না। এই রাস্তাটি রক্ষার্থে প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন তারা।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো: মনু মিয়া জানান, বিজয়া-পাঁচপীর জালাই সড়কের ১০ নম্বর স্থানের রাস্তাটি আসলেই ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। যে কোন সময় ভেঙ্গে গিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে। একটি বরাদ্দের জন্য আমি বিষয়টি চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি।
এ ব্যাপারে জয়চন্ডী ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মিলন বৈদ্য জানান, খবর পেয়ে তিনি রাস্তাটি পরিদর্শন করেছেন। আসলেই জায়গাটি ঝুকিপূর্ণ। উপজেলায় বরাদ্দের তালিকায় গুরুত্বসহকারে এটি দেওয়া হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই সংস্কার কাজ শুরু করা হবে। তাছাড়া মাটি ও পাথর খেকো চক্রের বিষয়টিও তিনি ইউএনও মহোদয়কে জানিয়েছেন।
কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: মহিউদ্দিন জানান, স্থানীয় চেয়াম্যানের মাধ্যমে বিষয়টি তিনি জেনেছেন। বরাদ্দ আসলেই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সেটি মেরামতের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি মাটি ও পাথর খেকো চক্রের খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
Leave a Reply