সর্বশেষ :
সিলেটে টিলা কেটে ঘর নির্মাণের অভিযোগে ৯ জনের নামে মামলা, গ্রেফতার ১ হবিগঞ্জে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রাণ গেল ব্যবসায়ীর সিলেটে বিএনপি নেতার প্রাইভেট কার ছিনতাই লামাকাজী ইউনিয়ন জামায়াতের কমিটি গঠন টাকার জন্য কোন শিক্ষাথীর্র পড়ালেখা বন্ধ হবে না: বিশ্বনাথে মিছবাহ উদ্দিন হবিগঞ্জে ব্যারিস্টার সুমনকে লক্ষ্য করে ডিম নিক্ষেপ, আদালতে কাঁদলেন সুনামগঞ্জে সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রীসহ ৪৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা গোয়াইনঘাটে ব্যবসায়ী সেলিম হত্যা মামলা, হবিগঞ্জ থেকে আটক ২ খালেদা জিয়াকে সেনাকুঞ্জে আনতে পেরে আমরা গর্বিত : প্রধান উপদেষ্টা (ভিডিওসহ) সাংবাদিকের উপর সন্ত্রাসী হামলা : থানায় অভিযোগ দায়ের
জৈন্তাপুরে দুইদফা বন্যা, ভাঙন ঝুঁকিতে ২০০ পরিবার : প্রশাসনের লাল নিশানা স্থাপন

জৈন্তাপুরে দুইদফা বন্যা, ভাঙন ঝুঁকিতে ২০০ পরিবার : প্রশাসনের লাল নিশানা স্থাপন

জৈন্তাপুর প্রতিনিধি:

জৈন্তাপুরে বড়গাঙ নদীতে ময়নাহাঁটি গ্রাম সংলগ্ন প্রায় এক কিলোমিটারের অধিক অংশ ভয়াবহ ভাঙন কবলিত। বিগত ২০২২ ও ২০২৪ এর প্রলয়ঙ্কারী বন্যায় নিজপাট ইউনিয়নের ময়নাহাঁটি ও পাশ্ববর্তী জাঙ্গালহাঁটি গ্রামের আনুমানিক ১০০ একর ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এতে চরম ঝুঁকিতে ২০০ পরিবার।

সেই সাথে নতুন করে বড়গাঙের এই অংশে বালু উত্তোলনের জন্য ইজারা দেয়ার ফলে সাধারণ জনগণ রয়েছে চরম শঙ্কায়। ইতিমধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ এই এলাকা হতে বারকি শ্রমিককেরা বালু উত্তোলনের জন্য গেলে স্হানীয়দের সাথে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে সংঘর্ষে রূপ নেয়ার উপক্রম হয়েছিলো।

গত ২রা নভেম্বর স্হানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের হস্তক্ষেপে পরবর্তীতে উভয়পক্ষের উত্তেজনা স্হিতিশীল হয়েছিলো। স্হানীয়দের অভিযোগ ওইদিন ইজারাদার কর্তৃপক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে জোরপূর্বক ভাঙন কবলিত নদীর অংশে বালু উত্তোলন করতে চেয়েছিলো।
পরের দিন ৩রা নভেম্বর স্হানীয় গন্যমান্য ব্যাক্তিদের উপস্থিতিতে ভাঙন কবলিত নদীর অংশ হতে বালু উত্তোলন না করতে একটি স্মারকলিপি নিয়ে গেলে ওই দিনই স্হানীয় ইউপি সদস্য মো মামুনুর রশিদকে প্রতিনিধি করে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হইতে নিরাপদ দুরুত্বে বালু উত্তোলনের সীমনা নির্ধারনের জন্য লাল নিশানা স্হাপনের নির্দেশনা দেয়া হয়।

বুধবার (৬ই নভেম্বর) সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশক্রমে ইজারাদার কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে লাল নিশানা স্হাপন করা হচ্ছে।

