তাহিরপুর(সুনামগঞ্জ)প্রতিনিধি
কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা বেশির ভাগ হাওরের স্লুইসগেট(জলকপাট)কাজ করছে না,তেমনি এগুলোর রক্ষণাবেক্ষণও করা হচ্ছে না। আর স্লুইস গেটের জলকপাট করার সময়ও পরিবেশগত প্রতিক্রিয়া যাচাই করা হয়নি।
সুনামগঞ্জে আগাম পাহাড়ি ঢলের পানি সহজেই স্লুইস গেটের জলকপাট দিয়ে হাওরে প্রবেশ করায় কষ্টে ফলানো বোরো ফসল পানিতে তলিয়ে যায় সহজে। স্লুইস স্লুইসগেট (জলকপাট) অচল অবস্থায় থাকায় উপকারের বদলে প্রতি বছরেই ক্ষতির শিকার হচ্ছে হাজার হাজার কৃষকের অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেনসহ কৃষকগন জানান,প্রতি বছরেই এই স্লুইসগেটের কারনে আমরা কৃষকরা আতংকে থাকি,পাহাড়া দিতে হয়। এরপরও পানি আটকানো যায় না। কৃষকদের স্বার্থে দ্রুত মেরামতের দাবী জানাই।
হাওরাঞ্চলের সচেতন মহল বলছেন,হাওরে বাঁধের নামে প্রতিবছর কোটি কোটি টাকা খরচ হয় কিন্তু পানি কীভাবে নামবে,চাষাবাদ কীভাবে হবে,স্লুইসগেট গুলো কীভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে,কৃষকদের চাষাবাদ কিভাবে সুবিধা হবে,ফসল ও মাছের উৎপাদন নিশ্চিত করে পরিবেশ বান্ধব উন্নয়ন চিন্তা নেই। বেশির ভাগই আইওয়াস। আর বোরো ফসল রক্ষায় হাওরে অপরিকল্পিত কাজই বেশি হচ্ছে,বাঁধের কাজ হয় মূলত ব্যবসার জন্য।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে,পানি নিয়ন্ত্রণ অবকাঠামো ভেন্ট রেগুলেটর,রেগুলেটর, স্লুইসগেট,পাইপ স্লুইস আছে এই জেলায় ৩৩টি। এর মধ্যে সচল ২৩টি এবং অচল ৯টি। এসব অবকাঠামোর মধ্যে অপসারণ রয়েছে যোগ্য ৩টি।
জেলার তাহিরপুর উপজেলার দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের বৈজ্ঞানিক ১ভেন্ট রেগুলেটর,আহম্মকখালী রেগুলেটর,
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের বিশ্বম্ভরপুর পাইপ স্লুইস,কৃষ্ণতলা পাইপ স্লুইস,জামালগঞ্জ উপজেলার সাচনা ইউনিয়নের রাইঙ্গা রেগুলেটর ও বুরিডক্কা রেগুলেটর,ফেনারবাক ইউনিয়নের ডালিয়া রেগুলেটর,বেহেলী ইউনিয়নের বেহেলী রেগুলেটর বর্তমানে অচল অবস্থায় আছে। এছাড়াও জেলার ধর্মপাশা উপজেলার সুখাইর রাজাপুর উত্তর ইউনিয়নের ধানকুনিয়া রেগুলেটর,জামালগঞ্জ উপজেলার সাচনা ইউনিয়নের রাইঙ্গা রেগুলেটর,বুরিডক্কা রেগুলেটর অপসারণযোগ্য বলে জানাগেছে।
তাহিরপুর উপজেলার প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা(ইসিএ)সমসার হাওর আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি,কলাগাঁও গ্রামের বাসিন্দা মোর্শেদ আলম সাদ্দাম জানিয়েছেন,পাটলাই নদীর উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের মদনপুর গ্রাম সংলগ্ন স্থানে কোটি টাকা ব্যয়ে স্লুইসগেট নির্মাণের সময়ই ত্রুটি ছিল। কৃষকবান্ধব এ প্রকল্পটির ১০টি জলকপাটের মধ্যে ৫টি অকেজে থাকায় সমসার হাওর ১৫-২০গ্রামের দুই হাজারের বেশি কৃষকদের বোরো জমি ডোবার ফাঁদে পরিনত হয়েছে। নদীতে পানি বাড়লে কৃষকরা বস্থায় মাটি ভরে বাশঁ দিয়ে আটকিয়ে কপাটের মুখ বন্ধ করলেও ঠিকমত বন্ধ না হওয়ায় হাওরে পানি প্রবেশ করে প্রতি বছরই হাওর ডুবির ঘটনা ঘটে।
সুনামগঞ্জ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানিয়েছেন,স্লুইসগেটের সমস্যা ছাড়াও খাল ভরাট হওয়ায় পানি না নামার জন্য হাওর মুখী খাল খনন করার পরিকল্পনা রয়েছে। হাওরের ১০টি স্লুইসগেট এবছর মেরামত করে সচল করা হবে।
Leave a Reply