জামালগঞ্জ প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজলায় ঐতিহ্যবাহী চড়ক পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জানা যায়, এবার ব্যাপক আয়োজনে চড়ক পূজা অনুষ্ঠিত হয়।
উপজেলার ফেনারবাঁক ইউনিয়নের ছয়হারা গ্রামের পাগনার হাওরে ঐতিহ্যবাহী এই চরক পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এই পূজা হয়।
জানা যায়, যুগযুগ ধরে ফেনারবাঁক ইউনিয়নের নয়মৌজার ছয়হারা গ্রামের পাগনার হাওরে শিব চতুর্দশীতে চরক পূজা হয়। মাঠের আশেপাশে প্রায় শতাধিক দোকানিরা গ্রামীণ মেলা নিয়ে বসেন। চরক পূজার আয়োজন করেন নয়মৌজার বিভিন্ন গ্রামের সনাতনধর্মের অনুসারীরা। চরক পূজাকে ঘিরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে বিরাজ করে উৎসবের আমেজ। ছয়হারা গ্রামের পাশে ঐতিহ্যবাহী চড়ক পূজায় এই দৃশ্য দেখতে বিভিন্ন উপজেলার হাজারো ভক্তদের পদচারণায় মাঠটি কানায় কানায় ভরে উঠে। নেত্রকোনার খালিয়াজুড়ি উপজেলার মহিমপুর গ্রাম থেকে আসা সুবল দাস ও দিরাই উপজেলার রফিনগর গ্রাম থেকে আসা নিতাই দাস জানান, আমাদের এলাকায় চড়ক পূজা হয় না। তাই আমরা পূজা দেখতে প্রতি বছর এই এলাকায় ছুটে আসি। সন্যাসীদের ভাষায় এ ধরনের শারীরিক কষ্ট জীবিত মানুষ ভোগ করে আধ্যাত্মিক শক্তির বলে। ফেনারবাঁক ইউপি চেয়ারম্যান কাজল চন্দ্র তালুকদার বলেন, হাওর এলাকার মানুষরা একমাত্র ফসল বোরো ধান যাতে সুষ্ঠুভাবে ঘরে তুলতে পারে সেজন্য এই পূজার আয়োজন করা হয়। এছাড়াও বিভিন্ন মানুষের মনোবাসনা পূর্ণসহ অনেকের আশা আকাংখা পূর্ণ করতে দূর দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন এই চড়ক পূজায়।
এই ব্যাপারে চড়ক পূজার প্রধান সন্যাসী ছয়হারা গ্রামের বিভাষ চন্দ্র তালুকদারসহ জানান, ছয়হারা গ্রামের চড়ক পূজায় ১৫ দিন আগে থেকে একশত সন্ন্যাসী এক কাপড়ে পরিবার পরিজন থেকে আলাদা থাকা শুরু করেন। নিদিষ্ট একটি নিয়মের ভেতরে চলাফেরাসহ আহার নিদ্রা করে থাকেন। ছয়হারা গ্রামের প্রবীণ মুরুব্বি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু তালুকদার ও বৃন্দাবন তালুকদার জানান,, এই পুজা প্রায় দেড়শত বছর আগে থেকে চলে আসছে। এই পূজা হিন্দু—মুসলিম দুই ধর্মের হাজার হাজার মানুষের মিলন মেলা। চড়ক পূজায় উপস্থিত ছিলেন, জামালগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল আলম, তদন্ত (ওসি) আরিফ উল্লাহ, সুনামগঞ্জ ১ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী কামরুল ইসলাম, জামালগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আজাদ হোসেন বাবলু, তৌফিক চৌধুরী, জুলফিকার চৌধুরী রানা, জামালগঞ্জ প্রেসক্লাব সাবেক সভাপতি মো. ওয়ালী উল্লাহ সরকার, পূজা উদযাপন কমিটির বীর মুক্তিযোদ্ধা শ্রীকান্ত তালুকদার, সুধাংশু তালুকদার, অখিল চন্দ্র তালুকদার, দোলন তালুকদার, দূ্র্ঘা চরণ তালুকদার।
Leave a Reply