সর্বশেষ :
জাফলং কান্ড বহিস্কৃত যুবদল নেতা জাহিদ কে প্রধান আসামী করে ১৫৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা বিভক্তি কমাতে সিলেট বিএনপি নেতাদের বৈঠক উপদেষ্টার গাড়ি আটকে বিক্ষোভ : যুবদল নেতা জাহিদ বহিস্কার, ছাত্রদল নেতা আজির শোকজ অস্ত্রসহ ভুয়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পরিচয়ে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে জকিগঞ্জের রাজন গ্রেপ্তার এবার সিলেটে দুজনের শরীরে করোনা শনাক্ত, একজন আইসিইউতে তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৭৪,৫৭০ কোটি টাকা জাফলংয়ে দুই উপদেষ্টাকে আটকে শ্রমিক বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেওয়া যুবদল নেতা বহিস্কার উন্নয়ন বঞ্চিত কুলাউড়াবাসীর জন্য কাজ করে যাবো : মাওলানা রশীদ জেলা প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে আবারোও বসলো জনতার বাজার হাট শান্তিগঞ্জে জমি নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে যুবদল নেতা নিহত, আটক ১
জেলা প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে আবারোও বসলো জনতার বাজার হাট

জেলা প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে আবারোও বসলো জনতার বাজার হাট

এম,এ আহমদ আজাদ,নবীগঞ্জ
বহুল আলোচিত জনতার বাজার আবারো জমে উঠেছে। বাজারটি নিয়ে নানা আলোচনা সমালোচনা থাকলেও সিলেটের বৃহত্তম গরুর হাট থেমে নেই। বাজার কমিটি বলছে আদালতের নির্দেশনা নিয়ে তারা বাজার পরিচালনা করছেন। গতকাল সরজমিনে জনতার বাজার ঘুরে দেখা পূর্বের ন্যায় বাজার জমে উঠেছে। বাজারটি নিয়ে প্রশাসনের মামলা থাকলেও বাজার পরিচালনা কোন সমস্যা হয়নি।

মামলার ভয় সব কিছুই যেন তুচ্ছ করে নবীগঞ্জ উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়নের ‘জনতার বাজার’ পশুরহাট বসিয়েছে বাজার পরিচালনা কমিটি।

জেলা প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা সত্বেও শনিবার বসলো ২১তম পশুর হাট। এতে প্রায় ৪/৫ হাজার গরু বাজারে উঠেছে। এর মধ্যে কয়েক হাজার গরু বেচাকেনা হয়েছে। কতটি গরু বিক্রি হয়েছে এর কোন হিসাব বাজার কমিটির কাছে পাওয়া যায়নি। জনতার বাজার পরিচালনা নিয়ে মামলা হলেও বাজার পরিচালনা কমিটির অধিকাংশ সদস্যকে আসামি করা হয়নি। আসামি করা হয়েছে এলাকার অনেক নিরহ মানুষ কে। ফলে সেই সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছেন বাজার পরিচালনা কমিটির সদস্যরা। বাজার পরিচালনা কমিটির যারা আসামি নয় তারাই পরিচালনা করছেন। রাজনৈতিক চক্রের কারনে অনেক আসামি বাদ পড়েছেন যারা নেতৃত্বে রয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাজার পরিচালনা কমিটির এক নেতা বলেন, জনতার বাজার পরিচালনা কমিটির মধ্যে , বিএনপি, জামাত, আওয়ামীলীগ, জাতীয় পাটি ও জাসদের লোকজন থাকলেও ৫৭ সদস্যের কমিটি মাত্র ১০জন সদস্যকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে শুধু আওয়ামী ঘরানার লোকজন বেশির ভাগ আসামি করা হয়েছে। এখন যারা আসামি নয় তারাই বাজার পরিচালনা নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
২০২৫ সালের ৩১ মে জনতার বাজার গরুর হাট বসানো নিয়ে হাটে দায়িত্বপালনরত এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সন্দ্বীপ তালুকদারের সাথে বাজার কমিটির লোকজনে তর্কবির্তক ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয় । এর সরকারী কাজে দায়িত্ব পালনে বাঁধা প্রদানের অভিযোগ এনে বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি আওয়ামীলীগ নেতা আবুল খায়ের গোলাপকে প্রধান আসামি করে ৩৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। এমামলায় এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি।

সিলেটের সবচেয়ে বড় পশুর হাট পরিচালনা করে বিপুল অর্থ আদায় করা হচ্ছে। সরকারী ভাবে কোন রাজস্ব আদায় করা না হলেও বাজার কমিটি প্রত্যয়ন নামের এক ধরনের রশিদের মাধ্যমে প্রতিটি পশু বিক্রেতার কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত।

