দেশে ফিরছেন তারেক রহমান, প্রস্তুত গুলশানের বাড়ি

দেশে ফিরছেন তারেক রহমান, প্রস্তুত গুলশানের বাড়ি

একুশে সিলেট ডেস্ক
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফিরতে বাধা নেই, সম্প্রতি এমন তথ্য জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তারেক রহমানের একান্ত বৈঠকও হয়েছে। এর পর থেকে বিএনপি নেতাকর্মীসহ সবার আগ্রহ কবে দেশে ফিরছেন তারেক রহমান।

বিএনপির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, জাতীয় নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা হলে দেশে ফিরবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।

দেশে ফিরে মা খালেদা জিয়ার গুলশানের নিজ বাড়িতে থাকবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সংস্কার করে বাড়িটি বসবাসের উপযোগী করা হয়েছে। গুলশান-২ নম্বরের এভিনিউ রোডের ১৯৬ নম্বর এই বাড়িটি খালেদা জিয়ার ভাড়া বাসভবন ফিরোজার কাছেই।

খালেদা জিয়ার পারিবারিক সূত্র জানায়, দেড় বিঘা জমির ওপর এই ডুপ্লেক্স বাড়িটির নামজারির কাগজ কয়েক দিন আগে অন্তর্বর্তী সরকার তাঁর হাতে তুলে দেন।

বাড়িটি আগে ভাড়ায় ব্যবহার করত মাল্টিন্যাশনাল কম্পানি ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা বলেন, ছয় মাস আগে বাড়িটি এই কম্পানি ছেড়ে দিয়েছে। এরপর এটি তারেক রহমানের থাকার উপযোগী করে প্রয়োজনীয় সংস্কার করা হয়েছে।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, তারেক রহমান দেশে ফিরলে অবশ্যই তাঁর থাকার মতো উপযুক্ত বাড়িতে থাকবেন। দেশে ফেরার তারিখ ঘনিয়ে এলে তাঁর বাসস্থানের বিষয়ে দল ও পরিবারের উদ্যোগ দৃশ্যমান হবে।’

১৯৮১ সালের ৩১ মে রাষ্ট্রপতি থাকা অবস্থায় জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রী খালেদা জিয়াকে রাজধানীর গুলশান এলাকায় দেড় বিঘা জমির ওপর অবস্থিত এই বাড়ি বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর বাইরে ঢাকা সেনানিবাসের ভেতরও আরেকটি বাড়ি খালেদা জিয়াকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। তবে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার সেনানিবাসের বাড়িটির বরাদ্দ অন্যায়ভাবে বাতিল করে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বাড়ির ভেতরটাও অত্যন্ত নান্দনিকভাবে সাজানো হয়েছে। কয়েক মাস ধরে এই সাজানোর কাজ চলেছে। তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানও লন্ডনে যাওয়ার আগে বাড়িটি দেখে গেছেন।

দলের বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা নিশ্চিত করেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান অফিসের কাছে একটি নতুন রাজনৈতিক অফিস তাঁর জন্য ভাড়া করা হচ্ছে, যা তারেক রহমান দলের পরবর্তী নির্বাচন সম্পর্কিত কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য ব্যবহার করবেন। ওয়ান-ইলেভেন সরকারের সময় ২০০৭ সালের ৭ মার্চ তারেক রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরের বছর ২০০৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর জামিনে মুক্তি পেয়ে ১১ সেপ্টেম্বর চিকিৎসার জন্য সপরিবারে লন্ডন যান তিনি। তখন থেকেই তিনি লন্ডনে অবস্থান করছেন। লন্ডনে থাকাকালে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দুদকের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে যাওয়ার পর দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন ‘সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান’ তারেক রহমান। এরপর সেখান থেকেই দল পরিচালনা করছেন তিনি।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে তারেক রহমানের অনুপস্থিতিতে পাঁচ মামলায় তাঁকে সাজা দেওয়া হয়। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আইনি প্রক্রিয়ায় আদালতের মাধ্যমে একে একে সাজাপ্রাপ্ত সব মামলায় খালাস পান তিনি। একই প্রক্রিয়ায় অন্য সব মামলা থেকেও মুক্ত হন। বর্তমানে তাঁর বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা নেই।

তারেক রহমানের দেশে ফিরতে কোনো অসুবিধা নেই বলে কয়েক দিন আগে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। এদিকে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও জানিয়েছেন যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শিগগিরই দেশে ফিরবেন।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.




© All rights reserved ©ekusheysylhet.com
Design BY DHAKA-HOST-BD
weeefff