বিগত সরকারের অত্যাচারের কৌশল অত্যন্ত সুপরিকল্পিত: ভলকার তুর্ক

বিগত সরকারের অত্যাচারের কৌশল অত্যন্ত সুপরিকল্পিত: ভলকার তুর্ক

একুশে সিলেট ডেস্ক
জুলাই-আগস্টে বাংলাদেশে সংঘটিত গণঅভ্যুত্থানে ১,৪০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশন। এছাড়া আহত হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ, যাদের বেশিরভাগ আইনশৃঙ্খলাবাহিনী কর্তৃক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। বিগত সরকারের অত্যাচারের কৌশল অত্যন্ত সুপরিকল্পিত ও সমন্বিত ছিল বলে উল্লেখ করা হয়।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থাটি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে ১,৪০০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে, এবং এসময় হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছেন, এবং এদের অধিকাংশই বাংলাদেশের নিরাপত্তাবাহিনীগুলোর হাতে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ১২-১৩ শতাংশ ছিল শিশু।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার বিক্ষোভে ৮৩৪ জন নিহত হওয়ার যে হিসাব দিয়েছে, প্রকৃত সংখ্যা তার চেয়ে অনেক বেশি। প্রতিবেদনে এমন ঘটনাও নথিভুক্ত করা হয়েছে যেখানে নিরাপত্তা বাহিনী আহত বিক্ষোভকারীদের জরুরি চিকিৎসা সেবা দিতে অস্বীকার করেছে বা বাধা দিয়েছে, রোগীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে, চিকিৎসা কর্মীদের ভয় দেখিয়েছে এবং যথাযথ প্রক্রিয়া ছাড়াই হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ জব্দ করেছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়।

জনতার বিরোধিতার মুখে বিগত সরকারের অত্যাচারের কৌশল অত্যন্ত সুপরিকল্পিত ও সমন্বিত ছিল বলে জানান কার্যালয়ের প্রধান ভলকার তুর্ক। তিনি বলেন, ‘এটি বিশ্বাস করার যথাযথ কারণ রয়েছে। শত শত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, ব্যাপক হারে আকস্মিক গ্রেপ্তার এবং আটক এবং নির্যাতন রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের জ্ঞান, সমন্বয় এবং দিকনির্দেশনার মাধ্যমে সংঘটিত হয়েছিল। এসব আন্দোলন দমনের কৌশলের অংশ ছিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যে সাক্ষ্য এবং প্রমাণ সংগ্রহ করেছি তা ব্যাপক রাষ্ট্রীয় সহিংসতা এবং লক্ষ্যভিত্তিক হত্যাকাণ্ডের এক উদ্বেগজনক চিত্র তুলে ধরে, যা মানবাধিকার লঙ্ঘনের মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর এবং যা আন্তর্জাতিক অপরাধও গঠন করতে পারে। জাতির কল্যাণ এবং বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য দায়বদ্ধতা এবং ন্যায়বিচার অপরিহার্য।’

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগ এবং বাংলাদেশের নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থার সহিংস উপাদানগুলোর সঙ্গে সরকার কর্তৃক সংঘটিত এই অপরাধসমূহ ‘বিক্ষোভকারী এবং অন্যান্য বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে একটি বিস্তৃত ও পদ্ধতিগত আক্রমণের অংশ ছিল।

এর আগে গত সেপ্টেম্বর মাসে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অনুরোধে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় বাংলাদেশে একটি দল পাঠায়। এই দলে ছিলেন– মানবাধিকার তদন্তকারী, ফরেনসিক চিকিৎসক এবং অস্ত্র বিশেষজ্ঞ। তারা বিধ্বংসী ঘটনাগুলোর সম্পর্কে স্বাধীন এবং নিরপেক্ষ তদন্ত পরিচালনা করেন। অন্তর্বর্তী সরকার তদন্তটির প্রতি গুরুত্বপূর্ণ সহযোগিতা প্রদানে সাড়া দেয়, প্রয়োজনীয় প্রবেশাধিকার প্রদান করে এবং বিস্তৃত ডকুমেন্টেশন সরবরাহ করে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.




© All rights reserved ©ekusheysylhet.com
Design BY DHAKA-HOST-BD
weeefff