একুশে সিলেট ডেস্ক
আগামী মাসের শুরুতে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে অনুষ্ঠেয় বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মধ্যে বৈঠকের বিষয়ে ঢাকার অনুরোধে দিল্লি এখনও সাড়া দেয়নি। আজ রোববার সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এতথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘না, এখনো কোনো সাড়া মেলেনি।’ বার্তা সংস্থার ইউএনবি এ তথ্য জানিয়েছে।
ব্যাংককে বিমসটেক সম্মেলনের সাইডলাইনে ড. ইউনূস ও মোদির মধ্যে বৈঠকের ব্যবস্থা করার বিষয়ে গত বুধবার কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে ভারতের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ জানিয়েছিল বাংলাদেশ। গত শুক্রবার (২১ মার্চ) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (এমইএ) জানিয়েছে, দুই নেতার মধ্যে সম্ভাব্য দ্বিপক্ষীয় বৈঠক নিয়ে তাঁদের কাছে নতুন কোনো তথ্য কিছু নেই।
নতুন দিল্লিতে সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘দ্বিপক্ষীয় বৈঠক নিয়ে এই মুহূর্তে আমাদের কাছে কোনো আপডেট নেই।’
২-৪ এপ্রিল ৬ষ্ঠ বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি-সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কোঅপারেশন (বিমসটেক) সম্মেলনের আয়োজন করছে থাইল্যান্ড। বাংলাদেশ সেখানে পরবর্তী চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
২০২২ সালের ৩০ মার্চ শ্রীলঙ্কার কাছ থেকে বিমসটেকের চেয়ারম্যানশিপ নিয়েছে থাইল্যান্ড। বিমসটেকের সাতটি সদস্য দেশ রয়েছে— বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, মিয়ানমার, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ড।
বিমসটেকে যোগ দিতে ৩ এপ্রিল ব্যাংকক যাবেন ড. ইউনূস
আজ এক ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিন বলেন, বিমসটেক সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধান উপদেষ্টা আগামী ৩ এপ্রিল বৃহস্পতিবার ব্যাংকক পৌঁছাবেন। ব্যাংককে প্রথম দিন তিনি তরুণদের জন্য সাত দেশের সংস্থা বিমসটেক আয়োজিত একটি সেমিনারে বক্তব্য দেবেন। আগামী ৪ এপ্রিল তিনি বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন।
মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়াও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, ভুটান, মিয়ানমার, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ডের শীর্ষ নেতাদের এ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।
বিমসটেক সম্মেলনের পাশে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠকের সম্ভাবনার বিষয়ে জানতে চাইলে জসীম উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ বৈঠকটি চেয়েছে। ভারতের দিক থেকে এখনো কোনও জবাব আসেনি।
দুই দেশের কূটনৈতিক সূত্রগুলো অবশ্য দুই নেতার মধ্যে বৈঠকের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়নি। ভারতীয় এক কূটনীতিক গতকাল বলেছেন, দুই সরকার প্রধান একই সম্মেলনে যোগ দেবেন। তাঁদের মধ্যে দেখা হবে। কথাও হতে পারে।
বিমসটেকের মহাসচিব ইন্দ্রমণি পান্ডে সম্প্রতি বলেছেন, এই সম্মেলন থেকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু সিদ্ধান্ত আসবে। এটি বিমসটেকের ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা দেবে।
ড. ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক হবে সর্বোৎকৃষ্ট— এবিষয়ে ঢাকা সবসময়ই জোর দিয়েছে। বাংলাদেশ ও ভারতের ভাগ্য একসঙ্গে জড়িত এবং তারা কখনোই আলাদা হতে পারে না।
সম্প্রতি বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বলেন, ‘আমরা সবসময় চাইছি সবকিছু যেন সর্বোত্তম উপায়ে ঘটে।’ তিনি আরও বলেন, ভুয়া তথ্য ও গুজব থেকে সৃষ্ট বিভ্রান্তি বাংলাদেশ-ভারতের প্রকৃত সম্পর্কের চিত্র নয়।
Leave a Reply