একুশে সিলেট ডেস্ক
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট সরকার পতনের দিন শেখ হাসিনা গণভবনে থাকলে ‘লোকজন তাঁকে ছিড়ে খুড়ে ফেলত’ বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের হাউস অব লর্ডসে একটি সম্মেলনে অংশ নিয়ে সাংবাদিকদের সামনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
‘বাংলাদেশ: গণতন্ত্র ও মানবাধিকার সংকট’ শীর্ষক ওই সম্মেলনে বাংলাদেশের এম সাখাওয়াত হোসেনের মন্তব্য ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তিনি বলেছেন, শেখ হাসিনা দেশত্যাগ না করলে সহিংসতা আরও ভয়াবহ হতো, যা দেশের জন্য ভালো হতো না।
এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘তিনি (শেখ হাসিনা) যদি থাকতেন, তাহলে লোকজন তাকে ছিন্ন-ভিন্ন করে করে ফেলত (শি উড হ্যাভ বিন টর্ন এপার্ট বাই পিপল)। এটাই ফ্যাক্ট— আমি বললাম আপনাদের। যেইভাবে লোকজন ব্যারিকেড ভেঙে আসছিল… পুলিশ সারেন্ডার করল। যেভাবে লোকজন গণভবনের দিকে আসছিলেন, গণভবনে ওনি যদি থাকতেন…। আর্মি চিফ কিন্তু বারবার বলছিলেন, আপনাকে ৪৫ মিনিটের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এর মধ্যে গণভবনের দেয়াল ভেঙে যাবে। আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, তাহলে লোকজন তাঁকে ছিড়ে খুড়ে ফেলত এবং সেটা দেশের জন্য খুব ভালো হতো না।’
সাখাওয়াত হোসেনের এই মন্তব্য বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন এবং তাঁর প্রত্যর্পণের বিষয়ে আলোচনার প্রস্তুতি চলছে।
ড. সাখাওয়াত তাঁর বক্তব্যে শেখ হাসিনার দীর্ঘ শাসনামলে বিরোধীদের দমন, মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে সৃষ্ট গণ-অসন্তোষের কথা উল্লেখ করেন। তার মতে, হাসিনার দেশত্যাগের ফলে আরও সহিংস পরিস্থিতি থেকে দেশ রেহাই পেয়েছে।
ভয়েস ফর বাংলাদেশ নামে একটি সংগঠন এই সম্মেলনের আয়োজন করে। এতে যুক্তরাজ্যের হাউস অব লর্ডসের সদস্য আলেকজান্ডার চার্লস কার্লাইল সভাপতিত্ব করেন। সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা আতাউল্লাহ ফারুকের সঞ্চালনায় আলোচনায় আরও অংশ নেন ব্রিটিশ মন্ত্রী পল স্কালি এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কর্মীরা।
সাবেক ব্রিটিশ মন্ত্রী পল স্কালি ও লর্ড হোসাইন বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তাঁরা বলেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ও মানবাধিকারের অবস্থা উন্নত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সক্রিয় ভূমিকা অপরিহার্য।
সম্মেলনের সভাপতি লর্ড আলেকজান্ডার চার্লস কার্লাইল কিউসি বলেন, যুক্তরাজ্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সংস্কার এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া পুনঃপ্রতিষ্ঠায় সহায়তা করবে। বাংলাদেশের উন্নয়ন এবং গণতন্ত্রের সুরক্ষায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা প্রয়োজন।
Leave a Reply