সর্বশেষ :
গোয়াইনঘাটে ছাত্রদল নেতা লিটনের ফাঁসির রায় বাতিল ও মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসনকারীদের ‘শহিদ ওয়াসিম ব্রিগেড’ রুখে দিবে: ব্যারিস্টার আবু সায়েম ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলের বিষয় স্পষ্ট করল ভারত বিশ্বনাথে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার, ৩ দিনের আল্টিমেটাল প্রদান ইতালিতে চাকরির লোভ দেখিয়ে নবীগঞ্জের ১০ যুবককে জাল ভিসা কুশিয়ারার বালু ব্যবসায়ীর প্রতারণার ফাঁদ! আদালতে মামলা তাহিরপুরে চোরাই মোটরসাইকেল বিক্রি ও মাদক ব্যবসায়ী চক্রের সাথে জড়িত পুলিশ সদস্য ইকবাল শাল্লায় জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদকে বিজয়ী ৪ কৃতি শিক্ষার্থী বিশ্বনাথে অপহরণ করে কিশোরীকে ধর্ষণ, ধর্ষক গ্রেফতার সুনামগঞ্জ সদরে রাস্তা নির্মাণের কাজ দীর্ঘদিন বন্ধ, দুর্ভোগে চরমে
র‍্যাব বিলুপ্ত করার সুপারিশ বিএনপির

র‍্যাব বিলুপ্ত করার সুপারিশ বিএনপির

একুশে সিলেট ডেস্ক
র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) বিলুপ্ত করার সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। সরকারের পুলিশ সংস্কার কমিটির কাছে এ সুপারিশ করেছে দলটি।

মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এমনটি জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও বিএনপির পুলিশ সংস্কার কমিটির প্রধান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, সরকারের পুলিশ সংস্কার কমিটি বিএনপির কাছে সুপারিশ না চাইলেও আমরা সুপারিশমালা দিয়েছি। রাষ্ট্রের এই অত্যাবশ্যকীয় সেবার (পুলিশ) সংস্কার এখন সময়ের দাবি। সুপারিশমালায় বিএনপি পুলিশ কমিশন গঠনের সুপারিশ করেছে।

হাফিজ উদ্দিন বলেন, পুলিশের বিভিন্ন স্তরের অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছি। অনেকের সঙ্গে কথা বলেছি। জনগণের সঙ্গে পুলিশের দূরত্ব কমানোর সুপারিশ করেছি আমরা।

সুপারিশে পুলিশ বাহিনীকে সঠিক দিকনির্দেশনা, পরামর্শ এবং সহায়তা দেওয়ার জন্য একটি পুলিশ কমিশন গঠনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়েছে। কমিশনের চেয়ারম্যান হবেন স্বরাষ্ট্রবিষয়ক সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান।

আট সদস্যের মধ্যে থাকবেন দুজন সরকার দলীয় সংসদ সদস্য, একজন বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্য, একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, একজন উচ্চ আদালতের আইনজীবী, দুজন সমাজের বিশিষ্ট নাগরিক ও স্বরাষ্ট্রসচিব মনোনীত একজন অতিরিক্ত সচিব।
আইজিপি মনোনীত একজন অ্যাডিশনাল আইজি হবেন সদস্য-সচিব।

জাতীয় সংসদ বলবৎ না থাকলে অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত একজন বিচারক। সরকার বিধি-বিধান দিয়ে কমিশনের সদস্য নির্বাচন পদ্ধতি, কাজের পরিধি ও কর্মকাল নির্ধারণ করবে।

সুপারিশে স্থানীয় পর্যায়ে পুলিশকে অপরাধ দমনে সহায়তা দেওয়া, জনসাধারণ-পুলিশ সম্পর্ক উন্নয়নে এবং সংশ্লিষ্ট এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পরামর্শ দেওয়ার জন্য প্রত্যেক উপজেলা-থানায় একটি নাগরিক কমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছে। স্থানীয় গণ্যমান্য, সুশিক্ষিত ও গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিবর্গ সমন্বয়ে এ কমিটি গঠিত হবে।

কমিটির সভাপতি হবেন একজন স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তি। সদস্য সচিব হবেন সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। এ ছাড়া দুইজন ইউপি সদস্য, একজন শিক্ষক, একজন ব্যবসায়ী, একজন পেশ ইমাম এবং সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক দলের স্থানীয় প্রতিনিধি কমিটির সদস্য হিসেবে থাকবেন। সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার সংসদ সদস্য স্থানীয় উপজেলা চেয়ারম্যানের সঙ্গে পরামর্শ করে দুই বছর সময়কালের জন্য এই নাগরিক কমিটি গঠন করবেন।

