একুশে স্পোর্টস
আর্জেন্টিনার কিংবদন্তি ফুটবলার দিয়েগো ম্যারাডোনা তার মৃত্যুর আগে কমপক্ষে ১২ ঘণ্টা তীব্র যন্ত্রণা ভোগ করেছিলেন বলে জানিয়েছেন এক ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ। ২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর বুয়েনস আইরেসের তিগ্রে এলাকায় নিজ বাড়িতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান ম্যারাডোনা। তবে ফরেনসিক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য, যা ইঙ্গিত করছে যে তার চিকিৎসা অবহেলিত ছিল।
ফরেনসিক মেডিসিনের বিশেষজ্ঞ কার্লোস ক্যাসিনেলি বৃহস্পতিবার আদালতে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে জানান, ‘ম্যারাডোনার হৃদপিণ্ড সম্পূর্ণভাবে চর্বি ও রক্তের জমাট বাঁধা অংশে আবৃত ছিল, যা দীর্ঘ সময় ধরে চলমান যন্ত্রণার প্রমাণ।’ তিনি আরও বলেন, ‘এটি আচমকা হয়নি, বরং কয়েক দিন ধরেই তার শরীরে পানি জমছিল। যে কোনো চিকিৎসক পরীক্ষা করলেই এটি বুঝতে পারতেন।’
আদালতের অভিযোগ অনুযায়ী, ম্যারাডোনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক, মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, মনোবিজ্ঞানী, চিকিৎসক ও নার্সসহ মোট সাতজন তার চিকিৎসা অবহেলার জন্য দায়ী। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ- ম্যারাডোনার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা তারা নেননি, যার ফলে তার মৃত্যু হয়।
মামলার তদন্তে উঠে এসেছে, মৃত্যুর আগে ম্যারাডোনার মুখ ও পেট অস্বাভাবিকভাবে ফুলে গিয়েছিল। তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক লিওপোলদো লুক এবং মনোরোগ বিশেষজ্ঞ অগাস্টিনা কোসাচভ তার চিকিৎসার জন্য দায়ী ছিলেন। নার্স গিসেলা মাদ্রিদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ আনা হয়েছে, যিনি চলতি বছরের শেষ দিকে পৃথক বিচারের মুখোমুখি হবেন।
আদালতে এই মামলার শুনানি চলছে এবং অভিযুক্ত চিকিৎসকদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ হবে বিচারকার্যের মাধ্যমে। ম্যারাডোনার অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু এখনো কোটি কোটি ফুটবলপ্রেমীর মনে এক অমীমাংসিত প্রশ্ন হয়ে রয়ে গেছে- এটি কি শুধুই একটি স্বাভাবিক মৃত্যু, নাকি চিকিৎসা অবহেলার কারণে একটি অমূল্য প্রাণ ঝরে গেল?
Leave a Reply