একুশে সিলেট ডেস্ক
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপির সিলেট জেলা ও মহানগরসহ বিভাগের সকল জেলায় সম্মেলন করার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। সম্মেলন সফল করতে দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনকে দায়িত্ব দিয়ে একটি চিঠি ইস্যু করা হয়েছে। তবে এ চিঠিকে ঘিরে সিলেটের নেতাকর্মীদের মধ্যে নানা প্রশ্ন তৈরী হয়েছে। কেউ কেউ এটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত বলছেন। যদিও সিলেট জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব জানিয়েছেন- এই চিঠি সিলেট জেলা মহানগরের জন্য প্রযোজ্য না।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, ‘বিভাগের অন্তর্ভুক্ত ইউনিয়ন, উপজেলা, পৌর ও থানা কমিটি থেকে শুরু করে মহানগর ও জেলা কমিটি সম্মেলন ও কাউন্সিলের মাধ্যমে আগামী ৬০ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি সমাপ্ত করতে হবে। দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকদ্বয় এবং মহানগর ও জেলার সভাপতি/আহ্বায়ক সাধারণ সম্পাদক / সদস্য সচিবগণের সাথে বৈঠক করে অতিসত্ত্বর সম্মেলনের কার্যক্রম শুরু করতে হবে।’
চিঠির প্রসঙ্গে জানতে চাইলে দলের কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক (সিলেট বিভাগ) মিফতাহ সিদ্দীকি বলেন, এটি একটি সাংগঠনিক পক্রিয়ার অংশ। সকল বিভাগেই এরকম চিঠি ইস্যু করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে যেসকল প্রশ্ন উঠেছে আমরা আলোচনা করে পরিস্কার করবো।
চিঠির বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশায় এক মাস আগে পূর্ণাঙ্গ হওয়া সিলেট মহানগর বিএনপি। বর্তমান কমিটি থাকবে নাকি ভেঙ্গে দেওয়া হবে তা নিয়েও আলোচনা হচ্ছে। একই সঙ্গে সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব আসবে কিনা তা নিয়েও আলোচনা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী বলেন, এই চিঠির বিষয়ে আমরা অবগত রয়েছি। দ্রুত আমাদের স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি জানানো হবে।
এদিকে কেন্দ্রে এ চিঠি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে নানা প্রশ্ন তুলছেন নেতাকর্মীরা। কেউ কেউ বলছেন- সিলেট মহানগর বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষনা হয়েছে এক মাসও হয়নি। এরমধ্যেই নতুন করে সম্মেলন করে কমিটি করা কতটুকু যুক্তিযুক্ত।
নেতাকর্মীরা বলছেন, ইতোমধ্যে সিলেট মহানগরীর সকল আঞ্চলিক ও ওয়ার্ডে বিএনপির কমিটি গঠন করা হয়েছে। মহানগর বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন পেয়েছে ৪ নভেম্বর। সাবেক সিসিক কাউন্সিলর রেজাউল হাসান কয়েস লোদীকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও ইমদাদ হোসেন চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক করে সিলেট মহানগর বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে ১৭০ জন স্থান পান। যেহেতু নতুন কমিটি গঠিত হয়েছে সেক্ষেত্রে মহানগরী উল্লেখ করে নতুন সম্মেলন ও কমিটি গঠনের নির্দেশ নিয়ে প্রশ্ন থাকাটা স্বাভাবিক মনে করছেন নেতাকর্মীরা।
একই দিনে (৪ নভেম্বর) সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলায় ৩২ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্র।
এদিকে ২০২৩ সালের ২০ মার্চ আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীকে সভাপতি ও অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৫১ সদস্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ও ৯১ সদস্য বিশিষ্ট উপদেষ্টা কমিটি অনুমোদন দেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এরআগে ২০২২ সালের ২৯ মার্চ জেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওইদিন বিকেলে কাউন্সিলরদের সরাসরি ভোটে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচন করা হয়। এরআগে সিলেট জেলার ১৩ উপজেলা ও ৫ পৌরসভায় কমিটি গঠন করা হয়। এছাড়া কমিটি গঠন করা হয় ইউনিয়নেও।
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ‘যে চিঠি কেন্দ্রে দিয়েছে তা সিলেট জেলা ও মহানগররের কমিটির জন্য প্রযোজ্য না। কারণ সিলেট মহানগর পূর্ণাঙ্গ হয়েছে এক মাসও হয়নি। আর জেলা পূর্ণাঙ্গ হয়েছে গতবছর। মুলত এই চিঠি সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলা কমিটির জন্য দেওয়া হয়েছে।’
Leave a Reply