সিলেটে স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন

সিলেটে স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন

একুশে সিলেট ডেস্ক
সিলেটে স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্বামীর বিরুদ্ধে নেশাসক্ত স্বামীর বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ তুলেছেন শাহনাজ আক্তার।

শাহনাজ সিলেট মহানগরীর পুরবী-৪ ইসলামপুর মেজরটিলা মেইন রোডের পাশে অবস্থিত ১২নং বাসার রাজু আহমদের স্ত্রী।

আজ সোমবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুরে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব অভিযোগ করেন।

সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, রাজু আহমদের সাথে ২০০৫ সালে পারিবারিক উদ্যোগে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পরপরই তাদের পারিবারিক কলহের বিষয়টি তার নজরে আসে। এমনকি তার শশুড় আকমল আলী আকই মিয়ার ছেলে রাজুর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করেছিলেন। তখন স্বামীকে নিয়ে নিজের পিতার সংসারে উঠেছিলেন তিনি। এরমধ্যে তিনি জমজ সন্তানের মা হন। ২০১২ সালে রাজু স্থায়ীভাবে দেশে ফিরে আসেন। এরপর থেকে মাদকাসক্ত ও পরকীয়ায় লিপ্ত হয়ে তার উপর অকথ্য নির্যাতন চালাতে থাকেন। কয়েকবার পুলিশের সহযোগীতায় তাকে উদ্ধার করে তার বাবা মা ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়েছেন। তিনি নারী নির্যাতন ও যৌতুকের অভিযোগে একাধিকবার মামলা দায়ের করলেও সালিশে সংসার রক্ষা ও বাচ্চাদের কথা চিন্তা করে সেসব মামলা প্রত্যাহারও করে আবার সংসারে ফিরে গিয়েছেন। এরমধ্যে তার অনুমতি ছাড়া তিনি গোপনে আরেকটি বিয়ে করেছেন বলে স্বীকার করেছেন। তবে ২০২৪ সালের ২৯ অক্টোবর রাজু আবারও শাহনাজকে শারীরিক নির্যাতন করেন। এসএসসি পরীক্ষার্থী ছেলে ও মেয়ে তাকে বিরত রাখার চেষ্টা করতে গেলে তিনি তাদেরকেও আহত করেন। তিনি ঘরের দরজা ভেঙে তাকে হত্যার চেষ্টা করেন। পরে ছেলে ট্রিপল নাইনে কল দিলে শাহপরান থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।

শাহনাজ আক্তার আরও বলেন, তিনি বোনের বাসায় আশ্রয় নিয়ে মামলা দায়ের করতে গেলে শাহপরান থানার ওসি নানা বাহানায় তার মামলাটি গ্রহণ করেন নি। এমনকি পুলিশ কমিশনার নির্দেশ দিলেও তিনি তা উপেক্ষা করেন। দিনের পর দিন থানায় দৌড়াদৌড়ি করলেও তিনি কোনো সহযোগীতা পাননি। বরং হাসপাতাল থেকে দেয়া তার ছাড়পত্র নিয়েও তা ফেরত দিতে অস্বীকার করেন শাহপরাণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান। এদিকে ২০ জানুয়ারি তার এসএসসি পরীক্ষার্থী জমজ মেয়ে ও ছেলে বইপত্র আনতে বাসায় গেলে তিনি ছেলেকে মারধোর করেন। দা’র কোপে ছেলে মারাত্মক আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল বলেও জানান শাহনাজ। ওইদিনই মেজরটিলা বাজার এলাকায় ছেলে-মেয়েকে লাঠি নিয়ে ধাওয়া করেন। এ ব্যাপারেও থানায় অভিযোগ করতে গেলে পুলিশ অভিযোগ নেয়নি বলেও উল্লেখ করেন তিনি। রাজু তাদের যখন তখন হত্যার হুমকি দিচ্ছেন। এছাড়াও মিথ্যা অভিযোগে তিনি শাহনাজের বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও দিয়েছেন।

শাহনাজ জানান, শাহপরাণ থানা পুলিশ তার স্বামীর পকেটে- এমনটা তিনি বলে বেড়ান এবং তার কিছুই তারা করতে পারবেন না বলেও তিনি হুমকি দেন। পুলিশের নিস্ক্রিয়তা তারই প্রমাণ বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি জানান, মেজলটিলার বাসার জমি কেনার জন্য তার পিতাও টাকা দিয়েছিলেন। এছাড়াও নোয়া গাড়ি ক্রয়ের জন্য বোনের কাছ থেকে ধার করে ৫লাখ টাকা ও বাসার তৃতীয় তলায় ঘর তৈরির জন্য আরও দেড় লাখ টাকা তিনি দিয়েছেন। এছাড়া সন্তানদের লেখাপড়ার খরচসহ যাবতীয় খরচাপাতি নিজের পিতার কাছ থেকে পেতেন বলেও জানান তিনি।

শাহনাজ নিজের ও সন্তানদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও শাহপরান থানা পুলিশের অসহযোগীতার সঠিক তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকার এবং উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে তার মা এবং তিন সন্তানও উপস্থিত ছিলেন।

এ ব্যাপারে শাহপরাণ (রহ.) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনির হোসেন জানান, শাহনাজের স্বামী রাজু আহমেদের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের যে অভিযোগ থানায় দিয়েছিলেন সেটি তদন্তে সত্যতা মেলেনি। পুলিশ কমিশনার স্যার আমাকে কোনও নির্দেশ প্রদান করেননি। তদন্ত শেষে অভিযোগ জিডি হিসেবে নেওয়া হয়েছে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.




© All rights reserved ©ekusheysylhet.com
Design BY DHAKA-HOST-BD
weeefff