একুশে সিলেট ডেস্ক
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, নির্বাচন হবে। নির্বাচন ঠেকানোর মতো সাহস কারো নেই। তবে এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন হতে হবে। এটা এখন আমরা দাবি করছি। কিন্তু আমরা প্রমাণ করে ছাড়বো ডিসেম্বরেই নির্বাচন দিতে হবে।
বুধবার (৯ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবে নাগরিক অধিকার বাস্তবায়ন পরিষদের উদ্যোগে সংস্কার, জাতীয় নির্বাচন ও আগামীর বাংলাদেশ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ মুজিবুর রহমানকে দ্বিতীয়বার হত্যা করেছে আওয়ামী লীগ মন্তব্য করে দুদু বলেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে শেখ হাসিনা ওবায়দুল কাদের বলতো সাহস থাকলে বাংলাদেশে আসেন। কিন্তু আপনারাতো পালিয়ে গেলেন। এভাবে কেউ পালায়? আপনাদের সাহস থাকলে দেশে আসেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাদের আমরা সমর্থন করি। আপনাদের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা আছে। এই শ্রদ্ধা ভালোবাসা নষ্ট করবেন না। বিএনপিকে রাস্তায় নামতে বাধ্য করবেন না। বিএনপি রাস্তায় নামার আগেই নির্বাচন দিন। বিএনপি রাস্তায় নামলে কী হবে শেখ হাসিনার দিকে তাকান। বিএনপি যে কয়বার ক্ষমতায় আসছে জনগণের সমর্থন ও ভালোবাসা নিয়ে। কারণ আমাদের শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান আছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে কীভাবে এগিয়ে নিতে হয়, কীভাবে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়, তা দেখিয়েছেন স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। তিনি রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পরে প্রমাণ করেছিলেন যে একজন মানুষ রাষ্ট্রের জন্য কত নিবেদিত হতে পারে। কতটা বিশ্বাসযোগ্য মানুষ হিসেবে নিজেকে দাঁড় করাতে পারে তিনি তা প্রমাণ করেছে। তার হাত দিয়ে যে দলটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বিএনপি। এই দলটি আওয়ামী লীগের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছিল। আওয়ামী লীগ দাবি করতো তারা কোনো গণতন্ত্রকামী কিন্তু এটা তো সত্য নয় তার প্রমাণ করেছে আওয়ামী লীগের একসময়ের সভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান ক্ষমতায় এসে। যে তিনি গণতন্ত্রের স্বপক্ষের মানুষ না। আমি তাকে এই প্রতিপন্ন করার জন্য সমালোচনা করছি না। তার সাড়ে তিন বছরের ক্ষমতা ফ্যাসিজমের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। বিরোধী দলের চল্লিশ হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে গুম খুন হত্যা করেছে। দেশে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করেছে। অথচ তার ছেলে রাজকীয় মুকুট পরিয়েছে। চারটি সংবাদপত্র বাদে সব সংবাদপত্র বন্ধ করে দিয়েছিলেন। বিরোধী দলগুলোকে কোণঠাসা করে রেখেছিলেন।
তিনি আরও বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে কেউ মানতে চায়নি কিন্তু তিনি নব্বইয়ের গণ অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দিয়েছেন। স্বৈরাচারকে পতন করেছে। ৯১ সালে বেগম খালেদা জিয়া প্রমাণ করেছেন জনগণ তার সাথে আছে। কলকাতার বিমানবন্দরে শেখ হাসিনা বলেছিল খুব বেশি হলে বিএনপি বেগম খালেদা জিয়া দশটি সিট পাবে। কিন্তু সেটা মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্য তা প্রমাণ করেছিলেন বেগম খালেদা জিয়া ৯১ এ সরকার গঠন করে।
তিনি বলেন, বর্তমানে অনেক রাজনৈতিক দল মনে করছে নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপিকে হারিয়ে তারা সরকার গঠন করবে। তাহলে নির্বাচনের বিরোধিতা করেন কেন? নির্বাচন দেন। আপনারা বিজয়ী হলে সরকার গঠন করবেন। আমরা সাধুবাদ জানাবো।
তিনি প্রফেসর ইউনূসকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনি তো রাজনীতির জন্য একদিনও জেল খাটেননি। অথচ বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী বছরের পর বছর জেল খেটেছে। তারা খুন, গুম ও নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়েছে। বেগম জিয়া বিনা অপরাধে বছরের পর বছর জেল খেটেছেন, সন্তান হারিয়েছেন। দেশের জন্য তাদের ত্যাগ এবং অবদান সীমাহীন। আপনি তাদের অন্ধকারে রেখে কিছুই করতে পারবেন না।
দুদু বলেন, নির্বাচনের জন্য সংস্কার প্রয়োজন। সেই নির্বাচনই যদি না হয় তাহলে সংস্কার কী কাজে লাগবে। বর্তমান সরকার যদি ভুল না করে, দেশকে বিপথে চালিত না করে তাহলে আগামীর বাংলাদেশ হবে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ।
নাগরিক অধিকার বাস্তবায়ন পরিষদের সভাপতি এস এম মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন নিউ নেশনের সাবেক সম্পাদক মোস্তফা কামাল মজুমদার, জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের সভাপতি হুমায়ুন কবির বেপারী, মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের সভাপতি সৈয়দ মোজাম্মেল হোসেন শাহীন, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন, চাঁদপুর জেলা বিএনপির নেতা মিজানুর রহমান পাটোয়ারী, মো. শরীফুল ইসলাম, মহিদুল ইসলাম মামুন, মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের সাধারণ সম্পাদক মো. নবী হোসেন, মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের ঢাকা মহানগর সভাপতি শোয়েব কোরাইশী, সাবেক ছাত্রনেতা রমিজউদ্দীন রুমি।
Leave a Reply