কানাইঘাট প্রতিনিধি
সিলেটের কানাইঘাট বাজারে প্রকাশ্যে দিবালোকে যুবদল নেতা রাজুর হাতে নির্মম ভাবে নিহত পৌর ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল মুমিন হত্যাকান্ড রাজনৈতিক হত্যাকান্ড নয় বলে জানিয়েছেন নিহতের আপন মামা মাষ্টার হারুন রশিদ। সোমবার রাতে কানাইঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে তিনি একথাটি বলেন।
এদিকে ঘাতক রাজুকে গ্রেফতার করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক দল বিভিন্ন এলাকায় চিরুনী অভিযান অব্যাহত রেখেছে বলে কানাইঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল আউয়াল জানিয়েছেনে। আজ মঙ্গলবার ময়না তদন্তের পর নিহত আব্দুল মুমিনের লাশ তার বাড়িতে নিয়ে আসলে আত্মীয়-স্বজনেরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। স্বজনরা ঘাতক রাজুকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবী করেন।
বেলা আড়াই টায় নিহত আব্দুল মুমিনের নিজ গ্রাম ধনপুর জামে মসজিদ মাঠে তার নামাজে জানাযা শেষে মহল্লার কবরস্থানে দাফন করা হয়। যানাজার নামাজে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কায়ুম সহ জেলা ও উপজেলা বিএনপি এবং জামাতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দ ছাড়াও কয়েক হাজার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। জানা গেছে একটি প্রসাধনী কোম্পানীর বিক্রয় প্রতিনিধি কানাইঘাট পৌরসভার ধনপুর গ্রামের তাজ উদ্দিন ছেলে ছাত্রদল নেতা আব্দুল মুমিনের সাথে কানাইঘাট বাজারস্থ মসজিদ মার্কেটের মোবাইল ব্যবসায়ী পাশ্বববর্তী দুর্লভপুর গ্রামের মৃত জায়ফর আলীর ছেলে যুবদল কর্মী রাজুর ঘনিষ্ট বন্ধুত্ব ছিল। তারা দু’জন একই দলের কর্মী হলেও দুইজন দুই গ্রুপের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন।
গ্রুপ রাজনীতি নিয়ে এ হত্যাকান্ড ঘটেছে বলে বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের একটি গ্রুপ অপর গ্রুপকে দোষারোপ করে কানাইঘাট বাজারে মিছিল করে। তবে এ হত্যাকান্ড রাজনৈতিক নয় বলে দাবী করছেন নিহতের মামা মাষ্টার হারুন রশিদ সহ বিএনপির সাধারণ নেতাকর্মীরা। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে রাজু আহমদের সাথে একটি মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মেয়েটির সাথে সম্পর্ক থাকা অবস্থায় রাজুর বিয়ে অন্য একটি জায়গায় ঠিক করা হয়। যে বিয়েটি আগামী শুক্রবার হবার কথা ছিল। রাজুর বিয়ের কথা শুনে প্রেমের সর্ম্পক থাকা মেয়েটি রাজুর ঘনিষ্ট বন্ধু আব্দুল মুমিনের সাথে বিষয়টি শেয়ার করে এবং আব্দুল মুমিনকে মেয়েটি তার সর্ম্পকের একাধিক তথ্য প্রদান করে।
এতে আব্দুল মুমিন তার বন্ধু রাজুকে বিষয়টি বুঝানোর চেষ্টা করে। এরই জের ধরে এ হত্যাকান্ড ঘটতে পারে বলে একাধিক সূত্র থেকে ধারণা করা হচ্ছে। এদিকে ছাত্রদল নেতা আব্দুল মুমিন হত্যাকারী রাজু আহমদকে দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য জেলা ও উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
কানাইঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল আউয়াল জানিয়েছেন আসামী গ্রেফতারে চিরুনী অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
Leave a Reply