একুশে সিলেট ডেস্ক
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর ডেমরায় তিন কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের (ডিএমআরসি) অন্তত তিন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।
আজ সোমবার বিকেলে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজ কর্তৃপক্ষ এমনটা দাবি করে। এ ঘটনায় অনেকে আহত হয়েছেন। তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। তবে নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেনি পুলিশ।
দুপুর ১২টার দিকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল কলেজের শত শত শিক্ষার্থী গিয়ে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে হামলা চালায়। এ সময় কলেজটির ভবনে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। পরে দুই পক্ষ দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ায় রণক্ষেত্রে পরিণত হয় ওই এলাকা। এতে অনেকেই আহত হন।
এ সময় কলেজটির বিভিন্ন সামগ্রী ও সরঞ্জাম নিয়ে যায় হামলাকারীরা। পরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন পুলিশ সদস্যরা। তারা ডিএমআরসির শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে শান্ত করার চেষ্টা করেন। পাশাপাশি হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির আশ্বাস দেন।
এর আগে সকাল ১০টা থেকে কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীরা বাহাদুর শাহ পার্কের সামনে লাঠিসোঁটা নিয়ে জড়ো হতে থাকে। পরে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা রায়সাহেব বাজারের দিকে অগ্রসর হয়ে সাত কলেজের অন্যান্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে জড়ো হতে থাকেন।
ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজ ব্যবস্থাপনা পরিচালক স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘ডক্টর মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজ গভীর শোক ও ক্ষোভের সঙ্গে জানাচ্ছে যে, আজ আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এক নৃশংস হামলা চালানো হয়েছে। তথাকথিত সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে বহিরাগত একদল সন্ত্রাসী প্রবেশ করে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। এ হামলায় তিনজন শিক্ষার্থী নির্মমভাবে প্রাণ হারায় এবং শতাধিক শিক্ষার্থী ও শিক্ষক আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা গুরুতর, যাদের মধ্যে কয়েকজনকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ‘এ হামলায় শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ এবং ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের কিছু ছাত্র নামধারী ব্যক্তি নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের মদদে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল। হামলাকারীদের অধিকাংশই শিক্ষার্থী নয়, বরং সন্ত্রাসী কার্যক্রমে লিপ্ত ব্যক্তিবর্গ। হামলাকারীরা আমাদের গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র, সম্পদ ও শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত মালামাল লুট করেছে। এ ছাড়া কলেজ ভবনের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে তারা অধ্যক্ষের কার্যালয়সহ বিভিন্ন কক্ষ ভাঙচুর করে।’
কলেজ কর্তৃপক্ষ জানায়, ‘কলেজ কর্তৃপক্ষ বারবার প্রশাসনের স্থানীয় ও সর্বোচ্চ পর্যায়ে সহযোগিতার আবেদন করলেও, এ পর্যন্ত কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এ অবস্থায় আমাদের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও শিক্ষার পরিবেশ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।’
সংশ্লিষ্ট প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানায় কলেজ কর্তৃপক্ষ।
Leave a Reply