অভিযোগ রয়েছে, প্রতি হাটে ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থ তোলা হচ্ছে। গত চার মাসে অন্তত ২০টির বেশি হাট বসেছে, যার মাধ্যমে কোটি টাকার বেশি আদায় করা হয়েছে।জনতার বাজার দায়িত্বশীল সুত্র বলছে, জনতার বাজার নিয়ে তিনতাসি খেলা হচ্ছে। প্রশাসন, রাজনৈতিক চক্র ও সামাজিক নেতৃত্ব বলয়ে একটি জটিলতা তৈরী করে জনতার বাজারের রাজস্ব আদায়ে ভেড়াজাল তৈরী করেছেন। বর্তমানে এক থেকে দেড় লাখ টাকার বেশি আদায় হয় না।
এর আগে, ২০২৫ সালের ৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মো. ফরিদুর রহমান হাটটিকে অবৈধ ঘোষণা করে ৩১ জানুয়ারির পর হাট বন্ধের নির্দেশ দেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়ে মাইকিং ও নোটিশও টাঙানো হয়। নির্দেশনায় উল্লেখ ছিল, মহাসড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি বা অনুমোদনহীন হাট পরিচালনা করলে হাট-বাজার আইন ২০২৩ এবং মহাসড়ক আইন ২০২১ অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ হবে। তবে এসব নির্দেশনার বিরুদ্ধে জনতার বাজার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী তোফায়েল আহমদ হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। তখন জেলা প্রশাসনের আদেশ হাইকোর্ট স্থগিত করে রুল জারি করে। এর পর থেকে উক্ত বাজারটি থেকে সরকারীভাবে কোন রাজস্ব আদায় করা হচ্ছে না। ফলে বাজার পরিচালনা কমিটি প্রত্যয়ন পত্রের মাধ্যমে রাজস্ব আদায় করছে।

অভিযোগ রয়েছে- বাজার কমিটির সবাই টাকা ভাগ বাটোরা করে নিচ্ছেন। ২ হাজার থেকে ৫ হাজার, ১০ টাকা করে ভাগ বন্টন করে নিচ্ছেন এসব নেতারা। এসব ভাগ বন্টনে কিছু সাংবাদিক নেতার নামও এসেছে। তবে এর ডকুমেন্টারি কোন প্রমান পাওয়া যায়নি। বাজার কমিটির খাতায় এসব হিসাব থাকলেও কেউ টাকা নেওয়ার কথা সরাসরি স্বীকার করেননি।

স্থানীয় সচেতন মহল বলছেন, হাটটি নিয়ে প্রশাসন ও বাজার কমিটির মধ্যে জটিলতা তৈরী হওয়ায় এর কোনো প্রত্যয়ন বা অর্থ আদায়ের আইনগত ভিত্তি নেই।

জনতার বাজার পরিচলানা কমিটির সাধারণ সম্পাদক, কাজী তোফায়েল আহমদ বলেন, আমরা জোর করে কোন বাজার বসাইনি। ব্যবসায়ীরা গরু নিয়ে আসছে, জনতার বাজার, এলাকার জনতাই বসিয়েছে। বর্তমানে আমাদের কমিটি বাজার পরিচালনা করছে না। এলাকার যুব সমাজ আইন শৃংখলার দায়িত্বে কিছু স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করেছে। তারা হয়তো প্রত্যয়নের মাধ্যমে সামান্য কিছু টাকা আদায় করছে।

এবিষয়ে নবীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ দুলাল মিয়া বলেন, ওসি স্যার অসুস্থ্য আছেন, তিনি দায়িত্ব পালন করছেন, এখন পর্যন্ত জনতার বাজারের মামলায় কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। আমি শুনেছি কিছু আসামি আদালতের মাধ্যমে জামিন নিয়েছে।

নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন বলেন, “আমাদের পক্ষ থেকে কোনো খাস আদায় করা হচ্ছে না। কেউ যদি রশিদের মাধ্যমে টাকা আদায় করে থাকে, সেটা অবৈধ। এদিকে, স্থানীয়দের পক্ষ থেকে দাবি উঠেছে, মামলার আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার করে হাটটি স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে হবে।

এব্যাপারে হবিগঞ্জ ডেলা প্রশাসক ড. মোঃ ফরিদুর রহমান বলেন, জনতার বাজার পশুর হাটে আমাদের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.




© All rights reserved ©ekusheysylhet.com
Design BY DHAKA-HOST-BD
weeefff