চোখের জল ও শ্রদ্ধায় অঞ্জনাকে শেষ বিদায়

চোখের জল ও শ্রদ্ধায় অঞ্জনাকে শেষ বিদায়

একুশে বিনোদন
চোখের জল ও শ্রদ্ধায় শেষ বিদায় জানানো হলো দেশের প্রখ্যাত চলচ্চিত্র অভিনেত্রী অঞ্জনা রহমানকে। গতকাল বেলা ৩টা ১৫ মিনিটে বনানী কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হন তিনি। শুক্রবার দিনগত রাত ১টা ১০ মিনিটে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান অঞ্জনা। তার বয়স হয়েছিল ৬৮ বছর। তিনি দুই মেয়ে ও এক ছেলে রেখে গেছেন।

জানা গেছে, তিন সপ্তাহ ধরে অসুস্থ ছিলেন সোনালি দিনের এ অভিনেত্রী। শুরুতে জ্বর ছিল। একটা সময় ওষুধ খেয়েও কাজ হচ্ছিল না। শেষে জানা যায়, তার রক্তে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এরপর অঞ্জনাকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে কয়েক দিন রাখা হয় সিসিইউতে। সেখানকার চিকিৎসায় শারীরিক অবস্থার আশানুরূপ উন্নতি না হওয়ায় হাসপাতাল বদলে গত বুধবার অঞ্জনাকে নেয়া হয় বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় ওই রাতেই তাকে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়। কিন্তু অবস্থার উন্নতি হয়নি। শেষ পর্যন্ত চলেই গেলেন এই নায়িকা। গতকাল শেষ শ্রদ্ধা জানাতে দীর্ঘ সময়ের কর্মস্থল এফডিসিতে নেয়া হয় অঞ্জনার মরদেহ। সেখানে প্রিয় মানুষ, প্রিয় নায়িকাকে এক নজর দেখতে ও শেষ শ্রদ্ধা জানাতে চলচ্চিত্রশিল্পী থেকে শুরু করে ভক্ত-শুভাকাঙ্ক্ষীদের ঢল নামে। শেষ পর্যন্ত সিনেমার প্রতিটি মানুষের সঙ্গে অঞ্জনার সুসম্পর্ক ছিল। এফডিসিতে গিয়ে দেখা যায় অঞ্জনার জন্য কেউ কাঁদছেন, কেউ শোক জানাচ্ছেন আবার কেউ স্মৃতি আউড়াচ্ছেন। বাদ জোহর এফডিসিতে জানাজা অনুষ্ঠিত হয় তার। এতে অংশ নেন চলচ্চিত্রসহ সর্বস্তরের মানুষ। তার দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয় চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে। এরপর বনানী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের এক সময়ের জনপ্রিয় অভিনয়শিল্পী অঞ্জনা নৃত্যশিল্পী থেকে নায়িকা হয়ে সর্বাধিক যৌথ প্রযোজনা এবং বিদেশি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। বাবুল চৌধুরী পরিচালিত ‘সেতু’ চলচ্চিত্রে প্রথম অভিনয় করেন অঞ্জনা। তবে তার অভিনীত ও একই বছর মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম চলচ্চিত্র ‘দস্যু বনহুর’। ছবিতে তার নায়ক ছিলেন সোহেল রানা। এ ছবির পর তাকে আর পেছনে তাকাতে হয়নি। সিনেমায় টানা কাজ করে গেছেন। একে একে অভিনয় করেন ‘মাটির মায়া’, ‘অশিক্ষিত’, ‘চোখের মণি’, ‘সুখের সংসার’, ‘জিঞ্জির’, ‘অংশীদার’ ,‘আনারকলি’, ‘বিচারপতি’, ‘আলাদীন আলীবাবা সিন্দাবাদ’, ‘অভিযান’, ‘মহান’ ও ‘রাজার রাজা’, ‘বিস্ফোরণ’, ‘ফুলেশ্বরী’, ‘রাম রহিম জন’, ‘নাগিনা’, ‘পরিণীতা’ ইত্যাদি বাণিজ্যিক সিনেমায়। বাংলাদেশ ছাড়াও তিনি অভিনয় করেছেন ৯টি দেশের ১৩টি ভাষার সিনেমায়। অভিনয়ের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, আন্তর্জাতিক পুরস্কার, একাধিক জাতীয় স্বর্ণপদক ও বাচসাস পুরস্কার পেয়েছেন কয়েকবার। নৃত্যশিল্পী হিসেবেও অঞ্জনা পেয়েছেন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অনেক স্বীকৃতি। ‘পরিণীতা’ ও ‘গাঙচিল’-এ অভিনয়ের জন্য দু’বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পেয়েছেন। অঞ্জনা বিয়ে করেন পরিচালক আজিজুর রহমান বুলিকে। তবে তাদের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.




© All rights reserved ©ekusheysylhet.com
Design BY DHAKA-HOST-BD
weeefff