কিংবদন্তি মেসির জন্মদিন আজ

কিংবদন্তি মেসির জন্মদিন আজ

লিওনেল মেসি। ছবি- সংগৃহীত

একুশে স্পোর্টস

ফুটবল রূপকথার মহানায়ক লিওনেল মেসির আজ ৩৮তম জন্মদিন। তার এই দীর্ঘ এবং বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ার অসংখ্য স্মৃতির জন্ম দিয়েছে, যা এখন কেবল গল্প নয়, কিংবদন্তিতে পরিণত হয়েছে।

রোজারিওর এক ছোট্ট বালক থেকে বিশ্বসেরা ফুটবলার হয়ে ওঠার এই যাত্রা অনুপ্রেরণা, সংগ্রাম এবং অবিস্মরণীয় অর্জনে ভরা।

মেসির গল্পটা শুরু হয়েছিল খুব সাধারণ কিছু থেকে একটি স্যুটকেস, একটি ন্যাপকিন পেপার অথবা একটি বাইসাইকেল।

হার্নান ক্যাসিয়ারি তার ‘স্যুটকেস’ গল্পে বলেছিলেন, দুই ধরনের অভিবাসী থাকেন যারা স্পেনে গিয়ে স্যুটকেস আলমারিতে তুলে রাখেন এবং যারা বাইরে রাখেন।

মেসি দ্বিতীয় দলের, যিনি তার শিকড় কখনো ভোলেননি, গাওচো উচ্চারণ ধরে রেখেছেন। একসময় তার দেশপ্রেম নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল, ব্যর্থতায় কোণঠাসা হয়ে তিনি বিদায়ও বলেছিলেন।

কিন্তু কাঁটা বিছানো সেই পথই তাকে অমরত্ব এনে দিয়েছে। ন্যাপকিনকে চুক্তিপত্র বানিয়ে শুরু হওয়া ক্যারিয়ার, আর টয়লেটের জানালা ভেঙে ফাইনাল জিতে বাইসাইকেল উপহার পাওয়ার গল্প এসবই মেসির মহাকাব্যিক যাত্রার অবিচ্ছেদ্য অংশ।
অপূর্ণতা থেকে অমরত্বের পথে

মেসিকে ইউরোপ, আফ্রিকা, এমনকি দক্ষিণ আমেরিকাও ফিরিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু এই অপ্রাপ্তি ও ব্যর্থতার উপাখ্যানগুলোই তাকে আরও শক্তিশালী করেছে, তার স্বপ্নকে এক মজবুত ভিত্তির ওপর দাঁড় করিয়েছে।

অবশেষে এশিয়াতে এসে তার সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। কাতার বিশ্বকাপে বহু কাঙ্ক্ষিত ট্রফি জয়ের মাধ্যমে তিনি ফুটবলীয় স্বর্গ পেয়েছেন, যেখানে তার আঙুলের ইশারায় পুরো বিশ্ব ট্যাঙ্গোর তালে নেচে উঠেছে।
অমরত্বের পর কী? উপভোগ ও বয়ে চলা

অমরত্বের পর কী? মেসি নিজেই হয়তো বলেছেন, ফুটবলের কাছে আমার আর কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই। আমি সব পেয়ে গেছি। রোজারিওর পারানা নদীতে জাহাজগুলোর মন্থর গতিতে বয়ে যাওয়া যেমন মেসিকে মুগ্ধ করত, তেমনই তিনি এখন নির্লিপ্তভাবে বয়ে চলেছেন।

এই আকাঙ্ক্ষাহীনতাই তার খেলাকে এক অলস সৌন্দর্যে পরিণত করেছে, যেখানে তিনি নির্ভার ও আয়েশি।

২০২২ সালের ডিসেম্বরেই মেসি চাইলেই অমরত্বের মধু পান করে ফুটবল মঞ্চ ছেড়ে বিদায় নিতে পারতেন। কিন্তু বয়ে যাওয়ার স্বাদ অনুভব করতেই তিনি আরও কিছুকাল থেকে গেলেন, আরও কিছু অমর দৃশ্যের জন্ম দিলেন।

তবে অতিরিক্ত সময়েরও যে শেষ আছে, তার ৩৮তম জন্মদিন যেন সেই কথাই মনে করিয়ে দিচ্ছে।

মেসি নিজেই তার বিদায়ের বিউগল হাতে তুলে নিয়েছেন। ২০২৬ বিশ্বকাপে সেই বিউগল বাজিয়ে তিনি সব চাওয়া-পাওয়ার ইতি টানবেন। সেই মঞ্চে সফল হোন বা ব্যর্থ, তিনি মাথা উঁচু করে মহানায়কের বেশে নাট্যমঞ্চ থেকে বিদায়ের পর্দা নামিয়ে দেবেন।

যদিও আমাদের চাওয়া অসীম—আমরা চাই মেসি অনন্তকাল খেলে যাক, আমাদের ক্লিশে জীবনটা তার খেলায় হীরন্ময় হয়ে উঠুক। কিন্তু জীবনানন্দের ‘সব পাখি ঘরে আসে—সব নদী—ফুরায় এ-জীবনের সব লেনদেন’ লাইনের মতোই সবকিছুরই শেষ আছে।

কলম্বিয়ান ম্যাগাজিন ‘সোহো’ একবার ডিয়েগো ম্যারাডোনার মৃত্যুর পর কেমন প্রতিক্রিয়া হতে পারে তা নিয়ে লিখেছিল।

এখন মেসিবিহীন ফুটবল কেমন হবে, তা অনুমান করে কেউ চাইলে তেমন আয়োজন করতে পারে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.




© All rights reserved ©ekusheysylhet.com
Design BY DHAKA-HOST-BD
weeefff