প্রশাসনের ঢিলেঢালা আচরণে সমাজে দুঃস্কৃতিকারীরা আশকারা পাচ্ছে: রিজভী

প্রশাসনের ঢিলেঢালা আচরণে সমাজে দুঃস্কৃতিকারীরা আশকারা পাচ্ছে: রিজভী

একুশে সিলেট ডেস্ক
প্রশাসনের শ্লথ ও ঢিলেঢালা আচরণের কারণে সমাজে দুষ্কৃতিকারীরা নানাভাবেই আশকারা পাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। শুক্রবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, বর্তমান সময়ে নির্যাতিত আছিয়াকে ধর্ষণের পর মৃত্যুর বিষয়টি কোনমতেই দেশবাসী মেনে নিতে পারছে না। বর্তমান শাসনকালে মানুষের প্রত্যাশা ছিল তৃণমূলে অতিদ্রুত আইনের শাসন বলবৎ, কিন্তু প্রশাসনের শ্লথ ও ঢিলেঢালা আচরণের কারণে সমাজে দুষ্কৃতিকারীরা নানাভাবেই আশকারা পাচ্ছে। মানুষের সমবেত ধ্বনি ন্যায় বিচার নিশ্চিত করা, কিন্তু সেটি যদি অনুপস্থিত থাকে তাহলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গ্রহণযোগ্যতা হ্রাস পেতে থাকবে। আইনের শাসনের শক্ত কাঠামো তৈরি করা হলেই ন্যায় বিচার নিশ্চিত হবে।

তিনি বলেন, প্রশাসন যোগ্য, দক্ষ, ন্যায়পরায়ণ, সৎ ও মানবিক না হলে সমাজে অন্যায়-অবিচার এবং খুন, জখম, নারী ও শিশু নির্যাতনের প্রকোপ জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পাবে। অবিলম্বে সত্যিকার অর্থে আইনের শাসন বলবৎ করে সমাজে প্রকৃত দুষ্কৃতিকারীদের শাস্তি নিশ্চিত করা হোক। আমরা আবারও জোরালো দাবি করছি, ধর্ষণে নির্যাতিত শিশু আছিয়ার মৃত্যুতে হত্যাকারীদের ধৃষ্টান্তমূলক শাস্তি অতি দ্রুত নিশ্চিত করা হোক। আমি আছিয়ার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি ও তার পরিবারের প্রতি জানাচ্ছি গভীর সমবেদনা।

রিজভী বলেন, বিগত ১৬ বছর দুঃশাসনের আমাদের অতিপরিচিত শান্তি ও সুস্থময় পরিপার্শ্বকে বিকৃত করা হয়েছে। দীর্ঘদিনের বাংলাদেশের সামাজিক সংহতিকে বিনষ্ট করা হয়েছে। দুর্বৃত্তায়নের ব্যাপক প্রসার ঘটিয়ে সমাজকে পচা গলিত দুর্গন্ধময় করার চেষ্টা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, অন্যের জমি দখল, লুট, টাকা পাচারের মহা উৎসবের মধ্য দিয়ে নিজের সিংহাসন অটল রাখতে সব ধরনের নোংরামীকে প্রশ্রয় দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। তার শাসনের সমসময়ে হত্যা, গুম, খুন, ধর্ষণ, নারী, শিশু নির্যাতন, বিরোধী দলের রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের উপর অকথ্য নির্যাতন, রাষ্ট্র ও সমাজের এমনই বিস্তার লাভ ঘটানো হয়েছিল, যাতে সভ্য, শিষ্ট, সজ্জন মানুষের বসবাস করা বিপদজনক হয়ে পড়েছিল। সাধারণ মানুষকে লাঞ্চিত করতে, দুর্দশায় ফেলতে তারা কোন দ্বিধা করত না। বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীকে অবমাননা, অতিকথন ও অপ-প্রচারের মাধ্যমে বিরতহীনভাবে কালিমা লিপ্ত করার চেষ্টা করেছিল। যাবতীয় ভয়, হুমকি ও দুর্বিপাকের মধ্যেও দেশের নাগরিকবৃন্দকে জীবন যাপন করতে হয়েছে।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, সেই রেশ ধরেই চলছে, এখনও নারী-শিশু নির্যাতনকারীরা যেন সুযোগের অপেক্ষায় ওৎপেতে বসে রয়েছে। সম্প্রতি মাগুরায় বোনের শ্বশুর বাড়িতে বোনের শ্বশুর কর্তৃক ৮ বছরের শিশু আছিয়াকে ধর্ষণ, ধর্ষণ করার পর কয়েকদিন চিকিৎসারত থেকে বৃহস্পতিবার তার মৃত্যুবরণ সারা জাতিকে বিমূঢ় বেদনায় বেদনার্ত করেছে।

এই মর্মান্তিক ঘটনায় সারা জাতির চোখ অশ্রুসজল। দীর্ঘ আওয়ামী দুঃশাসনে মানবিকতা, নৈতিকতা, নায্যতা, ন্যায় বিচার অদৃশ্য করা হয়েছে। অপকর্মকারীরা অধিকাংশই ছিল শেখ হাসিনার দলের লোক। কারণ এরা জনসেবার চেয়ে আত্মসেবাকেই বড় করে দেখেছে।
বিএনপি দেশব্যাপী (৮৪টি সাংগঠনিক রাজনৈতিক জেলা) নারী-শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনাগুলোর তথ্য সংগ্রহ এবং “নিপীড়িত নারী ও শিশুদের আইনী এবং স্বাস্থ্য সহায়তা সেল” গঠন করেছে বলে জানান রিজভী।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.




© All rights reserved ©ekusheysylhet.com
Design BY DHAKA-HOST-BD
weeefff