শাহিন আলম সাহেদ, গোলাপগঞ্জ
গোলাপগঞ্জের আনারস বাগানগুলো হয়ে উঠেছে পর্যটন স্পট। এ যেন পর্যটন শিল্পের এক অপার সম্ভবাভনা হাতছানি দিচ্ছে। আর পর্যটকদের সংখ্যা দিনদিন বৃদ্ধি পাওয়ায় পতিত টিলায় গড়ে উঠছে নতুন নতুন বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ বাগান। সরেজমিনে গিয়ে দেখাযায় উপজেলার চাঁন মিয়া আনারস বাগান ও আলভিনা গার্ডেন যেন অপার সম্ভবাভনার পর্যটন স্পট। জেলা-বিভাগ ছাড়িয়ে এখন সম্ভাবনাময় এই পর্যটন স্পট দেখতে প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছেন দেশের বিভিন্ন জায়গার মানুষ। দুটি বাগানেই রয়েছে পর্যটকদের সুবিধার জন্য গাড়ি রাখার ব্যবস্থা,নামাজের স্থান, বিভিন্ন ধরনের দোকানসহ সব ধরনের সুবিধা। বিশেষ করে ঈদে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য সিলেট জেলার পর্যটন প্রিয় মানুষের প্রথম পচন্দের তালিকায় রয়েছে এ বাগানগুলো । প্রবাসী অধ্যুষিত গোলাপগঞ্জ উপজেলার প্রায় ৫ বছর পূর্বে ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নের দত্তরাইল গ্রামে উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে প্রায় ৫০ একর জায়গার উপর গড়ে উঠে চাঁন মিয়া আনারস বাগান। মরহুম আব্দুল মতিন চাঁন মিয়া চেয়ারম্যানের নামে ওই বাগানটি গড়ে তুলেন উনার যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য প্রবাসী ছেলেরা। প্রথমে বানিজ্যিক উদ্দেশ্যে বাগানটি কার্যক্রম শুরু হলেও এক সময় বাগানটি দেখতে পর্যটন প্রিয় লোকদের ভিড় বাড়তেই থাকে। আর এখন বাগানটি বিভিন্ন প্রজাতির ফলের পাশাপাশি হয়ে উঠেছে সিলেট বিভাগের জনপ্রিয় পর্যটন স্পট। এভাবেই বছর তিনেক পূর্বে ঢাকাদক্ষিণ-মোগলাবাজার সড়কের লক্ষণাবন্দ ইউনিয়নের নিজ ঢাকাদক্ষিণ বিদাইটিকর এলাকায় প্রায় ২০ একর জায়গার উপর গড়ে উঠে আলভিনা গার্ডেন নামের আনারস বাগান। এ বাগানটিতে বিভিন্ন প্রজাতির আনারসের পাশাপাশি নানা জাতের লেবু, কমলা ও মাল্টার চাষ করা হচ্ছে। একদিকে যেমন মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে অন্যদিকে পতিত টিলাগুলো কাজে লাগিয়ে বাগানের উদ্যোক্ততা লাভবান হচ্ছেন। বিভিন্ন ফল চাষের জন্য বানিজ্যিকভাবে এ বাগান প্রথমে গড়ে তুললেও এখন বাগানটিও প্রাকৃতিক পর্যটন কেন্দ্র হয়ে গড়ে উঠেছে। বাগানটি দেখার জন্য প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ভীড় করছেন। বিশেষ করে আনারস বাগানগুলোতে ঈদের পরবর্তী সময়ে পর্যটকদের উপস্থিতি ছিল লক্ষ্যনীয়। স্থানীয় দর্শনার্থীদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন দেশী বিদেশী পর্যটক।
প্রবাসী অধ্যুষিত উপজেলা হওয়ায় ঈদ উপলক্ষে প্রতি বছর প্রিয় জনদের সাথে ঈদ উদযাপন করতে দেশে আসেন অনেক প্রবাসী। ঈদ পরবর্তী সময়ে পরিবার পরিজন নিয়ে অন্যান্য সময় সিলেটের বিভিন্ন অঞ্চলের বনভোজন করতে গেলেও এবার ভিন্ন। নিজ ঢাকাদক্ষিণ কাজিপাড়া গ্রামের ফ্রান্স প্রবাসী কাজি রায়মন জানান, কয়েক বছর পর দেশে এসে নিজের বাড়ির পাশেই আলভিনা গার্ডেনে পরিবারের সবাইকে নিয়ে ঘুরে এসেছি। জানতে চাইলে লক্ষণাবন্দ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান খলকুর রহমান মুঠোফোনে সবুজ সিলেটকে বলেন,আগে পতিত জায়গা ছিল এখন আমার ইউনিয়নে আলভিনা গার্ডেন গড়ে উঠায় পর্যটনের পাশাপাশি অনেক কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। তিনি আশা করেন লক্ষণাবন্দসহ গোলাপগঞ্জ উপজেলায় এরকম পতিত টিলাগুলো একসময় বানিজ্যিকভাবে বিভিন্ন ধরনের ফলজ বাগান গড়ে উঠবে। যা কর্মসংস্থানের পাশাপাশি পর্যটকদের পর্যটন কেন্দ্র হবে। উপজেলা কৃষি অফিসার মাশরেফুল আলম বলেন, কৃষি পর্যটন শিল্পের বিকাশে গোলাপগঞ্জের টিলাগুলো নিয়ে কৃষি বিভাগের বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে।
Leave a Reply