প্রেমিকা নিয়ে পুত্রের বিলাসী ভ্রমণ, বিতর্কের জেরে মঙ্গোলিয়ার প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ

প্রেমিকা নিয়ে পুত্রের বিলাসী ভ্রমণ, বিতর্কের জেরে মঙ্গোলিয়ার প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ

আন্তজার্তিক ডেস্ক
পুত্রের বিলাসবহুল জীবনযাত্রা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র বিতর্ক এবং দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত শুরুর পর মঙ্গোলিয়ার প্রধানমন্ত্রী লুভসাননামস্রাইন ওইউন-এরদেন পদত্যাগ করেছেন।

সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কিছু ছবিতে দেখা গেছে—ওইউন-এরদেনের পুত্র এবং তাঁর প্রেমিকা বাগদান উপলক্ষে ছুটিতে গিয়ে বিলাসবহুল জীবনযাপন করছেন। ছবিতে প্রেমিকার কাঁধে ঝোলানো ডিওরের কালো একটি ব্যাগ ও একাধিক শপিং ব্যাগ দেখা যায়। প্রেমিকা তাঁর জন্মদিন উপলক্ষে সেই ছবির ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘হ্যাপি বার্থডে টু মি।’ আরও একটি ছবিতে প্রেমিক যুগলকে সুইমিং পুলে চুম্বনরত অবস্থায় দেখা গেছে।

এই ছবিগুলো সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর দেশজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন—প্রধানমন্ত্রীর পরিবার এত বিলাসিতা চালানোর অর্থ কোথায় পেল? স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, দেশটির দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ইতিমধ্যেই ওইউন-এরদেন পরিবারের আর্থিক লেনদেন নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে।

আজ মঙ্গলবার বিবিসি জানিয়েছে, সংসদে সাংসদদের গোপন ব্যালটে হওয়া একটি আস্থা ভোটে ওইউন-এরদেনের পদত্যাগ অবধারিত হয়ে পড়ে। আস্থা ভোটে অংশ নিয়েছিলেন ৮৮ জন সাংসদ। এর মধ্যে ৪৪ জন ওইউন-এরদেনকে সমর্থন করেন এবং ৩৮ জন বিরোধিতা করেন। তবে ১২৬ সদস্যের পার্লামেন্টে আস্থা টিকিয়ে রাখতে হলে ওইউন-এরদেনের কমপক্ষে ৬৪ জনের সমর্থন প্রয়োজন ছিল।

ভোটের পর ওইউন-এরদেন বলেন, ‘মহামারি, যুদ্ধ এবং আন্তর্জাতিক শুল্ক সংকটের মতো কঠিন সময়ে জাতি ও জনগণের সেবা করতে পেরে আমি গর্বিত।’

গত দুই সপ্তাহ ধরে শত শত মানুষ, বিশেষ করে তরুণেরা রাস্তায় নেমে ওইউন-এরদেনের পদত্যাগের দাবি তোলে। তবে নিজের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করে ওইউন-এরদেন দাবি করেছেন, এটি তাঁর বিরুদ্ধে একটি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র।

মঙ্গোলিয়ার প্রধানমন্ত্রী লুভসাননামস্রাইন ওইউন-এরদেন পদত্যাগ দাবিতে রাজধানী উলানবাটরের সুখবাটার স্কয়ারে সমবেত মানুষ। ছবি: এএফপি
মঙ্গোলিয়ার প্রধানমন্ত্রী লুভসাননামস্রাইন ওইউন-এরদেন পদত্যাগ দাবিতে রাজধানী উলানবাটরের সুখবাটার স্কয়ারে সমবেত মানুষ। ছবি: এএফপি

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের মতে, ওইউন-এরদেনের শাসনামলে মঙ্গোলিয়ায় দুর্নীতি আরও বেড়েছে। ২০২৪ সালে সরকারি স্বচ্ছতায় দেশটি ১৮০টি দেশের মধ্যে ১১৪ তম স্থানে ছিল।

এক সময়ের সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র মঙ্গোলিয়া, রাশিয়া ও চীনের মাঝে অবস্থিত। ১৯৯০-এর দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর দেশটি গণতন্ত্রে রূপান্তর শুরু করে। তবে দুর্নীতি সেখানে একটি দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা।

গত বছর মার্কিন কর্তৃপক্ষ অভিযোগ আনে, ২০১২-২০১৫ পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী সুখবাটার বাতবোল্ড চুরি করা খনির অর্থে নিউ ইয়র্কে দুটি অ্যাপার্টমেন্ট কিনেছিলেন। যদিও বাতবোল্ড এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মঙ্গোলিয়া পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ার চেষ্টা করছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোকে তারা ‘তৃতীয় প্রতিবেশী’ হিসেবে বিবেচনা করে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.




© All rights reserved ©ekusheysylhet.com
Design BY DHAKA-HOST-BD
weeefff