এ সময় স্হানীয় কৃষক নিজাম বলেন, বর্তমানে ভাঙন কবলিত নদীর পাড় মেয়াদী রেকর্ডভুক্ত জায়গা। প্রতি বছর জমির মালিকেরা নিয়মিত খাজনা প্রদান করে আসছে। ইতিমধ্যে দুইদফা বন্যায় বিশাল অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
স্হানীয় প্রবীন ব্যাক্তি ফরিদ মিয়া বলেন, ভাঙন কবলিত জায়গা কোন সরকারি কিংবা খাঁস খতিয়ানের জায়গা নয়। এগুলো মালিকানাধীন। তিনি বলেন মাত্র তিনশ ফুট জায়গা ভাঙন কবলিত হলে তার বাড়ীঘর বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা। এর আগে এই সমস্ত জমিতে ধান, রবিফসল, শিম, বরবটি বানিজ্যিক ভাবে ফলানো হতো৷ বর্তমানে অবশিষ্ট সামান্য অংশে লাউ চাষ করছেন। তিনি বলেন চলতি বছর বড়গাঙ বালু মহাল সরকারি ভাবে ইজারা দেয়ায় নতুন করে স্হানীয়দের মধ্যে শঙ্কা বিরাজ করছে। তিনি অভিযোগ করেন দিনে প্রকাশ্যে ও রাতের আঁধারে নিষেধ দেয়ার সত্ত্বেও শ্রমিকেরা বালু উত্তোলন করে নিয়ে যায়।

স্হানীয় বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য আবু তাহের বলেন, ময়নাহাঁটি গ্রামের ভাঙন কবলিত নদীর অংশের দাগ নং -১১৫২ ও জে এল নং- ১৮। এই দাগ স্হানীয়দের মালিকানাভুক্ত। চলতি বছর বড়গাঙ বালু মহাল ইজারা দেয়ার ফলে বারকি শ্রমিকরা স্হানীয়দের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জোরপূর্বক বালু উত্তোলন করে। যার ফলে গত সপ্তাহে স্হানীয়দের সাথে বালু উত্তোলনকারীদের সংঘর্ষের উপক্রম হলে স্হানীয়ভাবে তা প্রতিহত করা হয়। পরে জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালিক রুমাইয়া বরাবর বিষয়টি অবগত করলে আজ বুধবার তিনি স্হানীয় ইউপি সদস্যকে প্রতিনিধি করে নিরাপদ দুরুত্বে লাল নিশানা স্হাপন করা হয়েছে। তিনি বলেন, লাল নিশানা মেনে চললে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয় কিন্তু রাতের আধারে নিশানা উপেক্ষা করে বালু উত্তোলনের প্রমাণ মিললে পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাওয়ার আশঙ্কা করেছেন তিনি।

এ বিষয়ে বড়গাঙ বালু মহাল ইজারাদার কর্তৃপক্ষের প্রধান মেসার্স সুমাইয়া এন্টার প্রাইজের সত্ত্বাধিকারী ইসমাইল হোসেন বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয়ের নির্দেশনা মোতাবেক নদীর পাড় হতে ৪০ ফুট দুরুত্বে নিরাপদ নিশানা স্হাপন করা হয়েছে। তিনি বলেন বড়গাঙ বালু মহালের সকল ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের নিশানার বাহির হতে বালু উত্তোলনের জন্য বলা হয়েছে। এতে করে কোন ব্যবসায়ী নির্দেশ অমান্য করলে স্হানীয়ভাবে তা বিরুদ্ধে ব্যবস্হা গ্রহন করা হবে বলে তিনি জানান।

এ বিষয়ে ৫ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো মামুনুর রশিদ বলেন, নিজে উপস্থিত থেকে ইউএনও মহোদয়ের নির্দেশে নদীর পাড় হতে ৪০ ফুট দুরুত্বে লাল নিশানা স্হাপন করে দিয়েছি। এর ভিতর থেকে কোন বালু উত্তোলন করা যাবে না বলে প্রশাসনের কঠোর নির্দেশনা রয়েছে।

এ বিষয়ে জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালিক রুমাইয়া বলেন, চলতি সপ্তাহে স্হানীয়দের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ঝুঁকিপূর্ণ স্পটে সীমানা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। বড়গাঙ বালু মহাল ইজারাদার কর্তৃপক্ষ এই সীমানার বাহির হতে তারা বালু উত্তোলন করবে। লাল নিশানার ভিতরের অংশ থেকে কোন ভাবেই বালু উত্তোলন না করতে নির্দেশ দেন তিনি। এ নির্দেশ অমান্য করলে সংশ্লিষ্ট বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা গ্রহন করা হবে বলে তিনি জানান।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.




© All rights reserved ©ekusheysylhet.com
Design BY DHAKA-HOST-BD
weeefff