সুপারিশে বিএনপি আরও বলছে, পুলিশের সাংগঠনিক কাঠামোয় থাকা র‌্যাব ইতোমধ্যে দেশে এবং বিদেশে ব্যাপকভাবে নিন্দিত ও সমালোচিত হয়েছে। দেশি-বিদেশি মানবাধিকার সংগঠন, জাতিসংঘ, অধিকাংশ রাজনৈতিক দল এবং সুধীজন র‌্যাবকে দেশে সংঘটিত অধিকাংশ গুম, খুন, নির্যাতন ও নিপীড়নের জন্য দায়ী করেছে। বাহিনীটি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে র‌্যাবকে বিলুপ্ত করার সুপারিশ করা হলো। র‌্যাবের দায়িত্ব আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন এবং থানা পুলিশ যেন পালন করতে পারে সেই লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।

কমিউনিটি পুলিশিংয়ে জোর দিয়েছে বিএনপি। তারা বলছে, এর মাধ্যমে সমাজে বিবিধ অপরাধ প্রবণতা এবং সামাজিক অস্থিরতা কমবে, পুলিশ-জনসাধারণের মধ্যে দূরত্ব কমবে, জনসচেতনতা বাড়বে এবং আইনের শাসন জোরালো হবে। এই উদ্দেশ্যে গ্রামাঞ্চলে প্রতিটি ইউনিয়নে এবং শহরাঞ্চলে প্রতিটি ওয়ার্ডে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যদের মধ্যে থেকে একজন কমিউনিটি পুলিশ কর্মকর্তা (উপ-পরিদর্শক পদের নিচে নয়) নিয়োজিত হবেন। সংশ্লিষ্ট এলাকায় তার একটি অস্থায়ী দপ্তর থাকবে।

তিনি নিয়মিতভাবে এলাকার গণপ্রতিনিধি, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান, ইমাম, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি, মহিলা সমাজ, কৃষক ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধি সমন্বয়ে গঠিত কমিটির সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করবেন। সবার অংশগ্রহণে প্রাপ্ত সহযোগিতা ও পরামর্শ নিয়ে কমিউনিটি পুলিশ কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট এলাকায় অপরাধ দমন ও নিবারণে দৃশ্যমান ব্যবস্থা নেবেন।

এ ছাড়া এলাকায় জমি সীমানা, সম্পদ মালিকানা, মানহানি বা অন্য কারণে মতবিরোধ, গৃহবিবাদ, শিশু ও নারী নির্যাতন, মাদক সেবন, জুয়া, সুদ, গ্যাং কালচার, সাম্প্রদায়িক উসকানি ইত্যাদি আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা চালাবেন। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে আইনি পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রদান করবেন। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পুলিশ ও জনগণ মিলে নিরাপত্তা পেট্রলিংয়ের ব্যবস্থা নিবেন। নিয়োজিত কমিউনিটি পুলিশ কর্মকর্তার বেতন-ভাতা সংশ্লিষ্ট স্থানীয় সরকার কর্তৃপক্ষ বহন করবে।

বিএনপি তাদের সুপারিশে আরও বলছে, বাংলাদেশ পুলিশে বর্তমান জনবল প্রায় সোয়া দুই লাখ। তাদের সঙ্গে পরিবারের সদস্য সংখ্যা যুক্ত হলে তা দাড়ায় প্রায় সাড়ে আট লাখ। তাদের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার দায়িত্ব প্রতিটি বিভাগ বা জেলায় স্থাপিত পুলিশ হাসপাতালের। বর্তমানে এই সেবা বেশ অপ্রতুল। এ কারণে প্রতিটি জেলা শহরে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি ও জনবলসহ পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল স্থাপন বা সম্প্রসারণ করতে হবে।

ঢাকার রাজারবাগের কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল ছাড়া অন্য কোনো বিভাগীয় বা জেলা হাসপাতালের কোথাও প্রয়োজনীয় চিকিৎসক, টেকনিশিয়ান বা সরঞ্জামাদি নেই। কর্তব্যরত পুলিশ কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের সন্তান-সন্ততিদের চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য রাজধানী ঢাকার কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের অনুরূপ প্রতিটি বিভাগীয় বা মেট্রোপলিটন শহরে বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতাল পরিচালনা করা যেতে পারে। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক, টেকনিশিয়ান ও যন্ত্রপাতি সন্নিবেশের প্রয়োজন হবে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.




© All rights reserved ©ekusheysylhet.com
Design BY DHAKA-HOST-BD
weeefff