নবীগঞ্জে নাইন মার্ডার : আসামী আজিম পুলিশের দাওয়ায় ২ তলা থেকে লাফ, রহস্যজনক পলায়ন নিয়ে তোলপাড়

নবীগঞ্জে নাইন মার্ডার : আসামী আজিম পুলিশের দাওয়ায় ২ তলা থেকে লাফ, রহস্যজনক পলায়ন নিয়ে তোলপাড়

নবীগঞ্জ(হবিগঞ্জ)প্রতিনিধি
নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ বাজারে বানিয়াচংয়ের নাইন মার্ডারের তদন্তাধীন আসামী ইউপি মেম্বার যুবলীগ নেতা আজিম উদ্দিন (৪৫)কে বুধবার সন্ধ্যায় গ্রেফতার করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছে ইনাতগঞ্জ ফাড়িঁ পুলিশ। পুলিশ আসামি আজিম উদ্দিন কে ঘেরাও করলে জনতা ঘেরাও করে পুলিশ কে। পরে পুলিশ কে রেখে হঠাৎ উধাও আজিম মেম্বারের রহস্যজনক পলায়ন নিয়ে তোলপাড়।

জানাযায়, গতকাল রাতে ইনাতগঞ্জ ডায়গনিষ্টিক সেন্ডারে সুচতুর আজিম উদ্দিনকে গ্রেফতার করতে ঘেরাও করে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আজিম উদ্দিন তার লোকজন ডেকে এনে ব্যারিকেট সৃষ্টি করে কৌশলে পালিয়ে যায়। বিফল হয়ে পুলিশ ফাড়িঁতে ফিরে আসেন।

স্থানীয় সুত্রে জানাযায়, উপজেলার ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের প্রজাতপুর গ্রামের আলতাব উল্লার ছেলে ইউপি সদস্য আজিম উদ্দিন এক সময়ে বিএনপির যুবদলের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল। ২০১৯ সালে ফুলের তোড়া দিয়ে আওয়ামী যুবলীগে যোগদান করেন। এরপর থেকে আওয়ামী সরকারের আমলে দাপটের সাথে এলাকায় চলাফেরা করতেন। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ৫ই আগষ্ট দেশের পটপরিবর্তন হলে উক্ত আজিম উদ্দিন নিজেকে বিএনপির যুবদল ও জাসাসের সদস্য দাবী করে। এনিয়ে ইনাতগঞ্জ বিএনপিতে দ্বিধা-বিভক্তি দেখা দেয়। এক গ্রুপে তাকে বিএনপির কর্মী পরিচয় দিলেও অপর গ্রুপে তা মানতে নারাজ। তাদের দাবী সে আওয়ামীলীগের যোগদান করে এলাকায় অনেক প্রভাব কাটিয়েছেন। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসুচীর মধ্যে অংশ গ্রহন করেছেন।

এদিকে জুলাই-আগষ্টে বানিয়াচং এলাকায় নাইন মার্ডার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উক্ত আজিম উদ্দিনকে উক্ত মার্ডারের সাথে সংশ্লিষ্টতার সত্যতা পেয়ে তাকে গ্রেফতার অভিযান শুরু করেন। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ইনাতগঞ্জ ফাড়িঁ ইনর্চাজ কৃষ্ণ বাবুর নেতৃত্বে একদল পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ইনাতগঞ্জ বাজার ডায়গষ্টিক সেন্টারে অভিযান করে আজিম উদ্দিনকে আটক করে।

কিন্তু সুচতুর আজিম উদ্দিন তার সহযোগিদের খবর করে এনে পুলিশকে ঘেরাও করে রহস্য জনক ভাবে কৌশলে আজিম উদ্দিনকে পালিয়ে যায় । পরে কম সংখ্যাক পুলিশ হওয়ায় বিফল হয়ে ফাঁড়িতে ফিরে যান। এ ব্যাপারে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও ইনাতগঞ্জ মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মাসুদ আহমদ জানান, তিনি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন আজিম উদ্দিনকে তার আজ্ঞাবহ লোকজন কৌশলে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছে। আইনশৃংখলা বাহিনীর হাত থেকে যারা আজিমকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করেছেন, তা সঠিক করেন নি। কারন উক্ত আজিম নাইন মার্ডার মামলার আসামী এবং আওয়ামী যুবলীগের কর্মী। ইনাতগঞ্জ ফাড়িঁ ইনচার্জ কৃষ্ণ বাবু জানান, বানিয়াচং থানার নাইন মার্ডার মামলার তদন্তে সংশ্লিষ্টতা থাকায় আসামী আজিম উদ্দিনকে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে গ্রেফতার করতে গোপন সুত্রের ভিত্তিতে ইনাতগঞ্জ বাজারে একটি ডায়গয়নিষ্ট সেন্টারে অভিযান করে তাকে আটক করে ফাড়িঁতে নিয়ে আসতে চাইলে তার লোকজন ব্যারিকেট সৃষ্টি করে। এক পর্যায়ে তার সহযোগিরা কৌশলে তাকে পিছন দিক থেকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করে। ফাড়িঁতে পুলিশের সংখ্যা প্রয়োজনীয় তুলানায় কম থাকায় তাৎক্ষনিক কোন পদক্ষেপ নেয়া যায়নি। তবে গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামাল হোসেন বলেন, আমাদের ইনাতগঞ্জ ফাড়িঁ ইনর্চাজ কৃষ্ণ বাবুর নেতৃত্বে একদল পুলিশ গোপন সংবাদের আজিম উদ্দিনকে গ্রেফতার করতে গেলে আসামী আজিম উদ্দিন ২ তলায় অবস্থান করছিলেন। এবং পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ২য় তলা থেকে পাশের বিল্ডিং পালিয়ে যায়। তাকে ধরতে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.




© All rights reserved ©ekusheysylhet.com
Design BY DHAKA-HOST-BD
weeefff